× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঝিনাইদহে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের ওপর হামলা

দেশ বিদেশ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
২ জুন ২০২০, মঙ্গলবার

ঝিনাইদহের সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়ন চণ্ডীপুর গ্রামে সেই কিশোর নির্যাতনকারী সন্ত্রাসী মীর কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইউনুছ সরকারের পরিবারের উপর হামলা মারপিট বাড়িঘর ভাঙচুর লুটপাটের অভিযোগে ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা হয়েছে। গত শুক্রবার ২২শে মে দুপুরে সরকারপাড়া জামে মসজিদের ইমাম  ঈদের নামাজ পড়ার বিষয়ে বৈঠক ডাকলে ঈদগাহে এবং মসজিদে নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে চণ্ডীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মামলার আসামি মীর কামরুজ্জামান, জসিম মুন্সী, উজ্জ্বল মুন্সী, বাদশা মীর, হানিফ মীর, সাইফুল মুন্সী, কামাল মুন্সী, শামীম মীর ও আজিজুল সহ আরো অনেকেই। মীর কামরুজ্জামান এর নামে চাঁদাবাজি, শিশু নির্যাতন, ঘুষ-দুর্নীতি, মারপিট ইত্যাদি বিষয়ে একাধিক মামলা রয়েছে ঝিনাইদহ থানায়। চণ্ডীপুর এলাকা তার বাহিনীর কাছে জিম্মি এলাকার সাধারণ জনগণ। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে নির্যাতিতা পরিবারের কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। সরজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চণ্ডীপুর সরকারপাড়া জামে মসজিদের ভিতর ইমাম সাহেব ঈদের নামাজের বিষয়ে একটি বৈঠক ডাকেন। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস সরকারের ছেলে ইয়াসিন সরকার বাংলাদেশ সরকারের সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মসজিদের ভিতরে ঈদের নামাজ পড়ার প্রস্তাব রাখেন।
কিন্তু মীর কামরুজ্জামান সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে পার্শ্ববর্তী এলাকার ৪টি মসজিদ সংশ্লিষ্ট  লোকজন নিয়ে মাঠে বড় আকারে ঈদের নামাজ পড়তে চান। এ সময় ইয়াসিন সরকার কামরুল মীরের  ইচ্ছার বিরুদ্ধে কথা বলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটে এসে তাকে চরম মারপিট করে। তার ডাক চিৎকারে শুনে  ঠেকাতে গেলে ইউনুস সরকার, সবুজ সরকার, মাজহারুল সরকার মন্টাসহ কয়েকজন এ সময় আহত হন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বারেক সরকার, করিম সরকার, আলী হোসেন, জয়নাল সরকার, সাদ্দাম সরকার, হাসেম সরকার, মিজান সরকার, আবুল কাশেম সরকারও মোসলেম সরকার জানান, ঘটনার আধাঘণ্টা পরে মীর কামরুজ্জামান ও তার সঙ্গীয় ৫০/৬০ জনের অধিক সন্ত্রাসী ও লাঠিয়াল বাহিনীসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গান্না ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ সরকার এবং বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সাবেক  জেলা জজ ও সচিব ডিএম সরকার এর বড় ভাই হাফিজ উদ্দিন সরকারের বাড়িতে হামলা চালায়।
 হাফিজ উদ্দিন সরকারের নাতি সবুজ সরকার ও মাজহারুল সরকারকে বাড়িতে না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ও সবুজের বউ ও ভাবীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে। পরে সেখান থেকে গিয়ে মীর কামরুজ্জামান ও তার সন্ত্রাসী লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস সরকারের বাড়িতে হামলা চালায়।  সেখানে ইয়াসিন সরকারকে না পেয়ে তার ঘরের দরজা ভেঙে ফার্নিচার ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে। লাঠিয়াল বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস সরকারের পুত্রবধূ মেঘলাকে ধাক্কা মেরে  ফেলে দেয় এবং তার গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইনসহ ঘরে থাকা   লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসী মীর কামরুজ্জামানের বাহিনী দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত তাহের মাস্টার, চান মিয়া, মইনুল, মান্নান, আমীর হোসেনসহ অনেকেই জানিয়েছেন, মীর কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এলাকায় চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। আমাদের মতো এলাকার অনেককেই বাধ্যতামূলক চাঁদা দিতে হয়েছে। আবার অনেকের চাঁদার টাকা না পেয়ে তাকে হাতুড়িপেটা করে হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। গরু ব্যবসায়ী ইউসুফ, মবিন, কামরুল, সাদ্দাম ও আমীর হোসেনসহ অনেকেই জানান, মীর কামরুজ্জামানের বাহিনীকে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা চাঁদা দিয়ে আমাদের ব্যবসা করতে হয়। বিভিন্ন সময় পত্র-পত্রিকায় এই বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আইন অমান্য করে এরপরও সে তার বাহিনী নিয়ে এলাকায় চরম দাপটের সঙ্গে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মামলা রেকর্ড হয়েছে। ব্যাতাই ক্যাম্প ইনচার্জকে দায়িত্ব ও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ব্যাতাই ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই হাবিবুল আলম জানান, বর্তমানে আসামিরা পলাতক রয়েছে, খোঁজ পাওয়া মাত্রই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে। আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর