× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিজয়নগরে ব্যবসায়ীর হাত-পা ভেঙে দিলো মাদক কারবারিরা

বাংলারজমিন

বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
২৭ মে ২০২০, বুধবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামূড়া গ্রামের উপর দিয়ে মাদক পাচার করতে দেয়া হবে না- গ্রামবাসীর এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই মাদক বিরোধী সভার অন্যতম আয়োজক ও স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ির হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে পাচারের সঙ্গে জড়িত একটি চক্র। এ ঘটনায় বিজয়নগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মারাত্মক আহত আবু নাছের (৩৫) নামের ওই যুবক বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি সেজামূড়া গ্রামের আবু শামার ছেলে ও স্থানীয় আউলিয়া বাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ি।
আহত আবু নাছের হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে মাদকদ্রব্য পাচারে জড়িত সেজামূড়া গ্রামের মৃত বাদল ভূঁইয়ার ছেলে, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবু কাউসার ভূঁইয়া ও তার চক্রের বিরুদ্ধে গত ২৩ মে, বিকেলে গ্রামের ৬০-৬৫ জন মুরুব্বি ও যুবকদের নিয়ে স্থানীয় হুমায়ূন কবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাদকবিরোধী একটি সভা করা হয়। সভা থেকে গ্রামের উপর দিয়ে মাদক পাচার করতে দেয়া হবে না বলে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তিনি জানান, পরদিন ২৪ মে সকালে তার দাদী মারা যাওয়ায় কাফনের কাপড় কিনতে তিনি আউলিয়া বাজার আসেন। কাপড় কিনে বাড়ি ফেরার পথে নজরপুর গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে আগে থেকে উৎ পেতে থাকা কাউসারসহ ১২/১৪ জন তার মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে তাকে লোহার রড, শাবল ও কাঠের রোল দিয়ে বেধড়ক পেটান।
এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারিরা মৃত ভেবে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় কাজল নামের এক ব্যবসায়ি তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আউলিয়া বাজারে নিয়ে আসলে সেখানকার ব্যবসায়িরা তাকে দ্রæত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
আক্ষেপ করে আবু নাছের বলেন, মাদক পাচারকারি চক্রটির রোষাণলে পড়ে আমার ডান হাত ও ডান পা ভাঙলো। তাদের হামলার কারণে আমি আমার দাদীর দাফনেও অংশ নিতে পারিনি। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে বিজয়নগর কখনোই মাদকমুক্ত হবে না।
পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও একই গ্রামের বাসিন্দা বাসির মিয়া বলেন, যুবলীগের নাম ভাঙিয়ে আবু কাউসার ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচার করে এবং এলাকায় একাধিক মাদকের স্পট চালায়। এসবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় সে গত ২০১৮ সালের ১৫ আগস্ট আমার উপরও হামলা চালায়। ওই দিন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান শেষে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় গোয়ালনগর সড়কে কাউসার ও তার বাহিনীর লোকেরা আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে মোবাইলফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা ঘটননাস্থলে ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা চাপ সৃষ্টি করে ঘটনাটির আপোষ-মীমাংসা করেন। ক্ষমতাসীন দলের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের ছত্রছায়ার কারণে কাউসারের বিরুদ্ধে কেউ কার্যত কোন ব্যবস্থা নিতে পারে না। পাহাড়পুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মো. আনিছুর রহমান বলেন, কাউসারের মাদক ব্যবসা ও নানা অপকর্ম সম্পর্কে সবাই জানেন। তবুও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না কেউ। ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলার কারণে সে অপকর্ম করে পার পেয়ে যাচ্ছে। তার লাগাম টেনে ধরা উচিত। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবু কাউসার ভূঁইয়া বলেন, ‘নাছের আমার প্রতিবেশি। তার সঙ্গে আমার কোন বিরোধ নাই। আমার চাচাত ভাইদের সঙ্গে সেদিন তার মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এসময় আমি উপস্থিত ছিলাম না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বলেন, সেজামূড়া গ্রামের ঘটনায় আহত নাছেরের বাবা আবু শামা বাদি হয়ে গত ২৪ মে রাতে কাউসারকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর