ফলাফল প্রকাশ হলে আনন্দের ঢেউ খেলে আঙ্গিনায়। নীল পাখিরা বাধ ভাঙ্গা উচ্ছাসে মেতে উঠে। বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে তারা আনন্দ উপভোগ করতো। কিন্তু এবার করোনার কারনে নেই সেই দৃশ্যপট। সব যেনো বদলে গেছে। নীল পাখিরা আসেনি প্রিয় ক্যাম্পাসে। শিক্ষকদের নেই ব্যস্ততা। মাইকে ঘোষনা নেই।
সব কিছু নিরব নিস্তব্ধ। সিলেটের ব্ল-বার্ড। এক নামেই পরিচিত সিলেটের এই বিদ্যাপিঠ। এসএসসিতে বরাবরই ভালো ফলাফল করে এই প্রতিষ্টানটি। এবারো তার ব্যতিক্রম হলো না। সেরাদের সেরা কৃতিত্ব ধরে রাখতে এই বিদ্যালয়টি। এসএসসি পরীক্ষায় শীর্ষ স্থান দখল করে রাখলো। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন- প্রতি বছর একবাই উচ্ছাসমুখোর হয় ক্যাম্পাস। কিন্তু এবার তা হলো না। শিক্ষার্থীরা আসেনি। তারা বলেন- ব্লুবার্ড কৃতিত্ব ধরে রাখতে সব সময়ই সচেষ্ট। এর কারন- শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও শিক্ষার্থীদের কঠোর মনিটরিং করেন। এবার শতভাগ পাস করা এই প্রতিষ্ঠানে জিপিএ-৫ পেয়েছে সর্বোচ্চ ২১৪ জন। ফলাফল বিশ্লেষনে দেখা যায়- ব্লু বার্ড হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২৭৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন সবাই। বোর্ডে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। ২৬৬ জন শিক্ষার্থী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০৭ জন। এই প্রতিষ্ঠানেরও শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৪৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ২৪৬ জন পাস করেছে। পাসের হার ৯৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৬ জন। সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের ৩৩৬ জন ছাত্রী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩২১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৯ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। হবিগঞ্জ সরকারী বিদ্যালয়ের ২৫৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায অংশ নিয়ে পাস করেছে ২৪৯ জন। পাসের হার ৯৮.০৩ শতাংশ আর জিপিএ ৫ পেয়েছে ১০৫ জন। ফলাফলের দিক দিয়ে শীর্ষ দশের তালিকায় থাকা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে- মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৩৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৩৫ জন পাস করেছে। পাসের হার ৯৯.১৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৪ জন। সিলেট ক্যাডেট কলেজ এবারও অক্ষুণ্ণ রেখেছে শতভাগ পাসের রেকর্ড। ৫৪ জন পরীক্ষার্থী এখান থেকে অংশ নিয়ে পাস ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৪ জনই। জালালাবাদ ক্যান্টনেমন্ট কলেজের ১১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সকলেই পাস করেছে। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫০ জন। শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ২৬৩ জন পরিক্ষার্থী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরমধ্যে পাস করে ২৫৮ জন। পাসের হার ৯৮.১০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯ জন। সিলেট বোর্ডের মধ্যে সিলেট জেলায় পাস করেছে ৮০ দশমিক ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা বোর্ডে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে মেয়েদের হার ৮০ দশমিক ৪২ শতাংশ ও ছেলেদের হার ৮১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। অপরদিকে মৌলভীবাজার জেলায় পাস করেছে ৮০ দশমিক ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৮২ দশমিক ৭৫ শতাংশ ছেলে ও ৭৯ দশমিক ৬১ শতাংশ মেয়ে। হবিগঞ্জ জেলায় পাস করেছে ৭২ দশমিক ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা সিলেট বোর্ডে সর্বনি¤œ। এদের মধ্যে ছেলে ৭২ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং মেয়ে ৭২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। সিলেট জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ১৮০ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছেলে ১ হাজার ৫৩ জন ও মেয়ে ১ হাজার ১২৭ জন। হবিগঞ্জের ৬০৫ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এদের মধ্যে ২৯০ জন ছেলে এবং ৩১৫ জন মেয়ে। মৌলভীবাজারে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০৬৫ জন। এর মধ্যে ৫২৭ জন ছেলে এবং ৫৩৮ জন মেয়ে। সুনামগঞ্জ জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন মাত্র ৪১৩ জন। এর মধ্যে ২১১ জন ছেলে এবং ২০২ জন মেয়ে।