× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বৃটেনে হিজাব পরা প্রথম মুসলিম নারী বিচারক

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) মে ২৭, ২০২০, বুধবার, ১২:১২ অপরাহ্ন

বৃটেনে প্রথম হিজাব পরিহিত মুসলিম নারী রাফিয়া আরশাদ (৪০) বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তাকে গত সপ্তাহে মিডল্যান্ডস সার্কিটে ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট জজ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রাফিয়া বলেছেন, বয়স যখন মাত্র ১১ বছর তখন থেকেই তিনি আইন পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। বলেছেন, তিনি যুবতী মুসলিমদের বলতে চান, তাদের জানা উচিত, তারা মনে মনে নিজেকে যেভাবে গড়ে তুলতে চান সেটা তিনি অর্জন করতে পারবেন। তিনি বড় হয়েছেন এই ধারণা নিয়ে যে, তার মতো যারা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কর্মজীবী একজন নারী যদি চান তাহলে বিশ্বের মধ্যে তিনি এমন একটি যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। এ জন্যই প্রায় ৩০ বছর পরে তিনি এখন শুধু একজন সফল ব্যারিস্টারই নন, একই সঙ্গে একজন বিচারক। একজন মুসলিম বিচারক। হিজাব পরা মুসলিম বিচারক।
রাফিয়া তিন সন্তানের জননী।

তিনি বৃটেনের অনলাইন মেট্রোকে বলেছেন, তিনি চান বিভিন্ন বৈচিত্রের মানুষের কথা সুষ্ঠুভাবে শুনতে চান, পরিষ্কারভাবে শুনতে চান। তার ভাষায়, এটা আমার চেয়েও অবশ্যই বড় কাজ। আমি জানি এই কাজটি আমাকে নিয়ে নয়। সমস্ত মানুষের সেবার জন্য। এটা শুধু একজন মুসলিম নারীর জন্য নয়, সব নারীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটা মুসলিম নারীদের জন্য অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক বছর ধরে আমি এ জন্য কাজ করেছি। সব সময়ই আমি কল্পনা করেছি যখন এই দায়িত্ব পাব তখন খুব উল্লসিত হবো। এ জন্য আমি খুব খুশি। কিন্তু অন্য মানুষরা আমার সঙ্গে এই আনন্দ যখন ভাগাভাগি করেছেন তখন তা আরো বড় হয়ে উঠেছে। নারী, পুরুষ সহ অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে আমি ইমেইল পেয়েছি। অনেক নারী বলেছেন, তারা হিজাব পরেন এবং মনে করেন, তারা ব্যারিস্টার হতে পারবেন না, আর তো বিচারক হওয়া দূরের কথা।

রাফিয়া আরশাদের ক্যারিয়ার ১৭ বছরের। তাকে বলা হয় পাওয়ারহাউজ। তবু তিনি বলেছেন, নিত্যদিন তাকে বৈষম্য ও কুসংস্কারের মুখোমুখি হতে হয়। মিডল্যান্ডভিত্তিক এই বিচারক বড় হয়েছেন ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারে। কর্মজীবনে তিনি একদিনের কথা খুব বেশি স্মরণ করতে পারেন। ওই সময়ে ইনস অব কোর্ট স্কুল অব ল’তে ২০০১ সালে স্কলারশিপে সাক্ষাতকার দিতে যান। কিন্তু নিজের পরিবারের সদস্যরা তাকে হিজাব না পরার আহ্বান জানান। তারা তাকে বলেছিলেন, তুমি হিজাব পড়ে গেলে স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ নাটকীয়ভাবে কমে যাবে। কিন্তু সেই চাপের কাছে মাথা নত করেন নি রাফিয়া আরশাদ।

তিনি বলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম হেডস্কার্ফ পরবো। আমি পরলাম। এবং সাক্ষাতকারে সফল হলাম। আমাকে একটি স্কলারশিপ দেয়া হয়েছিল। আমার মনে হয় আমার ক্যারিয়ারে এটাই ছিল প্রথম কোনো বড় পাওয়া। এটা সত্য যে যেকেউ চেষ্টা করলে এটা পারেন।
লন্ডনে প্রশিক্ষণ শেষে ২০০২ সালে তার ডাক পড়ে। তিনি নটিংহ্যামে শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। ২০০৪ সালে যোগ দেন সেইন্ট মেরিস ফ্যামিলি ল চেম্বারস-এ। গত ১৫ বছর ধরে তিনি প্রাইভেট ল চিলড্রেন, জোরপূর্বক বিয়ে, নারীদের খৎনাপ্রথা, ইসলামিক আইন বিষয়ক ইস্যু নিয়ে চর্চা করেছেন। ইসলামিক ফ্যামিলি ল-এর ওপর একটি বই লিখেছেন।

কর্মজীবনে তাকে কেউ কেউ ভুল করে ক্লায়েন্ট বা দোভাষী বলে মনে করে থাকেন কোর্টরুমে। এমন একটি অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন তিনি। একবার একজন লোক তাকে জিজ্ঞেস করেন- আপনি কি কোনো ক্লায়েন্ট?
জবাবে রাফিয়া বলেন, না। আমি কোনো ক্লায়েন্ট নই।
তাহলে আপনি নিশ্চয় একজন দোভাষী?
না। আমি তাও নই।
তাহলে আপনি কি এখানে অভিজ্ঞতা নিতে কাজ করছেন?
না। আসলে আমি একজন ব্যারিস্টার। জবাব দেন রাফিয়া।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর