× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিষ্ণুপুরের চেয়ারম্যান একাই বানিয়েছেন ২৫০০ টাকার তালিকা

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া/ বিজয়নগর প্রতিনিধ
২২ মে ২০২০, শুক্রবার

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের দেয়া নানা সহায়তা মিলছে না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মানুষদের। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের দ্বন্দ্বে গত প্রায় দু’বছর ধরে অচল এই ইউনিয়ন পরিষদ। আর এতে কপাল পুড়ছে এখন কর্মহীন-হতদরিদ্র মানুষদের। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগের পাহাড়। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ছাড়াও বেশ কয়েকটি মামলার আসামি চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া। কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার ২৫০০ টাকা আর্থিক সহায়তার এই ইউনিয়নের তালিকাও চেয়ারম্যান  নিজেই বানিয়েছেন। সদস্যদের সম্মতি ছাড়া চেয়ারম্যানের দেয়া ওই তালিকাই আপলোড করে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পরিষদ সদস্যদের স্বাক্ষরবিহীন একটি তালিকা (হার্ডকপি) জমা দিয়েছেন তাদের কাছে। এর আগে তালিকার যে সফ্ট কপি দিয়েছিলেন সেটি তারা আপলোড করেছেন। এখন চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে সবার স্বাক্ষরিত রেজুলেশনসহ হার্ড কপি জমা দিতে বলা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে। ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করছেন চেয়ারম্যান তার নিজের লোকজনের নাম বসিয়ে এই তালিকা বানিয়েছেন। করোনাকালীন গরিব-অসহায় মানুষের খাদ্যসহ অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতা বিতরণেও অনিয়ম-গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অসহায়-কর্মহীন মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্যে ইউনিয়নে এ পর্যন্ত  মোট ১০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে বিতরণ হয়েছে ৬ টন। নগদ ৪০ হাজার টাকা বিতরণের জন্যে দেয়া হলেও বিতরণ হয়েছে এর অর্ধেক। করোনা পরিস্থিতিতে দেয়া বিভিন্ন বরাদ্দ জামাল উদ্দিন আত্মসাৎ করেছেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগও দিয়েছেন পরিষদ সদস্যরা।
এদিকে চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে রয়েছে আরো নানা অভিযোগ। ২০ মাস ধরে মাসিক মিটিং ছাড়া নিজের ইচ্ছেমতো পরিষদ চালাচ্ছেন তিনি। স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করের এক পার্সেন্ট টাকা এবং অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে কাবিখা, টিআর, এলজিএসপি, এডিপি’র বরাদ্দের  টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দেয়া হয়েছে  জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দফায় দফায়। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কাছেও  চেয়ারম্যানের ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্তব্যে অবহেলাসহ  নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দিয়ে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন পরিষদ সদস্যরা। চেয়ারম্যান জামাল মাদকসেবী এবং তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, জাল জন্ম সনদ প্রদানের মামলাসহ ৪টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে বলে বিভিন্ন অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে জামাল দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে তার কক্ষে বৈঠক করছেন বলে পরিষদ সদস্যরা অভিযোগ করেন। নির্বাহী কর্মকর্তার সহায়তাতে জামাল অনিয়ম-দুর্নীতিতে লিপ্ত বলেও অভিযোগ করেন তারা। ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া এবং ৫ নং ওয়ার্ডের মো. আক্তার হোসেন বলেন, যতো অনিয়ম আছে সবই করছেন চেয়ারম্যান জামাল। পরিষদের মান-ইজ্জত একেবারে শেষ করে দিয়েছেন। একাধিকবার নারী কেলেঙ্কারিতে ধরা পড়ে মারও খেয়েছে। তাছাড়া সে নেশাগ্রস্ত। এ দু’জন সদস্য ছাড়াও ৭ নং ওয়ার্ডের মোঃ সফিকুল ইসলাম, ৮নং ওয়ার্ডের মোঃ হানিফ মিয়া, ৯ নং ওয়ার্ডের হারিজ মিয়া, ৪, ৫, ৬ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য মোছাম্মাৎ আম্বিয়া বেগম, ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য মোছাম্মাৎ হাসিনা বেগম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দেয়া লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করেন। এই সদস্যরা ৭/৮ মাস ধরে একেবারেই পরিষদে যাচ্ছেন না। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের নম্বরে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার তালিকা নিয়ে পরিষদের সদস্যরা আমার কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। তালিকায় উপযুক্ত লোকের নাম উঠেনি এমন অভিযোগ পেলে আমরা তাদের বাদ দিয়ে দেবো। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর