কলকাতার রেড রোডে এশিয়ার বৃহত্তম ঈদের নামাজ এবছর হবে না বলে জানানো হয়েছে। এই নামাজে প্রতি বছর ঈদের দিন সকালে প্রায় ৩-৪ লাখ মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। রেড রোড ছাড়াও কলকাতার নাখোদা মসজিদ, দুটি টিপু সুলতান মসজিদ সহ রাজ্যেও কোনও মসজিদে বা ঈদগায় ঈদের দিন একসঙ্গে নামাজ আদায় করা যাবেনা বলেও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে। সারা দেশে করোনা সংক্রমণ কমার কোনও লক্ষন নেই। কলকাতায় সংক্রমণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রেড রোডে ঈদের নামাজ স্থগিত করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কলকাতা খিলাফত কমিটি। খিলাফত কমিটিই কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামের সামনে রেড রোডে শুধুমাত্র ঈদের দিন সকালে এই ঈদ নামাজের আয়োজন করে। এই নামাজে কলকাতা ও শহরতলী থেকে যেমন মানুষ আসেন তেমনি প্রতিবেশি রাজ্যের অনেক মুসলিমও ঈদের এই নামাজে অংশগ্রহন করেন।
প্রায় তিন থেকে চার লাখ মুসল্লি ঈদের দিন সকালে রেড রোডের জমায়েতে একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। যোগ দেন পরিবারের ছোটরাও। এশিয়ার বৃহত্তম ঈদের জমায়েত বলে পরিচিত এটি। খিলাফত কমিটির চেয়ারম্যান শাকির রেনডারিয়ান জানিয়েছেন, রেড রোডে ঈদের নামাজ হবে কিনা তা নিয়ে আমরা টেলিকনফারেন্সে আলোচনা করেছি। সকলেই একমত হয়েছেন যে, নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই রেড রোডের আয়োজন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। খিলাফত কমিটির এক মুখপাত্র বৃহস্পতিবার বলেছেন, লাল জোনের আওতায় থাকা কলকাতায় পারস্পরিক দূরত্বের বিধি না-মেনে রেড রোডে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগমে ঈদের নমাজ আদায় বড় ঝুঁকি হয়ে যাবে। তাই তা স্থগিত রাখা হয়েছে। প্রতিবছর রেড রোডের ঈদের নামাজ পরিচালনা করেন যিনি সেই কারী ফজলুর রহমান বলেছেন, নাগরিকদের নিরাপত্তাই সবচেয়ে বড় কথা। তাই এই সঙ্কটের সময়ে রেড রোডে নামাজ আদায়ের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ওয়াকফ বোর্ডের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এ বার মসজিদ বা ইদগায় ঈদের নামাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন মসজিদেই ঈদের নামাজে সাধারণের অংশগ্রহন থাকবে না। মসজিদের লোকেরাই নামাজ আদায় করবেন। রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান সাবেক বিচারপতি আব্দুল গনি বলেছেন, আগামী কয়েক মাস বড় চ্যালেঞ্জ। করোনা থেকে বাঁচতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাটা ভীষণ জরুরি। তাই ঈদে মসজিদ বা ইদগায় জমায়েত না-করে বাড়িতে নামাজ আদায়ের জন্য ওয়াকফ বোর্ডের তরফে রাজ্যের প্রায় ৪০ হাজার মসজিদে নোটিস পাঠানো হচ্ছে। রাজ্যের মুসুলমদের কাছে সব মুসলিম ধর্মীয় নেতারাই আবেদন করে বলেছেন, আপনারা দীর্ঘ এক মাস কষ্ট করে মসজিদে না-গিয়ে বাড়িতে নামাজ আদায় করছেন। ঈদের নামাজটাও একটু কষ্ট করে নিজের নিজের বাড়িতে সপরিবারে আদায় করুন।