× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চট্টগ্রামের রেড জোন উত্তর কাট্টলী দিয়ে শুরু লকডাউন

দেশ বিদেশ

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে
১৬ জুন ২০২০, মঙ্গলবার

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১০টি ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। তন্মধ্যে ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী দিয়ে লকডাউন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে এ ওয়ার্ডে লকডাউন শুরু হবে। থাকবে পরবর্তী ২১ দিন পর্যন্ত।  সোমবার সকালে এমন তথ্যই জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শহরে করোনা প্রতিরোধে গঠিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সিটি মেয়র আ. জ. ম নাছির উদ্দীন। তিনি জানান, লকডাউন এলাকায় কেউ প্রবেশ ও বের হতে পারবে না। সরকারি-বেসরকারি অফিস থাকবে সাধারণ ছুটির আওতায়। খাবার ও ওষুধসহ সবধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। প্রত্যেককে ঘরে থাকতে হবে।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষের টেলিফোন নম্বরে কল করলে চাহিদা মোতাবেক ন্যায্যমূল্যের খাদ্য, ওষুধপত্রসহ নিত্যপণ্য পৌঁছে দেয়া হবে। চলবে না গণপরিবহন, থাকবে না স্টপেজ। তিনি বলেন, উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কিছু অংশ। তবে এ মহাসড়ক লকডাউনের অন্তর্ভুক্ত থাকবে না। মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। শুধু লকডাউন এলাকায় থামতে পারবে না। যাত্রী ওঠানামা করানো যাবে না। দূরপাল্লার পরিবহন স্টেশন লকডাউন এলাকা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে। এছাড়া উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে প্রায় ১৫০টি কলকারখানা আছে। সিটি গেট, কৈবল্যধাম মন্দির এবং জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামও এই ওয়ার্ডে অবস্থিত। কৈবল্যধাম রেলস্টেশন ও ক্রিকেট স্টেডিয়াম রেলওয়ে স্টেশন নামে দুটি রেলস্টেশন আছে ওয়ার্ডটিতে। সবকিছুই থাকবে নিয়ন্ত্রণে। উত্তর কাট্টলী ছাড়া নগরীর আরো ৯টি ওয়ার্ডকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ১৪ নং লালখান বাজার, ১৬ নং চকবাজার, ২০ নং দেওয়ান বাজার, ২১ নং জামালখান, ২২ নং এনায়েত বাজার, ২৬ নং উত্তর হালিশহর, ৩৭ নং উত্তর মধ্যম হালিশহর, ৩৮ নং দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ও ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর। যেগুলোতে পর্যায়ক্রমে লকডাউন কার্যকর করা হবে। এদিকে জাতীয় গাইডলাইন অনুসারে চট্টগ্রামে প্রতিলাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সর্বশেষ ১৪ দিনে ৬০ জন সংক্রমিত হওয়া এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরমধ্যে নগরীর চকবাজার ওয়ার্ডে সর্বশেষ ১৪ দিনে সর্বোচ্চ ১৬১ জন, কাট্টলী ওয়ার্ডে ১৪৫ জন এবং উত্তর হালিশহরে সংক্রমিত হন ১০৫ জন। সে হিসেবে চট্টগ্রামে ঘোষিত রেডজোনে আক্রান্তের হারে প্রথম চকবাজার ওয়ার্ড। এরপরও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে প্রথম লকডাউন কার্যকর বিষয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কমিটির সদস্য সচিব কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, পর্যায়ক্রমে সবখানে লকডাউন কার্যকর করব। শুরুতে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডকে বেছে নিয়েছি। লকডাউন থাকা অবস্থায় যেহেতু কেউ ঢুকতে এবং বের হতে পারবে না সেহেতু চকবাজার ওয়ার্ডে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এবং বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছু রয়েছে। তাই সেখানে কিভাবে লকডাউন কার্যকর করব সেটা নিয়ে আরো আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আমরা রেডজোনের তালিকা সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করেছি। করোনা প্রতিরোধে গঠিত কমিটির সভাপতি মেয়র মহোদয় সিদ্ধান্ত দেবেন কোন এলাকায় প্রথম কার্যকর করবেন। তবে এমন না যে, বেশি সংক্রমিত ওয়ার্ডে প্রথমেই কার্যকর করতে হবে। তিনি বলেন, নগরীতে চিহ্নিত রেডজোন এলাকায় লকডাউন কার্যকর করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির গাইডলাইনে বেশ কিছু নির্দেশনা আছে। নির্দেশনা অনুযায়ী সেখানে জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ। সেখানে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে। লকডাউন এলাকার করোনা রোগীদের নির্ধারিত আইসোলেশন সেন্টারে রাখা হবে। নমুনা সংগ্রহে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বুথ স্থাপন করবে স্বাস্থ্য বিভাগ। লকডাউন এলাকার লোকজনের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করা হবে। কেউ মারা গেলে মৃতদেহের সৎকার বা দাফন কাজে নিয়োজিত সরকারি-বেসরকারি বা স্বেচ্ছাসেবীরা করবে।
এছাড়া মুদিবাজার, ওষুধ, নিত্যপণ্যের বাজার, দোকান বন্ধ থাকবে। তবে জোন কমিটি তা হোম ডেলিভারি দেবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানও হোম ডেলিভারি দেবে। রেডজোন এলাকায় গণপরিবহন চলবে না। এমনকি কোনো স্টপেজ থাকবে না। তবে শুধুমাত্র রাতে মালবাহী যান চলতে পারবে। লকডাউন এলাকায় কোনো বস্তি থাকলে তাদের জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই এলাকায় আকস্মিক কোনো লোক কর্মহীন হলে তাকেও খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। তবে কোনো ব্যক্তি ওএমএস, মানবিক সহায়তা বা অন্য কোনো সামাজিক সহায়তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত থাকলে তিনি ত্রাণ সহায়তা থেকে বাদ যাবেন।
এছাড়া গাইডলাইনে রেডজোন এলাকায় আরেকটি জোন বা সপট কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া আছে। এতে আহ্বায়ক থাকবেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন প্রতিনিধি, স্থানীয় সাংসদ কর্তৃক মনোনীত রাজনৈতিক নেতা, ই-কমার্স এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, সমাজ কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম সদস্য থাকবেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর