× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মারা গেলে পৈতৃক কবরস্থানে জায়গা চান ডাক্তার শাহজাদ

বাংলারজমিন

রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২৯ মে ২০২০, শুক্রবার

মারা গেলে পৈতৃক কবরস্থানে একটু কবরের জায়গার জন্য আকুতি জানিয়ে আবেগঘন স্ট্যাটাস লেখা লিখেছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া ও আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডাক্তার শাহজাদ হোসেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন ব্যক্তির ওয়ালে ভাসছে। ডাক্তার শাহজাদ হোসেনের গ্রামের বাড়ি রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের সরখরনগর গ্রামের। তার বাবা সুরুজ মিয়া পুলিশের দারোগা ছিলেন বিধায় তাদের বাড়ি ‘দারোগা বাড়ি’ হিসেবেই বেশি পরিচিত।
ডাক্তার শাহজাদ হোসেন তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমি এই গ্রামের সন্তান। আমার বাবার নাম সুরুজ মিয়া। যাকে অনেকেই দারোগা সাহেব বলে জানেন। এই গ্রামে আমাদের পৈতৃক ভিটা।
বাড়ির সামনে দীঘির পাড়ে আমাদের পারিবারিক কবরস্থান। যেখানে আমার মা, চাচা, চাচী চিরনিদ্রায় শায়িত। আমার দায়িত্বের কারণে আমি যদি মৃত্যু বরণ করি আমার কোনো আফসোস নেই, আমি ধরে নেবো আল্লাহ আমার জন্য এটাই নির্ধারিত রেখেছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমার দাফন আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম সরকার নির্ধারিত কবরস্থানে করার কথা। কিন্তু আপনাদের কাছে আমার আবেদন, যদি এটা ঘটেই তবে গ্রামবাসী যেন আমার কবরটি আমার পারিবারিক গোরস্থানে করার অনুমতি দেন। আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই। দেশের জন্য আমার কর্তব্যের বিনিময়ে আমি আপনাদের কাছে এইটুকু চাই। আমার পরিবারে করোনা ছড়াবে না এরকম নিরাপদভাবে এই ব্যবস্থা করতে সক্ষম হবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আমি আপনাদের গর্বিত করতে পারি। সকলের মঙ্গল কামনা করি।’ তিনি তার ফেসবুক পোস্টে আরো লিখেছেন ‘আমার আত্মীয়রা ছাড়া কেউ আমাকে চিনবেন না। কারণ বাবার চাকরির জন্য জন্ম থেকেই আমি সিলেটের বাইরে ছিলাম। মাঝে বছর দশেক আমি মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে কাজ করেছি, এনেসথেসিয়া বিভাগের প্রধান হিসেবে। আমার নেতৃত্বে এই আইসিইউতে চিকিৎসক ও নার্স কোভিড রোগীদের নিবিড় চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। এই সময়কালে আমি সকল ভয়ভীতি ত্যাগ করে রোগীদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছি। আমি জানি যে কোনো সময় আক্রান্ত হতে পারি এবং বয়স ও শারীরিক কারণে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে পারি। তবু কখনোই আমি আমার কর্তব্যে বিন্দুমাত্র অবহেলা করিনি।’
জানা যায়, গত মার্চ মাসে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত করা হয়। সেখানেই এনেসথেসিয়া ও আইসিইউ বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন তিনি। এই আইসিইউতে চল্লিশজন চিকিৎসক ও পঁয়তাল্লিশজন নার্স কোভিড-১৯ রোগীদের নিবিড় চিকিৎসা দিয়ে আসছেন তিনি। ডাক্তার শাহজাদ হোসেনের বাড়ি মৌলভীবাজার-রাজনগর সড়কের লঙ্গুরপুল নামক স্থান থেকে উত্তরে ও মহলাল গ্রামের উত্তর-পশ্চিম দিকে। তার গ্রামের বাড়ির সামনের দীঘির পাড়ে রয়েছে পারিবারিক কবরস্থান। সেখানেই অন্তিম শায়নে শায়িত আছেন তার মা, চাচা, চাচী ও আত্মীয়-স্বজন। সেখানে মায়ের কবরের পাশেই যেন তার কবর হয় সেই আকাক্সক্ষার কথা ব্যক্ত করেছেন তার লেখায়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর