× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভূমিতে মাথা ঠেকিয়ে সিজদার স্থানটুকুও নেই, হাঁটু পানিতে হলো ঈদ জামাত

অনলাইন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
(৩ বছর আগে) মে ২৫, ২০২০, সোমবার, ৫:৪৭ পূর্বাহ্ন

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে খুলনার কয়রায় পানিতে চতুর্দিক শুধু থৈ থৈ করছে। এক চিলতে শুকনো জায়গা নেই। এর মধ্যে এলাকাবাসীর ঈদের দিনটি কেটেছে ভিন্নরকম।

সুপার সাইক্লোন আম্পানের ফলে পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার ৮০ ভাগ এলাকা। আম্পানের তাণ্ডবে কয়রায় ১২১কি.মি বেড়িবাঁধের মধ্যে ২১ জায়গায় ৪০ কি.মি অধিক বাঁধ ভেঙে গেছে। ঈদুল ফিতরের দিন সেই ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নির্মাণে সেচ্ছাশ্রমে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়েই আদায় করেছেন পবিত্র ঈদের নামাজ। বেলা সাড়ে দশটায় কয়রা উপজেলার ২নং কয়রা নদী ভাঙন পাড়ে এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

ঈদের নামাজে ইমামতি করেছেন  কয়রা উপজেলা সাবেক  চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা মাওলানা আ খ ম তমিজ উদ্দিন। দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়েই নামাজ শেষে সেমাই খেয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ তৈরি করতে নামেন এলাকাবাসী।
দুপুরে তাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে খিচুড়ির। এভাবেই ঈদের দিন বাঁধ মেরামতে সময়  পালন করছেন আইলা ও আম্পানে ক্ষতবিক্ষত হওয়া কয়রার মানুষ।
এ সময় জামায়াত নেতা মাওলানা তমিজউদ্দীন বলেন কয়রা মানুষকেঐক্যবদ্ধ ভাবে এই সংকটনিরসন করতে হবে।এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সহয়োগীতা করতে হবে।
নামাজ শুরুর আগে কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী নেতা এম শফিকুল ইসলাম জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।বক্তব্যে তিনি লন্ডভন্ড কয়রার দুর্বিসহ অবস্থা তুলে ধরেন এবং মজবুত বাঁধ নির্মাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়া স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ বাঁধার কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
এস এম শফিকুল ইসলাম  বলেন, এবার অন্যরকম এক ঈদ পালন করছি আমরা। সেচ্ছাশ্রমে বেড়ীবাঁধ নির্মানে এসে জোয়ারের পানি যখন হাঁটুপানি পর্যন্ত পৌছায় তখই শুরু হয় ঈদের নামাজ। প্রায় ৬ হাজার মানুষ নামাজে অংশগ্রহন করেন। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সবার জন্য ঈদের সেমায়ের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া দুপুরে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ভিচুরির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়রা পাউবোর ১৩/১৪-১ ও ১৩/১৪-২ নম্বর পোল্ডারের (চারদিকে নদীবেষ্টিত দ্বীপ অঞ্চল) অন্তর্ভুক্ত। এর পূর্ব পাশে সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে শাকবাড়িয়া নদী, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কপোতাক্ষ ও উত্তর পাশে রয়েছে কয়রা নদী। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে খুলনার ৯টি উপজেলার ৮৩ হাজার ৫৬০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে ক্ষতিতে পড়েছেন সাড়ে ৪ লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে কয়রা উপজেলায়, সেখানে ৪০ কিলো মিটার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে ৮০ ভাগ এলাকাই প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অসহায় হয়ে পড়েছেন প্রায় ৭ লাখ মানুষ।

আম্পানের আঘাতে কয়রার চারটি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২১ টি পয়েন্টে নদী ভাঙনের কারণে এসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঝড় ও বন্যার কারণে কয়রা উপজেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে জোয়ারের ছোটবড়ো ৫ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর