× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খাদ্য সহায়তা দেয়ার নামে উপেক্ষিত সামাজিক দূরত্ব

অনলাইন

বরগুনা প্রতিনিধি
(৪ বছর আগে) এপ্রিল ৭, ২০২০, মঙ্গলবার, ৩:৪০ পূর্বাহ্ন

বরগুনার সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ খেটে খাওয়া অসহায় মানুষদের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার নামে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন এড়াতে উপেক্ষিত করছেন সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার আইন। বামনা উপজেলায় খোদ এমপি, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরাই মানছে না সরকারের সামাজিক দুরত্বের বিধি। হর হামেশাই চলছে বিভিন্ন যানবাহন। প্রতিটি বাজারে হাটের দিনে মানুষের উপচে পড়া ভীড় দেখা যাচ্ছে।
দেশব্যাপী নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে জনগনকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছে। মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগনকে উদ্বুদ্ধ করতে মাইকিংসহ বিভিন্ন প্রচাির প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবুও জনগন সামাজিক দুরত্ব বজায় না রাখায় সরকার দেশব্যাপী সেনাবাহিনীসহ দেশের সকল প্রকার আইন শৃংখলা বাহিনীকে  নিয়োজিত করেছেন।
সরকারের ব্যপকহারে প্রচারনায় সাধারণ জনগণের মাঝে কিছুটা হলেও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার প্রবণতা দেখা গেলেও খোদ এমপি, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরাই মানছে না সামাজিক দুরত্বের কোন নিয়ম কানুন।

গত কয়েকদিন ধরে দেখা যায় করোনার প্রভাবে কর্মহীন খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেওয়ায় এই আইন রক্ষাকারীরাই ভুলতে বসেছেন সামাজিক দুরত্বের নিয়ম।
সোমবার ৬ এপ্রিল বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তার নির্বাচনী এলাকা বরগুনার বামনা উপজেলার ৪শত খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন।
এমপির খাদ্যসহায়তা বিতরনের সময় সরেজমিনে বামনা আসমাতুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয় মাঠে দেখা যায় যারা সহায়তা নিতে আসছেন তাদের তিনফুট দুরত্বে গোলাকার বৃত্তের মধ্যে দাড় করিয়ে রেখে তাদের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌছে দেওয়া হচ্ছে। এ উপকারভোগীরা সামাজিক দুরত্ব মেনে খাদ্য সহায়তা গ্রহন করছে। অথচ যারা এ সহায়তা বিতরণ করছেন তারাই ভুলে গেছেন সামাজিক দুরত্বের নিয়ম।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দুরত্ব বজায় না রাখা ওইসব খাদ্য বিতরনের কয়েকটি ছবিতে দেখা যায় বামনা সদরের বালিকা বিদ্যালয় মাঠে কোন প্রকার পিপিই ছাড়াই বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমন, বামনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু, আওয়ামী লীগের অনেক নেতৃবৃন্দ সহায়তা দেওয়ার সময় মোবাইলে ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। সবাই এসময় ভুলেই গেছে সামাজিক দুরত্বের আইন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরো দেখা যায়, গত শনিবার ১১৫ সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা এমপির পাঠানো খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়। এসময় বামনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু মৃধা, আওয়ামীলীগ সহসভাপতি ইউসুফ আলী হাওলাদারসহ অনেক নেতৃবৃন্দ ঘা ঘেঁসে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছেন।
কেন নেতৃত্বস্থানীয় অনেকেই সামাজিক দূরত্ব মানছেন না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, সবাই এখন প্রচারে ব্যস্ত। করোনাকে সামনে রেখে কিছু খাদ্য হাতে তুলে দিয়ে দুরত্ব বজায় না  না রেখে সবাই মিলে  উৎসব করে ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচারনা চালায়।
বামনা প্রেসক্লাব সভাপতি ওবায়দুল কবির আকন্দ দুলাল বলেন, নেতারা ফেসবুক প্রচারের জন্য সামাজিক দুরত্ব না মেনেই সবাই মিলে একটি ব্যাগ এক উপকোরভোগীর হাতে তুলে দিয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কে কত আগে একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিবে এর প্রতিযোগিতায় নামে।
বামনা উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাজিব হাওলাদার বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। নীতিনির্ধারকরাই আইন ভঙ্গ করবেন এটা আশা করা যায়না। করোনার প্রভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া খেটে খাওয়া সে সব মানুষের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে এ খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা যেতো। বড় জমায়েত করে লোক দেখানো সহায়তা প্রদান কি আসলেই করোনার সংক্রমণ দুর করবে? নাকি আরো সংক্রমিত হবে?।
বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, নোভেল করোনা ভাইরাস মোকাবেলার একমাত্র উপায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা। একজন আরেকজনের সাথে মিশে যেভাবে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করছেন তাতে সংক্রমিত হওয়ার ভয় থেকে যায়।
বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা সুলতানা বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা অব্যহত রেখেছি। কোন কোন স্থানে ব্যার্থ হলে আইন শৃংখলা বাহিনী দিয়ে দূরত্ব তৈরী করার চেষ্টা চালাচ্ছি
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর