× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আড়াইহাজারে আম পাড়া নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

বাংলারজমিন

আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
২৭ মে ২০২০, বুধবার

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে একটি আম বাগান থেকে আম পাড়া নিয়ে দুইগ্রæপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আয়ুব আলী (১৮) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।  সে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইজারকান্দী পূর্বপাড়া এলাকার জয়নালের ছেলে। সে স্থানীয় রাধানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। আজ বুধবার বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত দফায় দফায় চলা হামলা পাল্টা- হামলায় দুইগ্রæপের বেশ কিছু বসত বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও আগ্নীসংযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে আড়াইহাজার থানার পুলিশ, খাগকান্দা নৌ-ফাঁড়ির ও কালাপাহাড়িয়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে গিয়ে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, আম বাগান মালিক ইউছূফ আলী ও স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটেছে। এক পর্যায়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুব দুইগ্রæপের পক্ষ নেন। নাম না প্রকাশের শর্তে ৫ নং ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা মুঠোফোনে জানান, ইজারকান্দি কবরস্থান এলাকায় মুছা আহমেদের মালিকানাধীন একটি লাইব্রেরী রয়েছে। এর কিছু অদূরেই ইউছূফের মালিকানাধীন একটি আম বাগান রয়েছে। শাজাহান কাউকে না বলে বাগান থেকে আম পেড়ে খায়। পরে এনিয়ে বাগানের কর্মচারি আয়ুব আলীর সঙ্গে প্রথমে তার কথা-কাটাকাটি হয়। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় বুধবার বিকাল ৩টার দিকে আয়ুব আলীকে মারধর করা হয়। উক্ত খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন শাজাহানের পক্ষে ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুব ইউছূফের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। উভয় গ্রæপের প্রায় তিন শতাধিক লোক তাতে অংশ নেন। এ সময় সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়। মুঠোফোনে ওই ব্যক্তি আরো বলেন, আমি লোকমারফত শোনেছি গুলিবিদ্ধ হয়ে আয়ুব আলী গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার সময় রাস্তায় তার মৃত্যু হয়। রাসেল নামে আরো এক ব্যক্তিও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জালাল উদ্দিন ও তার ভাইয়ের ১০টি লুট করা হয়েছে। এ সময় ২৬টি বসত ঘর ভাংচুর করা হয়েছে। বসত ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছেন সাধু, জাকির, লিটন, সাদ্দাম হোসেন, করিম, খোকন, রউফ মিয়া ও তাজু। এ সময় রাসেল, জালাল, খোকন, আলী নুর, ছাদ্দামের ঘরে অগ্নীসংযোগ করা হয়েছে। হামলাকারী খোকনের পোল্টি খামারে ঢুকে প্রায় ১ হাজার মুরগী লুট করে নিয়েছে। কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা। আমি করোর পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়নি। সংঘর্ষে আমার কোনো ভুমিকা নেই। আমি এর আগেও বিভিন্ন ঘটনায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার নাম জড়ানোর চেষ্টা করছেন। তিনি আরো বলেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার ও তার লোকজন ইউছুফের পক্ষ নিয়ে আমার বাড়ি ঘরসহ অনেকের বসত ঘর ভাংচুর করেছেন। তবে এ ব্যাপারে মাহাবুব গংয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এতে তাদের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে কালাপাহাড়িয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনর্চাজ শহিদুল আলম বলেন, সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আয়ুব আলী নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি ইজারকান্দি পূর্বপাড়া এলাকার জয়নালের ছেলে। এ সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে গিয়ে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থ থেকে জানান, গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কিছু বসত ঘর ভাংচুর করা হলেও কারোর বাড়িতে অগ্নীসংযোগের ঘটনা ঘটেনি। তবে মাহাবুব গংয়ের সঙ্গে সাদ্দাম গংয়ের আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্ব›দ্ব ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এরই জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে তদন্ত হচ্ছে। পরবর্তীতে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর