× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পন্টিংয়ের চোখে এটাই ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা সিরিজ

খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক
৯ এপ্রিল ২০২০, বৃহস্পতিবার

ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় রোমাঞ্চ ছড়ানো সিরিজ কম নেই। অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সফল অধিনায়ক রিকি পন্টিং মনে করেন, ২০০৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজটিই ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা। ‘সেরা ক্রিকেটীয় স্মৃতি’ রোমন্থন করার ‘চ্যালেঞ্জে’ রিকি পন্টিংকে নমিনেট করেন ডেভিড ওয়ার্নার। সাবেক অজি অধিনায়ক নিজের সেরা তো বটেই ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা সিরিজ বলে অভিহিত করেন ২০০৫ সালে হওয়া অ্যাশেজকে।

টেস্টের দ্বিতীয় সর্বাধিক রানের মলিক বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখতাম অ্যাশেজ নিয়ে। আমি সম্ভবত আট-নয়টি অ্যাশেজ সিরিজে অংশ নিয়েছি। সবগুলোর স্মৃতি আমার মনে নেই। ২০০৫ অ্যাশেজ সিরিজটি আমার মতে ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা। যে সিরিজে মাইকেল ভনের ইংল্যান্ড আমাদের হারিয়েছিল।
আমরা লর্ডসে প্রথম টেস্ট জিতলেও এজবাস্টন টেস্টে ২ রানে হেরেছিলাম। এজবাস্টন টেস্টটি ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা টেস্ট।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের রিকি পন্টিংয়ের মোট রান ২৭ হাজার ৪৮৬। টেস্টে ১৩ হাজার ৩৭৩, ওয়ানডেতে ১৩ হাজার ৭০৪ এবং টি-টোয়েন্টিতে করেছেন ৪০১ রান। টেস্ট ও ওয়ানডেতে সর্বাধিক রানের মালিক শচীন টেন্ডুলকার। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি টেস্টে ১৫ হাজার ৯২১ ও ওয়ানডেতে করেছেন ১৮ হাজার ৪২৬ রান।

কেমন ছিল ২০০৫ সালের ঐতিহাসিক অ্যাশেজ সিরিজ?
২০০৫ এর আগে ১৯৮৯ সালে সর্বশেষ অ্যাশেজ জেতা ইংলিশদের আক্ষেপ আকাশ ছুঁয়েছিল যেন। ১৬ বছর ধরে অ্যাশেজ নেই, ‘ভস্মাধারের লড়াই’য়ে এই সময়টা অস্ট্রেলিয়া একটানা রাজত্ব করে গেছে কখনো স্টিভ ওয়াহ, কখনো মার্ক টেলর বা কখনো অ্যালান বোর্ডারের যোগ্য নেতৃত্বে। অস্ট্রেলিয়ার এই একপেশে কর্তৃত্বের শেষ দেখল ২০০৫ অ্যাশেজ। সাত বছর আগে টেস্ট অভিষেক হলেও এই টেস্টেই ইংলিশ অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রূ ফ্লিনটফ নিজের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দেখালেন বিশ্বমঞ্চে। সঙ্গে ছিলেন কেভিন পিটারসেন নামের এক তরুণ। সারা জীবন ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিসদের রিভার্স সুইং শিল্পকে ‘বল টেম্পারিং’ বলে নাক সিটকানো ইংলিশরা শেষমেশ অদম্য অস্ট্রেলিয়ানদের আটকাতে আশ্রয় নিল রিভার্স সুইংয়ে। ফ্লিনটফ, হার্মিসন আর সাইমন জোন্সের সেই বিষে নীল হলো অস্ট্রেলিয়ানরা।

লর্ডসে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ২৩৯ রানে পরাজিত করে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে শুভ সূচনা করেছিল। ইংলিশ ভক্তরা এই পরাজয়ে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়ে।

কিন্তু এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবার দিন সকালে অনুশীলনে অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রা ইনজুরিতে পড়ে বাদ হবার পর ইংল্যান্ড টেস্টে আধিপত্য বিস্তার শুরু করে। বল ও ব্যাট হাতে ইংল্যান্ডের অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফই ছিলেন ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক। চতুর্থ ইনিংসে ২৮২ রানের টার্গেটে ব্যাটিং এ নামে অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও ম্যাথু হেইডেন শুরুটা ভালোই করেন। দলীয় ৪৭ রানে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেট এর পতন হয়। তারপরই শুরু হয় ইংলিশ পেসারদের তা-ব। বিনা উইকেটে ৪৭ রান থেকে দেখতে দেখতে ১৩৭ রানেই ৭ উইকেট খুইয়ে বসে অজিরা। ইংল্যান্ড এর জয় তখন মাত্র সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিলো। কিন্তু সেখান থেকে অজি পেসার ব্রেট লিকে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন শেন ওয়ার্ন। জয় থেকে ৬২ রান দূরে থাকতে ব্যক্তিগত ৪২ রানে আউট হয়ে যান ওয়ার্ন। শেষ উইকেট জুটিতে ৬২ রান করা এক প্রকার অসম্ভবই বলা চলে। কিন্তু মাইকেল ক্যাসপ্রোভিজ আর ব্রেট লি মিলে অস্ট্রেলিয়াকে অসম্ভব এক জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে। কিন্তু ম্যাচের আসল নাটক তখনো বাকি ছিল। জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে ইংলিশ পেসার হার্মিসন এর বলে আউট হয়ে যান ক্যাসপ্রোভিজ। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি ২ রানে জিতে নেয় ইংল্যান্ড।

তৃতীয় টেস্টটি ড্র হবার পর ট্রেন্ট ব্রিজে চতুর্থ টেস্টে স্পিন লিজেন্ড শেন ওয়ার্নের দুর্দান্ত ৪ উইকেট প্রাপ্তির পরও ইংল্যান্ড দারুন এক জয় তুলে নেয়। শেষ টেস্টে ড্র করলেই ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে ঐতিহাসিক অ্যাশেজ সিরিজ পুনরুদ্ধার করতে পারবে, এই সমীকরণে ওভালে খেলতে নামে স্বাগতিকরা। টপ অর্ডারের ধ্বস সত্ত্বেও কেভিন পিটারসেনের ম্যাচজয়ী ১৫৮ রানের সাথে অ্যাশলে গাইলসের ৫০ রানে শেষ দিনে ইংল্যান্ড পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়। সিরিজে ২৪ উইকেট আর ৪০২ রান করে শেন ওয়ার্নের সঙ্গে যৌথভাবে সিরিজসেরা হন ফ্লিনটফ।

সেই অ্যাশেজ জয়ের পর প্রায় গোটা দেশ রূপ নিয়েছিল উৎসবের জনপদে। ক্রিকেটাররা হয়ে উঠেছিলেন মহাতারকা। তারা বাইরে বের হলেই লোক জড়ো হয়ে যেত। অ্যাশেজ জয়ী অধিনায়ক মাইকেল ভন, জয়ের অন্যতম নায়ক অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফের বাড়ির বাইরে লোকের ভিড় লেগেই থাকত। তাদের পেছনে স্পন্সরদের ছুটোছুটিও লেগে ছিল।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর