× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রেমডেসিভির বাজারজাত শুরু করলো বেক্সিমকো

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২২ মে ২০২০, শুক্রবার

স্বনামধন্য ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান  বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (বেক্সিমকো ফার্মা, বিপিএল বা কোম্পানি) গতকাল রেমডেসিভির (ব্র্যান্ড নাম বেমসিভির) বাজারজাত শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। এন্টি-ভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভির সম্প্রতি কভিড-১৯ চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা (এফডিএ)-এর জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে। বহুল প্রতীক্ষিত এই ওষুধের জেনেরিক সংস্করণ বাজারজাতকরণে বেক্সিমকো ফার্মাই বিশ্বের প্রথম। রেমডেসিভির সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের রেপ্লিকেশন বা বংশ বৃদ্ধি রোধে প্রথম কার্যকরি ওষুধ হিসেবে রেমডেসিভির কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।        
বাংলাদেশে বেক্সিমকো ফার্মাই সর্বপ্রথম ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের আবেদন করে। ওষুধের অনুমতির জন্য প্রযোজ্য সকলবিধি বিধান অনুযায়ী আবেদনের সকল ধাপ সুসম্পন্ন করে। পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা শেষে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর গতকাল জরুরি ব্যবহারের জন্য বেমিসিভির ব্র্যান্ড নামে বেক্সিমকো ফার্মার উৎপাদিত রেমডেসিভির ইঞ্জেকশন-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিলো।  
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গিলিয়াড সাইন্সেস রেমডেসিভির এর উদ্ভাবক। প্রত্যক্ষ এন্টিভাইরাল হিসেবে রেমডেসিভির ভাইরাসের আরএনএ সংশ্লেষণ প্রতিরোধে সরাসরি কাজ করে।
রেমডেসিভির রক্তনালীতে ইঞ্জেকশন হিসেবে প্রয়োগ করা হয়। কভিড-১৯ এ গুরুতর অসুস্থ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ক্ষেত্রে এটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় রেমডেসিভির ব্যবহারে কভিড-১৯ আক্রান্ত গুরুতর রোগীদের দ্রুততর সময়ে সুস্থ হয়ে ওঠার প্রমাণ মিলেছে। জাপান সরকারও কভিড-১৯ এ গুরুতর অসুস্থ রোগীর ক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসা হিসেবে রেমডেসিভির ব্যবহারের বিশেষ অনুমতি প্রদান করেছে। জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের ক্ষেত্রে রেমডেসিভির ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহের রোগীদের জন্য সর্বাধুনিক যুগান্তকারী ওষুধ সহজলভ্য করা সবসময়ই একটি দুরূহ বিষয়।
বাংলাদেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী, বেক্সিমকো ফার্মা শুধুমাত্র কভিড-১৯ চিকিৎসায় নির্ধারিত হাসপাতাল সমূহেই রেমডেসিভির (বেমসিভির) সরবরাহ করবে, কোনো ফার্মেসিতে সরবরাহ করবে না। ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রাপ্তির প্রথম দিনেই বেক্সিমকো ফার্মা বিপুল পরিমাণে রেমডিসভির (বেনসিভির) কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য অনুদান হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহেদ মালিকের কাছে এই ওষুধ হস্তান্তর করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্যসেবা সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্যশিক্ষা সচিব মো. আলী নুর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ এবং কেন্দ্রীয় ঔষধাগার-এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। উপস্থিত সকলে মহামারি করোনা মোকাবিলায় বেক্সিমকো ফার্মার গৃহীত উদ্যোগসমূহের প্রশংসা করেন।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান এমপি বলেন, কভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ওষুধটি আনার ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম জেনেরিক কোম্পানি হতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। নানাবিধ প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, নতুন এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার ওষুধটি উৎপাদন মূলত যুগান্তকারী আবিষ্কার। এটি সহজলভ্য করা আমাদের অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন। সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগিতার কারণেই স্বল্পতম সময়ে রোগীদের জন্য এই ওষুধ নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। এজন্য তাদের প্রতি আমরা সবিশেষ কৃতজ্ঞ। সামাজিক দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সরকারের কর্মকা-ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদানের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।
মহামারী করোনাভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে কভিড-১৯ আক্রান্তদের জন্য বিশ্বের সর্বাধুনিক বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেক্সিমকো ফার্মা সক্রিয়ভাবে কাজ করে চলছে। নিজস্ব আধুনিক গবেষণা ও উৎপাদন সক্ষমতার আলোকে, নতুন এই মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণে বেক্সিমকো ফার্মা অঙ্গীকারবদ্ধ। বেক্সিমকো ফার্মা ইতিমধ্যেই কভিড-১৯ চিকিৎসায় আরেকটি এন্টি-ভাইরাল ওষুধ ফেভিপিরাভির (ব্র্যান্ড নাম: ভিরাফ্লু) এবং কভিড চিকিৎসায় ব্যবহৃত ও সম্ভাবনাময় ওষুধ এন্টিম্যালারিয়াল হাইড্রোক্সিক্লোরকুইন (ব্র্যান্ড নাম: কোভিসিন) ও  এন্টি-প্যারাসাইটিক ইভারমেক্টিন (ব্র্যান্ড নাম: ইভেরা) উৎপাদন শুরু করেছে।  
বেক্সিমকো ফার্মা বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ওষুধ রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে প্রতিষ্ঠানটির উপস্থিতি আছে। বেক্সিমকো ফার্মার সর্বাধুনিক উৎপাদন স্থাপনা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জিসিসি ও লাতিন আমেরিকাসহ বিশ্বের অনেক ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত। ২০১৫ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ বেক্সিমকো ফার্মার উৎপাদন স্থাপনাকে অনুমোদন প্রদান করে। এরপর ২০১৬ সালের আগস্টে প্রথম বাংলাদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ওষুধ রপ্তানি শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
আরও তথ্য জানতে ভিজিট করুন: www.beximcopharma.com
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর