চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে দ্বিতীয় বিয়ে করে প্রথম স্ত্রীকে নির্যাতনের দায়ে এক প্রবাসী স্বামীকে আটক করে কোর্ট জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ। নির্যাতনের শিকার ও চিকিৎসাধীন প্রথম স্ত্রী তার ৩ সন্তানের ভবিষ্যৎ ও বেঁচে থাকার যুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউপি’র খেড়িহর গ্রামের বাবুপুর ভূঁইয়া বাড়ির মো. শাহ আলম প্রায় ২০ বছর পূর্বে একই এলাকার পরান বেগমকে বিয়ে করেন। শাহ আলম জীবিকার প্রয়োজনে বিদেশে পাড়ি জমান। তারপর বছরে একবার দুই মাসের ছুটিতে তিনি দেশে আসতেন। ওই ধারাবাহিকতায় গত ৫ বছর পূর্বে চট্টগ্রামে তার সৎ মায়ের নিকট বেড়াতে গিয়ে জান্নাত বেগম নামের একজনের প্রেমে পড়েন। ওই প্রেম দীর্ঘদিন গড়িয়ে কোনো এক সময় তিনি চুপিচুপি জান্নাতকে বিয়ে করেন, আবার চলে যান বিদেশে। গত ৩ বৎসর পূর্বে শাহ আলম দেশে ফিরেই দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাতকে ঘরে তুলতে মরিয়া হয়ে উঠেন এবং এক পর্যায়ে তুলে ফেলেন। প্রথম স্ত্রী পরান তার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাতের উপস্থিতি মানতে না পেরে সামাজিকভাবে বিষয়টা নিয়ে চরম আপত্তি তোলেন।
এক পর্যায়ে স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করে দুই স্ত্রীকে ঘরে থাকার বন্দোবস্ত করে দেন। ওই হিসেবে শাহ আলম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে পাকা দালানের দ্বিতীয় তলায় বসবাসের সুযোগ পায়। গত মঙ্গলবার শাহ আলমের প্রথম স্ত্রীর এক সন্তান পিতার নিকট খাবারের জন্য গেলে সে চটে গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে পরানকে প্রচণ্ড প্রহার করে নির্যাতন চালায়। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা উদ্ধার করে শাহরাস্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বিষয়টি স্থানীয় গণ্ডি ছাড়িয়ে চাঁদপুর-৫ আসনের সাংসদ মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম, বীর উত্তম-এর নিকট পৌঁছায়। পরে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বিষয়টি দেখাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পরান বেগমের সুবিচারের পথ প্রশস্ত হয়। এর পরই স্বামী শাহ আলম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত বেগমের বিরুদ্ধে শাহরাস্তি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন পরান। অভিযুক্ত প্রধান আসামি শাহ আলমকে পুলিশ আটক করে কোর্ট জেলে পাঠিয়েছে।