কুমিল্লা নগরিতে করোনা উপসর্গ নিয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে ও আক্রান্ত হয়েছেন ২০ জন। শহরের বজ্রপুর ইউসুফ হাই স্কুলের পূর্বপাশের বাসিন্দা, বিশিষ্ট সিমেন্ট ব্যবসায়ী ও সুয়াগাজীর রাহাত ফিলিং স্টেশনের মালিক আব্দুল কুদ্দুস গত রাত আড়াইটায় মারা যান। তাঁর কাশি জ্বর ও এজমা শ্বাসকষ্ট ছিল। শেষের দিকে তিনি স্ট্রোক করেন। সদর দক্ষিন উপজেলার পিপুলিয়ার হেমজুরা গ্রামে তাঁকে দাফনের করা হয়।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তির এক ঘন্টা পর গত রাত পৌনে ৫ টায় মারা গেছেন শহরের চকবাজারের ধনেশ্বর হাউসের ৫৩ বছর বয়সী ওবায়দুল হাসান।
আগের দিন ১৯ মে দুপুরে একই ওয়ার্ডে মারা যান শহরের চকবাজারের সফিক নামে ৮০ বছর বয়স্ক একজন। তিনিও হাসপাতালের আইসোলেশনে ছিলেন।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান আইসোলেশনে থাকাদের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।লাকসামে উপজেলায় ২ জন করোনা পজেটিভ সনাক্ত হলো, একজন চট্টগ্রাম ফেরত দক্ষিন লাকসাম সাহা পাড়ার জগ্ননাথ দিঘির দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দা,অন্যজন লাকসাম বাইপাসের লাইফকেয়ার হাসপাতালের ষ্টাফ ।
পুরো হাসপাতাল লকডাউন করে দেয়া হয়েছে বলে জানায় লাকসাম উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগ। চৌদ্দগ্রামে ফারুক নামের এক ট্রাক চালক করোনা আক্রান্ত
চৌদ্দগ্রামে উপজেলার ফারুক হোসেন (৩৭) নামের এক ট্রাক চালক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ফারুক চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সোনাকাটিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ড্রাইভারের ছেলে। বুধবার বিকেলে ফারুকের বাড়িসহ আশপাশের আরো ছয়টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার তার পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে বুধবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হাসিবুর রহমান জানান। তিনি আরো বলেন, গত ১৮ মে সোমবার তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং আজ বুধবার রিপোর্ট পজেটিভ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ফারুকসহ ওই গ্রামের কমপক্ষে ৬০ জন ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চালক রয়েছেন। তারা যাতায়াতের সময় বাড়িতে এসে ঘুমায় এবং গ্রামের দোকান গুলোতে অনেক সময় বসে আড্ডা দিতেন। এছাড়া তাদের পরিবারের অনেক সদস্য গ্রামের মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন এবং বাজারে ও গ্রামের দোকানে বসে সময় কাটিয়েছেন। তাদের অবাধ চলাচলের কারণে সারা গ্রামেই করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী । এদিকে বুড়িচং উপজেলার সদরসহ নতুন করে ৫ জনের করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে । বুধবার বিকেলে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার মীর হোসেন মিঠু জানান, আজকের দিনে নতুন করে ৫ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। তারা হলেন সদরের হরিপুর গ্রামের মহসিন খান, রাজাপুর গ্রামের নোয়াপাড়ার এনামূল, হাসান, রাশেদ, নাজমুল হাসান।
এর আগে সদরে প্রথম করোনা পজেটিভ এসেছে খোকন চন্দ্র দাসসহ এই পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জন সুস্থ হয়েছে ৮জন। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩০৪ জন।
এছাড়াও বুড়িচং উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান ও বুড়িচং থানার ওসি মোজাম্মেল হক পিপিএম ঘটনাস্থল গিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি লকডউন করে দিয়েছে ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান জানান, এখনো যারা বাইরে এবং বাজারে ঘুরাফেরা করছেন তারা যদি সচেতন না হয় তাহলে আরো করোনা সংখ্যা বেড়ে যাবে। আসুন আমরা সবাই সচেতন হই এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে থাকি সুস্থ থাকি। এ নিয়ে জেলায় ৩৭২ জন অাক্রান্ত। অাক্রান্তদের মধ্যে লাকসামে ২ জন,চান্দিনায় ২ জন, ব্রাহ্মণপাড়ায় ৩ জন, মুরাদনগর ২ জন,বুড়িচং ৫ জন, চৌদ্দগ্রামে ১ জন,সদর দক্ষিন ১ জন,নাঙ্গলকোটে ২ জন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১ জন ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ১ জন। অাজ একজন সুস্থ্য সহ ৬২ জন সুস্থ্য হয়েছে।এ পর্যন্ত ১৪ জনের প্রানহানী ঘটেছে।