× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভাড়ার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক চান বাড়িওয়ালারা

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) মে ২৬, ২০২০, মঙ্গলবার, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন

করোনাভাইরাসের কারণে আরোপ করা লকডাউনে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। চাকরি নেই, বেতন নেই, ফলে নিম্নআয়ের মানুষজন যেন দিশেহারা। এমন সময় অনেকেই বাড়িভাড়া পরিশোধ করতে পারছেন না। আর বাড়িওয়ালারাও সেই দুর্বলতার সুযোগ নিতে ছাড়ছেন না। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অনেকেই ভাড়াটের কাছে বাড়িভাড়ার বদলে সেক্স দাবি করছেন। গৃহায়ন বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এমন প্রতিবেদন করেছে থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন।

খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে শতাধিক বৈষম্য-বিরোধী গৃহায়ন গ্রুপের সংগঠন ন্যাশনাল ফেয়ার হাউজিং অ্যালায়েন্স (এনএফএইচএ)-এর করা এক জরিপে উঠে এসেছে, ১৩% ক্ষেত্রেই এই করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে যৌন হয়রানির অভিযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাড়িওয়ালার কাছ থেকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ পাওয়া এক নারী বলছেন, ‘আমি যদি তার সঙ্গে সেক্স না করতাম, তাহলে সে আমাকে বের করে দেবে। একাকী মা হিসেবে আমার কোনো বিকল্প ছিল না। আমি ঘরবাড়ি হারা হতে চাইনি।’

যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনে বাড়িভাড়ার বদলে সেক্স দাবির বিষয়টি নতুন করে আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিনত হয়েছে এই লকডাউনে।

দুই দেশেই বসবাসের ব্যয় অত্যন্ত বেড়ে গেছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা বলছে, অনলাইনে এমন বহু বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে যে, যৌন সুবিধার বিনিময়ে ভাড়াবিহীন থাকতে দেওয়া হবে।

করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষ তাদের চাকরি হারিয়েছেন। কিংবা আয় কমে গেছে। লকডাউন ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের অনেক দেশই নাগরিকদের জন্য নগদ সহায়তা, ভাড়া স্থগিত, ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের ওপর নিষেধাজ্ঞার মতো নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

গৃহায়ন সম্পর্কিত বৈষম্য থেকে ভাড়াটিয়াদের রক্ষায় কাজ করে এনএফএইচএ। সংস্থাটির আইনজীবী মরগান উইলিয়ামস বলেন, ‘যেসব মানুষ ভাড়াবাসা থেকে বের হয়ে গেলে ভীষণ বিপদে পড়বেন, বিশেষ করে মহামারির সময়, তাদেরকে অসম্ভব সব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এই অসহায়ত্বের সুযোগকেই অনেকে ব্যবহার করছে।’

তবে ভাড়ার বদলে যৌন সুবিধা নিয়ে তেমন কোনো উপাত্ত পাওয়া যায় না। এই ইস্যুতে তেমন একটা সচেতনতাও নেই। এছাড়া এর আইনগত দিকও বেশ অস্পষ্ট। এর ফলে ভিকটিমরাই আইনগতভাবে পতিতাবৃত্তির অভিযোগের মুখে পড়তে পারে। এসবের কারণে অনেক ঘটনাই ভিকটিমরা এড়িয়ে যান। দায়ীরা বিচারের মুখে পড়েন না।

২০১৮ সালে দাতব্য সংস্থা শেল্টার ইংল্যান্ডের করা এক জরিপ থেকে দেখা গেছে, ইংল্যান্ডে প্রায় আড়াই লাখ নারী আগের ৫ বছরে ভাড়া না দিতে পারলে যৌন সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব পেয়েছেন। এই ‘যৌন চাঁদাবাজি’র বিরুদ্ধে সোচ্চার বৃটিশ আইনজীবী ওয়েরা হবহাউজ। তিনি বলেন, এই লকডাউনের সময় চাকরিবাকরি ছাড়া মানুষজনকে যেকোনো মূল্যেই ঘরে থাকতে হবে। তাই এই সময়ে এই ধরণের ঘটনা আরও বাড়বে। তিনি বলেন, ‘কভিড-১৯ এর কারণে যুক্তরাজ্যজুড়ে অনেকেই আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন। ফলে সম্ভবত সবচেয়ে খারাপ এই সময়েই অনেককেই ওই ধরণের সমঝোতায় যেতে হবে। অন্যথায় তাদের গৃহহীন হয়ে যেতে হবে।’

এনএফএইচএ’র আইনজীবী উইলিয়ামস বলেন, অনেক নারীই বাড়িওয়ালাদের যৌন নির্যাতনের ব্যাপারে মুখ খুলতে চান না, কারণ তাদের আশঙ্কা হয়তো বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে হবে। এসব বেশি ঘটে যখন নারীরা দারিদ্র্য সহ নানা ধরণের সমস্যার হন। তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অভিযোগ দায়ের করে, আর তা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কাজ অত্যন্ত কঠিন।

যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা দ্য অ্যাডভোকেটস ফর হিউম্যান রাইটস-এর নারী অধিকার বিষয়ক আইনজীবী ক্যারিন লং বলেন, ভাড়ার বিনিময়ে যৌন সুবিধা দিয়েছেন এমন অনেক নারী ইতিমধ্যেই ঝুঁকিতে আছেন। এদের কেউ কেউ হয়তো যৌন মানবপাচারের শিকার। কেউ আবার আগে বন্দী ছিলেন বা জাতিগত সংখ্যালঘু। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি তারা গোপন রাখেন বা নীরবে সহ্য করতে চান। তারা এই বিষয়টি সরকারি কর্তৃপক্ষকে জানান না, কেননা অতীতে হয়তো এই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না।’

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর