× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিশেষজ্ঞ মত /আক্রান্তের প্রকৃত চিত্র জানতে সব মানুষকে পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে

শেষের পাতা

মরিয়ম চম্পা
৭ জুন ২০২০, রবিবার

দেশে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা নিয়ে নানা হিসাব আসছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে তথ্য প্রকাশ করে তা পরীক্ষার ভিত্তিতে। পরীক্ষার বাইরে যারা আছেন তাদের কোনো হিসাব নেই। মহামারি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ফর্মুলায় পরীক্ষায় আসা আক্রান্তের সংখ্যার চেয়ে ১০ থেকে ৪০ গুণ বেশি হতে পারে আক্রান্তের সংখ্যা। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ইকোনমিস্ট এমন তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে জানিয়েছে, শুধু ঢাকাতেই সাড়ে সাত লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হতে পারে। অবশ্য রোগতত্ত্ববিদরাও এই সংখ্যার বিষয়ে দ্বিমত করছেন না। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও করোনা জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য ডা. মো. মুশতাক হোসেন বলেন, শনাক্ত বিবেচনায় আক্রান্ত ১০ গুণ  থেকে সর্বোচ্চ ৪০ গুণ হতে পারে। ১০ গুণ হলে রাজধানীতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার।
এবং ৪০ গুণ হলে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৭৩ হাজার। দ্য ইকোনমিস্ট হয়তো ইনফ্লুয়েঞ্জার ফর্মুলার হিসাবে ৪০ গুণ ধরেছে। এক্ষেত্রে হাইয়েস্ট এবং লোয়েস্টের মাঝামাঝি হতে পারে। আমার ক্যালকুলেশনে হয়তো সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন এর মাঝামাঝি ধরে নেয়াটাই এপিডেমিলোজিক্যালি গ্রহণযোগ্য হতে পারে। এখানে ল্যাবরেটরি কনফার্ম রোগীর সংখ্যা গত ৪ঠা জুন পর্যন্ত ১৯ হাজার ৩২৭।
এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর মোজাহেরুল হক বলেন, ঢাকা শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা সঠিক সংখ্যা নয়। আরো অনেক বেশি সংক্রমিত লোক ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিচরণ করছে। আইইডিসিআর হতে  প্রাপ্ত তথ্য মতে এখন পর্যন্ত রাজধানী ঢাকায় ১৯ হাজার ৩২৩ জন রোগীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। এটা সঠিক সংখ্যা নয়। প্রফেসর হক বলেন, আমাদের  প্রেডিকশনটা ঠিক হবে না। যে কোনো প্রেডিকশন তার কারণটা হলো আমরা মাত্র যাদেরকে  টেস্ট করছি তাদের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যাটা জানি। সেটা ঢাকা শহরে কতো আমাদের জানা আছে। প্রতিদিনই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আপডেটে আমরা জানতে পাই। এই সংখ্যাটা সংক্রমণের সঠিক সংখ্যা নয়। এটা আমাদের ধরে নিতে হবে প্রথমেই। তাহলে সংক্রমণের সঠিক সংখ্যা কী? আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্ট যে প্রেডিক্ট করেছে এটার ভিত্তিটা কী? আমার কথা হলো যে সংখ্যাটা আমরা  প্রতিদিন জানছি এই সংখ্যার  চেয়ে অনেক বেশি সংক্রমিত  লোক এই টেস্টের আওতার বাইরে আছে। যাদেরকে টেস্ট করলে এই সংখ্যাটা অনেক বেশি হতো। আজকে আমরা জানি যে, বাংলাদেশ সংক্রমণের হারের দিক দিয়ে শীর্ষ ২০তম স্থানে রয়েছে বিশ্বের মধ্যে। এটা শুধুমাত্র টেস্টের আওতায় যারা এসেছে তাদের সংক্রমিত সংখ্যা দিয়েই। সঠিক সংখ্যাটা এখন আমাদের জানতে হলে যেটা করতে হবে এটাকে আমরা বলি সার্ভেলেন্স (নজরদারি)। এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের যে ডট বট অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি টেস্ট আছে ঢাকা শহরের সমস্ত লোককে আমরা যদি এই কুইক টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করে ফেলতে পারি তাহলে প্রকৃত সংখ্যা জানার সুযোগ হবে আমাদের। এই টেস্টের মাধ্যমে যদি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঢাকা শহরের লোকদের মধ্যে পজিটিভ এবং নেগেটিভ সংখ্যাটা বের করে ফেলতে পারি তাহলে সেটাই আমাদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য সংখ্যা হবে সংক্রমিতের। এছাড়া বর্তমানে যেভাবে পরীক্ষা চলছে। টেস্ট কিটের আমাদের লিমিটেশন আছে। ল্যাবরেটরির লিমিটেশন আছে। জনবলের লিমিটেশন আছে। সুতরাং এই পিসিআর টেস্টে আমরা ঢাকা শহরের যে দুই কোটি লোক আছে তাদেরকে পরীক্ষা করতে পারবো না। অথচ গণস্বাস্থ্যের  যে কিট আছে বা এই ধরনের যে অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি  টেস্ট আছে সেটা অত্যন্ত সহজ। এবং খুব তাড়াতাড়ি নির্ণয় করা সম্ভব। দক্ষ টেকনোলজিস্টেরও প্রয়োজন নেই। এমনকি ভলান্টিয়ারদের একটু দেখিয়ে দিলেই তারাও এই পরীক্ষা করতে পারবে। এটা আমরা যদি  প্রতিটা ওয়ার্ডে করে ফেলি এবং সেটা হবে একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর