পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিসে বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। এতে পুড়ে যায় গান্ধীমহল রেস্টুরেন্ট, যার মালিক বাংলাদেশি রুহেল ইসলাম। তার মেয়ে হাফসা ইসলাম বলেন,, আমি প্রথমে বিষয়টি নিয়ে রাগান্বিত হয়ে পড়ি। কিন্তু পড়ে দেখলাম, বাবা ফোনে আরেকজনকে বলছেন, আমার রেস্টুরেন্ট পুড়তে দাও। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন রয়েছে।
শুক্রবার যখন বিক্ষোভ থেমে গেলো তখন বাংলাদেশি পরিবারটি বাইরে বেরিয়ে যান এবং বিক্ষুব্ধদের প্রতিই তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেন। রুহেল ইসলাম বলেন, আমরা চাইলেই আরেকটি রেস্টুরেন্ট খুলতে পারবো। কিন্তু আমরা চাইলেই একজন মানুষকে ফিরিয়ে আনতে পারবো না।
কয়েকদিন ধরে রুহেল ইসলামের পরিবার এই আন্দোলন দেখে যাচ্ছে। সোমবার একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসারের নির্যাতনে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। চার পুলিশ অফিসারের মধ্যে তিনজন ওই নিহত ব্যক্তিকে রাস্তায় মাথা চেপে ধরে থাকলে তার মৃত্যু হয়। ওই পুলিশ অফিসারদের বরখাস্ত করা হয়েছে। গত শুক্রবার একজনকে গ্রেপ্তার করে তৃতীয় মাত্রার হত্যাকা-ের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।
যেখানে এই ঘটনা ঘটে সেটি ওই রেস্টুরেন্ট থেকে কাছেই। সেখানে আরো বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট পুড়িয়ে দেয়া হয়। রুহেল ইসলামের স্ত্রী কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে রাস্তায় চেপে ধরার সময় গাড়িতে করে সব দেখছিলেন। তিনি বলেন, আমি জানি কেনো মানুষ এখন বিক্ষোভ করছে। তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।
২০০৮ সালে গান্ধীমহল রেস্টুরেন্ট খোলেন রুহেল ইসলাম। মানবতাবাদী নেতা মহাত্মা গান্ধীর নাম অনুসারে করে তিনি এ নামে রেস্টুরেন্ট খোলেন। তিনি বলেন, আমি এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পাশে আছি। তবে আমাদের তরুণরা বিক্ষুব্ধ। এর যথেষ্ট কারণও আছে।
পুলিশ যখন বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালাচ্ছিলো তখন রুহেল ইসলাম তার নিজের একটি রুম ছেড়ে দেন। সেখানে আহত বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কারো কারো দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। এক নারীর চোখে রাবার বুলেট লেগে দৃষ্টি হারিয়েছিলেন। আরেকজনের ঘাড় দিয়ে রাবার বুলেট বেড়িয়ে গেছে। তাদের সবাইকে চিকিৎসা দেন রুহেল ইসলামের পরিবার। তার স্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের কমিউনিটির মানুষদের সাহায্য করার চেষ্টা করছিলাম। আমাদের ব্যবসা ছিলো। কিন্তু মানুষের জন্য আমরা বেশি উদ্বিগ্ন ছিলাম। রুহেল ইসলাম বলেন, আমার কিশোর বয়সে আমি বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছি। আমি এ ধরণের পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত।