× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশির বয়ানে লিবিয়া ট্র্যা‌জে‌ডি

অনলাইন

মিজানুর রহমান
(৩ বছর আগে) মে ২৯, ২০২০, শুক্রবার, ১২:৪৮ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি

লিবিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের এলোপাতাড়ি গুলিতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত এবং ১১ জন গুরুতর আহত হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন একজন। তিনিই দূতাবাসকে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন। তার নাম পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে নিরাপত্তার স্বার্থে। তবে তিনি সম্পূর্ণ অক্ষত  এবং বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ত্রিপলীস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। তার বয়ান মতে, লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিজ্দাহ-তে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলের অবস্থান ত্রিপলী শহর থেকে ১৮০ কি.মি. দক্ষিণে। প্রায় ১৫ দিন পূর্বে বেনগাজী থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে কাজের সন্ধানে তারা যাচ্ছিলেন। এমন সময় মানবপাচারকারীরা তাদের জিম্মি করে।
তারা মোট ৩৮ জনের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য একত্র জড়ো করে। তাদের রাজধানী ত্রিপলীতে নেয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু মিজ্দাহ শহরে নেয়ার পর তাদের ওপর শুরু করে বর্বর নির্যাতন। উদ্দেশ্য দ্রুত মুক্তিপণ আদায়। অত্যাচার-নির্যাতনের চরম পর্যায়ে সূযোগ বুঝে প্রতিরোধ গড়ে তোলো ভিকটিমরা। তারা মূল হোতা লিবিয়ান ব্যক্তির ওপর চড়াও হলে তার মৃত্যু ঘটে। কিন্তু ঘটনাটি তখনই তাদের আয়ত্বের বাইরে চলে যায়, এবং বড় বিপদ হয়ে দাঁড়ায়। মুহুর্তে খবর ছড়িয়ে যায় ওই নিহত পাচারকারীর স্বজনদের কাছে। তারাসহ অন্য দুষ্কৃতিকারীরা আকষ্মিকভাবে জিম্মিদের উপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে যাতে আনুমানিক ২৬ (ছাব্বিশ) জন বাংলাদেশী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

ওই বাংলাদেশিসহ স্থানীয় সূত্রের বরাতে ত্রিপলীস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছে। তাতেও প্রায় অভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। ই-মেইলযোগে পাঠানো বাংলাদেশ দূতাবাস ত্রিপলী, লিবিয়ার রিপোর্ট মতে, দূতাবাস ২৮শে মে লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিজ্দাহ-তে কমপক্ষে ২৬ (ছাব্বিশ) জন বাংলাদেশীকে লিবিয়ান মিলিশিয়া কর্তৃক গুলি করে হত্যা করার তথ্য পায়।

তাৎক্ষণিকভাবে দূতাবাস অনুসন্ধানে নামে। নিশ্চিত পারে যে লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনী বাংলাদেশীদের উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালালে প্রায় সবাই হতাহত হন। তবে একজন প্রাণে বেঁচে যান। তার সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের টেলিফোন যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়। তিনি বর্তমানে একজন হৃদয়বান লিবিয়ানের আশ্রয়ে আত্মগোপন করে আছেন। দূতাবাস ঢাকাকে জানায়, নিহত ২৬ বাংলাদেশির মৃতদেহ মিজদাহ হাসপাতালে সংরক্ষিত রয়েছে। অবশিষ্ট ১১ বাংলাদেশীরা হাতে-পায়ে, বুকে-পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বাংলাদেশ দূতাবাস হতে মিজদাহ হাসপাতালের পরিচালক টেলিফোনে এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানান যে, উক্ত মৃতদেহসমূহ বর্তমানে মিজদাহ হাসপাতালের মর্গে পরিবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের  মহাপরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং উক্ত মৃতদেহ সমূহের বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা  গ্রহণ করা হবে বলে জানান। দূতাবাস ঢাকাকে এটা নিশ্চিত করেছে যে, আহত ১১ বাংলাদেশীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ত্রিপলী মেডিকেল সেন্টারে (টিএমসি) প্রেরণের ব্যবস্থা এরইমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।

ত্রিপলী মেডিকেল সেন্টারে পৌছার পর দূতাবাস হতে আহতদের সাথে সাক্ষাৎ করে ঘটনার বিশদ বিবরণ গ্রহণ করাসহ নিহতদের পরিচয় উদঘাটনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়াও আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে দূতাবাস হতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর