চট্টগ্রামে করোনায় মৃত ৩
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে:  চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মুহিদ হাসান করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গতকাল সকাল ১১টায় হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।  বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ঈদের পরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন ডা. মুহিদ হাসান। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এছাড়া চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত দুই নারী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে একজন নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার হাফসা বেগম (৫০)। অপরজন নগরীর জামালখান এলাকার সেলিনা আফরোজ (৫৬)। জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব বলেন, সেলিনা আফরোজ গত ২৯শে মে হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন তিনি। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তার মৃত্যু ঘটে।



গাজীপুরে ১
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে: গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করানো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সমাজসেবক ছহিম উদ্দিন মারা গেছেন। তিনি নগরের কোনাবাড়ী কলেজ ও আকম মোজাম্মেল হক স্কুলের গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। হাসপাতালের পরিচালক ডা. খলিলুর রহমান জানান, করোনা তিনি গত ২৮শে মে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। পরে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছিলেন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই তার অবস্থার অবনতি হয়। গত বুধবার রাতে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার পরিবারের লোকজন তাকে নিয়ে আসেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত ব্যক্তির দাফনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এদিকে, জেলা সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত বুধবার পর্যন্ত এই জেলায়  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৪শ’ জন এবং মারা গেছে ৯ জন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে গতকাল দুপুর পর্যন্ত পরবর্তী আপডেট জানানো হয়নি।



রাজশাহীতে ১
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান। রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মারা যাওয়া বৃদ্ধের নাম আজিজার রহমান (৭৫)। গত ২রা জুন তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। উপসর্গ থাকায় তাকে করোনা ইউনিটে রাখা হয়। বুধবার গভীর রাতে তিনি মারা গেছেন। তার স্থায়ী ঠিকানা নওগাঁর নিয়ামতপুর। তার লাশ দাফনের দায়িত্ব কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে দেয়া হয়েছে।



মানিকগঞ্জে ১
স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ থেকে: মানিকগঞ্জের সিংগাইর পৌর এলাকার আজিমপুর গ্রামের ইউনুছ দেওয়ান (৬১) নামের এক ব্যক্তি করোনা পজিটিভ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল ভোর ৪টার দিকে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সেকেন্দার আলী মোল্লাহ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এনিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ জনে। এছাড়া জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৯ জন। মৃত ইউনুছ দেওয়ান উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন। এক বছর আগে তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন।  সকালে পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন। জ্বর ও কাশি হওয়ায় গত ২২শে মে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর পরীক্ষার জন্য তা ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউশনে পাঠানো হয়। দুইদিন পর (২৪শে মে) পরীক্ষার ফলাফলে তার করোনা পজিটিভ আসে। এরপর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে ছিলেন। এরপর গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।



লালমনিরহাটে ১
লালমনিরহাট প্রতিনিধি: জ্বর, সর্দি, কাশি ও পাতলা পায়খানা করোনা উপসর্গ নিয়ে লালমনিরহাট হাতিবান্ধা সিন্দুরনা গ্রামে নামের সাবেদার হোসেন নামের এক ব্যক্তি মারা গেছে। মৃত ব্যক্তি ঢাকা থেকে গত সপ্তাহে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় আসে। সে দক্ষিণ সিন্দুরনা গ্রামের তফসির উদ্দিনের পুত্র বলে জানা গেছে। কয়েকদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর গতকাল মারা যায়। করোনা সন্দেহে ৫৫ বছরের বৃদ্ধ সাবেদার ডাক্তারের পরামর্শে বাড়িেেত চিকিৎসা নেয়। মৃত্যুতে এলাকায় করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হাতিবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রংপুরে প্রেরণ করে। হাতিবান্ধা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রংপুর পিসিআরের পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রেরণ করা হয়েছে। ফলাফল আসলে বোঝা যাবে।



ফেনীতে করোনায় মৃত্যু ১
ফেনী প্রতিনিধি: ফেনীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুনিল সাহা (৬০) নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার রাতে শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের হোটেল বেস্ট ইন সংলগ্ন আফরোজা ভবনের বাসায় তার মৃত্যু হয়। তিনি শহরের এফ রহমান এসি মার্কেটের ‘শাড়ীজ’ এর স্বত্ত্বাধিকারী। তার বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর থানার উসুলতলা গ্রামে। সুনিল সাহার ছেলে অপু সাহা জানান, দীর্ঘদিন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে বাসায় অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বাবা সুনিল সাহা। সমপ্রতি তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার বাসা থেকে রাজধানীর ইউনিভার্সেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থর উন্নতি না হওয়ায় পরদিন শনিবার তাকে অ্যাপলো হাসপাতালে নেয়া হলে সকাল ১১টার দিকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে ওইদিনই তাকে ফেনীর বাসায় নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। পরদিন রোববার রাতে ঢাকা থেকে জানানো হয় বাবা সুনিল সাহার শরীরে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এরপর চিকিৎসকদের তত্বাবধানে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সুনিল। বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ তার মৃত্যু হয়। সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সরফুদ্দিন আহমেদ জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ফেনীতে ইতিমধ্যে চারজন মারা গেছে। এদের মধ্যে ২ জন ফেনী সদর ও ২ জন সোনাগাজী উপজেলার বাসিন্দা। মৃত্যু ব্যক্তিদের মধ্যে একজন নারী ও তিনজন পুরুষ। এদিকে ফেনীতে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে এক বৃদ্ধের (৭৮) মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিকেলে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, ফেনী সদর উপজেলার কাজীরবাগ ইউনিয়নের ওই বৃদ্ধ জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতে হাসপাতালে আসে।