আজিজুল ইসলাম। মিরপুরের বাসিন্দা। নিয়মিত সপ্তাহে দুই বার ডায়ালাইসিস করান এভারকেয়ার (সাবেক এ্যাপোলো) হাসপাতালে। এর ধারাবাহিকতায় গত ৩১শে মে ডায়ালাইসিস করতে ওই হাসপাতালে যান তিনি। ওই দিন রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা টেস্ট করানোর জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন। যদিও এর আগে একবার টেস্ট করিয়ে ফলাফল নেগেটিভ এসেছিলো। পরের দিন বিকাল তিনটায় টেস্টের রেজাল্ট দেয়ার কথা থাকলেও রাত সাড়ে দশটার দিকে জানানো হয় তার করোনা পজেটিভ। ফলাফল জানার পর থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদাসীন আচরণ করতে শুরু করেন রোগীর স্বজনদের সঙ্গে।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, রোগীকে বাসায় বা অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন সংশ্লিষ্টরা। চিকিৎসাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এই নিয়ে রোগীর স্বজনদের সাথে হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায় রাত দুইটার দিকে রোগীকে হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হন স্বজনরা। শুধু তাই নয় দুই দিনে বিভিন্ন টেস্ট করিয়ে রোগীর স্বজনদের কাছে বিল করা হয় ৮২ হাজার টাকা। যা অস্বাভাবিক বলে দাবি করছেন আজিজুল ইসলামের ছোট মেয়ে। তিনি বলেন, সাড়ে দশটায় যখন হাসপাতাল থেকে বলা হলো বাবাকে এখানে তারা চিকিৎসা দিতে পারবে না। তখন ভেবে পাচ্ছিলাম না কি করবো। তাদেরকে অনুরোধ করলাম তারা যেনো বাবাকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করায়। প্রথমে রাজি হয়ে আমার কাছ থেকে বন্ড সইও নেয়, কিন্তু তারা পরে বলে এখানে করোনা রোগীকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব না। যদিও তার এক বার বলে করোনা ইউনিটে একটি সিট খালি আছে। পরে আবার বলে খালি নেই। এসব করতে করতে রাত দুইটা বেজে যায়। এই ফাঁকে বিভিন্ন হাসপাতাল খোঁজার চেষ্টা করছিলাম যেখানে বাবাবে ভর্তি করানো সম্ভব হবে। কিন্তু হাসপাতাল খোঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে মুগদা হাসপাতালের খবর পেলাম। পরে হাসপাতাল থেকে তিন হাজার টাকা দিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দেয়। পরে মুগদা এসে ভর্তি হই। এখানেও নানান ঝামেলা। বাবাকে আইসিইওর দরকার হলেও আইসিইও পাচ্ছি না। বাবার কন্ডিশন ভালো না।
এদিকে কিডনি সমস্যায় ভোগা আজিজুল ইসলাম গত বেশ কয়েক বছর ধরে এভারকেয়ারে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের সিনিয়র কনসাটেল্ট ডা. ফাহমিদা বেগমের তত্ববধায়নে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেলেন।
এই বিষয়ে এভার কেয়ার হাসপাতালের কমিউনিকেন্স অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট কর্মকর্তা জামিল এই মানবজমিনকে বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। অভিযোগের ব্যাপারে এভারকেয়ার হাসপাতালের ডিউটি অফিসার ডা. আরিফ মাহমুদ বলেন, যদি অভিযোগ সত্য হয় তাহলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিবো।