করেনা ভাইরাস মোকাবিলায় লকডাউন মানুষের জীবনে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এক সমীক্ষার মতে, লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন ৯০ লাগের মতো মানুষ। এদের হাতে নেই কোনও অর্থ । অন্যদিকে বিশ্ব শ্রম সংস্থার (আইএলও) মতে, করোনা সঙ্কটে চরম দারিদ্র্যের মুখে ভারতের ৪০ কোটি মানুষ। তাই এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে বাঁচানোই লক্ষ্য হওয়া উচিত। এ জন্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার দুফলো ভারত সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন, করোনায় ঘরবন্দি দেশে অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি বসে যাওয়া রুখতে প্রয়োজনে টাকা ছাপিয়ে দরিদ্রদের একাউন্টে পাঠানো হোক। তাঁদের মতে, এখন মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নয়। ক্রেডিট রেটিং কমে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও নয়।
বুধবার বণিকসভা ফিকি এবং আইসিসি আয়োজিত ভিডিও বৈঠকে অভিজিৎ বলেছেন, প্রথাগত, সাবধানি পথে হেঁটে এই পাহাড়প্রমাণ সমস্যার মোকাবিলা করা শক্ত। চাহিদার চাকা সচল রাখতে প্রয়োজনে টাকা ছাপিয়েও আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের একাউন্টে সরাসরি পাঠানো জরুরি। তাতে মূল্যবৃদ্ধির হার মাথাচাড়া দেবে কি না, সে-সব ভাবার সময় এখন নয়। কারণ, এই অবস্থায় তা না-করলে, অর্থনীতিকে চড়া মাসুল দিতে হতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন অভিজিৎ। অভিজিতের স্ত্রী ও যুগ্ম নোবেলজয়ী এস্থার বলেছেন, ভারতে যখন জন-ধন একাউন্টের মতো পরিকাঠামো রয়েছে, তা কাজে লাগানো জরুরি। অর্থনীতিবিদ অভিজিতের কথা অনুযায়ী, অর্থনীতির কঠিন সময়ে দরিদ্রদের হাতে টাকা দিতে তা ছাপার কথা উঠলে আপত্তি তোলেন অনেক অর্থনীতিবিদ এবং আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠান। কারণ, মূল্যবৃদ্ধি লাগামছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা। আবার সরকারি ব্যয় বাড়লে রাজকোষ ঘাটতি বৃদ্ধির ভয়ে ক্রেডিট রেটিং ছাঁটাইয়ের (কোনও দেশের ঋণশোধের ক্ষমতার মূল্যায়ন) হুঁশিয়ারি দেয় মূল্যায়ন সংস্থাগুলি। অভিজিতের যুক্তি,, অর্থনীতিই যদি ভেঙে পড়ে, তা হলে এ নিয়ে ভেবে লাভ কী ? বরং আগে যে-কোনও মূল্যে অর্থনীতিকে বাঁচানো জরুরি। বাকি সব হিসেব তার পর।