এবার কারাবন্দিদের জন্যও অন্যরকম এক ঈদ এসেছে। প্রতিবার পরিবার থেকে ঈদের দিন খাবার পাঠানোর সুযোগ থাকলেও এবার সেটা হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, পরিবারের কারো সঙ্গে দেখাও করতে পারবে না। তবে ফোনে কথা বলার সুযোগ থাকছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে কারা কর্তৃপক্ষ এবার ঈদের দিন বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দিচ্ছে না।। সেই সুযোগে বন্দিরা নিজেরাই ফোন করে তাদের পরিবারের সদস্যদের ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত এপ্রিলে সারা দেশে কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ করে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। সারা দেশের মতো কারাগারেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে।
গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের ছয়টি কারাগারে বন্দি ও কারারক্ষী মিলে ৪৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ২৩ জন কারারক্ষী। গত শুক্রবার পর্যন্ত ১০ জন সুস্থ হয়েছেন বলে জানান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলাম। গত এপ্রিল মাসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক বন্দি চিকিৎসাধীন থাকার সময় করোনা আক্রান্ত হন। তাকে পাহারা দেয়া কারারক্ষীদের মধ্যেও করোনা ছড়ায়। তাদের মাধ্যমে পুরনো ঢাকার পুরনো কারাগারের ব্যারাকে থাকা কারারক্ষীদের মধ্যে ভাইরাস ছড়ায়। এভাবে ২৩ জন কারারক্ষী আক্রান্ত হন। এছাড়া সিলেটে একজন বন্দি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পঞ্চগড়ে একজন বন্দির প্রথম পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়। তবে দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় তার নেগেটিভ আসে।
কারা কর্মকর্তারা জানান, দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বন্দিদের সঙ্গে তাদের স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ থাকবে। তবে দেশের কারাগারগুলো থেকে বিশেষ প্রয়োজনে বন্দিকে মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, বন্দিদের পাঁচ মিনিট করে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। বন্দিরা যখন কথা বলেন তখন কী বলেন শোনা হয়। তারা যাতে পরিবারের খোঁজখবরের বাইরে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কথা না বলতে পারে সে বিষয়ে খেয়াল রাখা হয়। কথা বলার সময় বন্দিরা তাদের পরিবারের লোকদের কারাগারে না আসার জন্য বলছেন। এমনকি করোনার এই সময়ে যাতে ঘর থেকে বের না হয় সে বিষয়েও পরামর্শ দিচ্ছেন।