করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এমন রোগীদের মল পরীক্ষা করে তাতে জীবন্ত করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন চীনা গবেষকরা। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যে, এই ভাইরাস শুধু হাঁচি, কাশির মাধ্যমেই ছড়ায় না। তা মলমূত্রের মাধ্যমে, পায়ুপথেও ছড়াতে পারে। প্রায় এক ডজন রোগীর মল’কে নমুনা হিসেবে নিয়ে পরীক্ষা করেছেন চীনের গবেষকরা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ^াস প্রশ^াসের মাধ্যমে যতটুকু করোনা ভাইরাস ছড়ায় মলের নমুনায় তার চেয়ে বেশি ভাইরাস পাওয়া গেছে। এই গবেষণা করেছে গুয়াংঝৌ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির একটি টিম। এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে ইমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজেস-এ। এতে বলা হয়েছে, এ বছরের শুরুতে ৭৮ বছর বয়সী একজন পুরুষের করোনা ভাইরাস পজেটিভ ধরা পড়ে।
তাকে গুয়াংঝৌ-এর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৭ই জানুয়ারি তার কাশি, অনিয়মিত জ¦র পরীক্ষা ও বুকের সিটি স্ক্যান করা হয়। এর ৫ দিন পরে ২২ শে জানুয়ারি ওই ব্যক্তির অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় তাকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। ২৭ জানুয়ারি থেকে ৭ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে ওই ব্যক্তির মলের চারটি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তা পরীক্ষা করে তাতে করোনা ভাইরাসের আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক এসিড) শনাক্ত করা হয়। ২০ শে ফেব্রুয়ারি মারা যান তিনি। গবেষকরা পরীক্ষা চালিয়ে যান। ট্রান্সমিশন ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে তারা কালচার পরীক্ষা করেন। তাতে কোভিড-১৯ এর প্রোটিনের পর্যাপ্ত গোলাকার পাটিকেল দেখতে পান।
চলতে থাকে পরীক্ষা। এবার তারা আরো ২৭ জন রোগীর মল নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে ১১ জনের মলে আরএনএ’র উপস্থিতি পাওয়া যায়। গবেষকরা দু’জন রোগীর মলে জীবন্ত ভাইরাস শনাক্ত করেন। এরপরেই তারা বলেছেন, কোভিড-১৯ মলের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে বলে এই পরীক্ষা ইঙ্গিত দিচ্ছে। উপরন্তু করোনার লক্ষণ দেখা দেয়ার ১৭ থেকে ২৮ দিন পরে যেসব রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে শ^াস প্রশ^াসের চেয়ে তাদের মলে বেশি পরিমাণ করোনা ভাইরাসের ডিএনএর উপস্থিতি দেখতে পান তারা। তবে ২৮ দিন পরে যাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তাদের মলে জীবন্ত করোনা ভাইরাস শনাক্ত করতে পারেন নি গবেষকরা। তবে তারা তাতে আরএনএর উপস্থিতি দেখতে পেয়েছেন। তবে এটা সংক্রামক নয়। এর ফলে গবেষকরা বলছেন, এই ভাইরাস সার্স ভাইরাসের মতোই মলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।