× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

'আমাগো তো লোক নাই, সাহায্য করবো কেরা'

অনলাইন

এবিএম আতিকুর রহমান, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) থেকে
(৪ বছর আগে) এপ্রিল ৯, ২০২০, বৃহস্পতিবার, ২:২১ পূর্বাহ্ন

'কাম কাজ কিছুই নাই। খুব কষ্টে পোলাপান লইয়া চলতাছি ভাই।আর কত দিন থাকবো ভাইরাস জানেন কিছু?' এভাবেই কষ্টের কথা বলছিলেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের শোলাকুড়া গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে ছফর আলী। মা এক বোন, তিন মেয়ে এক ছেলে ও স্ত্রীসহ তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮ জন। শুধু ছফর আলী নয় এ রকম কয়েক হাজার পরিবার রয়েছে ঘাটাইলের ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভাতে। মানবজমিনের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে এমন কিছু হত দরিদ্র, খেটে খাওয়া, নিম্ন বিত্ত ও মধ্যে বিত্ত পরিবারের দুঃখ কষ্ঠের চিত্র। সংগ্রামপুর ইউনিয়নের মাষ্টার মোড় এলাকার খাগড়াটা গ্রামের আদালত হোসেন মারা গেছেন তিন কন্যা সন্তান ও এক পুত্র সন্তান রেখে। আদালত খানের স্ত্রী হাসনা আক্তার জানান, আমার স্বামী যখন মারা যায় তখন অন্যের বাড়িতে উঠলি ছিলাম, এখনো আছি। এক মেয়ে বিয়ে দিয়েছি,আরোও দুইটা আছে।
আমি মহিলা মানুষ, কি করে আহার তুলেদেব সন্তানদের মুখে। এ সময় তার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি ঝড়ছিল।দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের ফুলহারা গ্রামের জলিলের মা জরুনা বেওয়া, উজ্জলের মা রহিমা বেওয়া, শাজাহানের মা লালেমন, কুরফান আলীর মা পারুল, ছানোয়ারের মা আনোয়ারা, সাইফুলের মা শহিতন, পাগুছালামের মা খুশি বেওয়া, সমেশের স্ত্রী ছকিনা সহ প্রতিটি গ্রামেই এমন ২৫/৩০ টি করে স্বামী পরিত্যাক্তা ও অসহায় পরিবার রয়েছে যাদের কোন উপার্জনের পথ নেই। অন্যের দয়ার উপর অনেকটা নির্ভরশীল হয়ে সারা বছর চলতে হয়। বর্তমানে করোনা ভাইরাস আশার পর থেকে তারা একে বারেই অসহায় হয়ে পড়েছে।    দু- চোখে তারা অন্ধকার দেখছেন। সাংবাদিক পরিচয় শুনে প্রতিটি স্হানেই আশঙ্কা জনক হারে দরিদ্র মানুষের উপস্হিতি লক্ষ করা গেছে। সবার মুখে একটাই কথা, বাবা আমাদের বাচাঁন। আমরা না খেয়ে মারা যাব। ঘরের মানুষটাতো কাজে যেতে পারছেনা, তাহলে কি হবে আমাদের। বিশেষ করে মধ্যে বিত্ত মানুষ গুলো রয়েছে সবচেয়ে বেশি সমস্যায়।তারা না পারছে মুখ দিয়ে কিছু বলতে,না পারছেন সরকারি ত্রানের খাতায় নাম লিখাতে। খাদেমুল মামুন নামে এক জন ব্যাংকার জানান, শোলাকুড়া গ্রামের মধ্যে ছবর আলীর পরিবারটি সব চেয়ে অভাবী। পরিবারের সদস্যরাও সহজ-সরল। ছফর আলীর একার উপার্জনে চলে আট সদস্যের পরিবারটি। কাঠের ফার্নিচার
বার্নিশ করেই চলে ছফর আলীর সংসার। করোনাভাইরাসের কারণে কোনো কাজ না থাকায় পরিবারটি এখন দিশেহারা। তাদের অভাবের কথা কারো কাছে বলতেও পারছে না। তাই তাদের পরিবারের লোকজন এখন করোনা নিয়ে চিন্তিত না। চিন্তিত এক বেলা খাবার নিয়ে। ছফর আলীর মা মনোয়ারা বেগম জানান, ছফরের বাবা গ্রামে গ্রামে ঘুরে আইস্ক্রিম বিক্রি করে সংসার চালাতো। ছেলে ছফর আলী বার্নিশ মিস্ত্রির কাজ করত। গতবছর ছফরের বাবা মারা যাওয়ার পর আমাদের সংসারে টানাপোড়ন চলছে। আমার ছেলের পক্ষে ৮ জনের সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। করোনাভাইরাস আসার পর এখন খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে কিন্ত কাউকে বলতে পারছি না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। দ্রুত সব গুলো পরিবারের কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। আশা করি সবাই পর্যায় ক্রমে পাবেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর