করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২ দিনে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা ৪ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে শনিবার সকালে আব্দুল আজিজ (৫৬) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে। তিনি সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা গ্রামের মৃত আলেক সরদারের ছেলে। এর আগে গত ২দিনে মারা যায় আরো ৩ জন। যার মধ্যে গত শুক্রবার বিকেলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে শার্শা উপজেলার আরশাফ আলীর ছেলে জিয়াউর রহমান (৩৭) মারা যান। আর বৃহস্পতিবার মারা যান যশোর সদর উপজেলার ঝুমঝুমপুর এলাকার মৃত কিসমত আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম (৫৭) ও নওদাগ্রামের কায়েশ বিশ্বাসের ছেলে সাধু বিশ্বাস (৩১)। বর্তমানে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৭ রোগী ভর্তি রয়েছেন।
আর যশোর টিবি হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি আছে ১৫ করোনা রোগী। এছাড়া নিজ নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরো ১৩৭ জন করোনা পজিটিভ রোগী। সব মিলে যশোরে করোনা সংক্রমের হার দিন দিন বাড়ছে। চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও নিহত আব্দুল আজিজের ছেলে শামিম কবির ওয়াসিম অভিযোগ করে জানান, তার পিতা করোনা উপসর্গ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। কিন্তু গত ২ দিনে তার বাবাকে কোন চিকিৎসক বা নার্স এ্যাটেন্ট করেননি। রুমে বসে তারা ঠাণ্ডা জ্বরের ওষুধ লিখে আমাদের হাতে ছো্ট্ট একটি কগজের টুকরো ধরিয়ে দেন। সেই মোতাবেক আমরাই তাকে ওষুধ সেবন করিয়েছি। কোন নার্স বা ডাক্তর রোগীর ধারে কাছেও যাননি। এমতাবস্থায় হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডেই তার বাবা শনিবার সকালে মারা যান। মারা যাওয়ার পর তার বাবার করোনা টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন তার মৃত্যুর কারন এখনো স্পষ্ট নয়। তবে তাকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করার জন্য পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া আব্দুল আজিজ নামে এক রোগীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। শনিবার সকালে ওই রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল আসলে নিশ্চিত হওয়া যাবে তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা। চিকিৎসাসেবায় অবহেলার বিষয়ে তাকে কেউ অভিযোগ করেননি বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে ৩৫ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের নমুনা পাওয়া গেছে। করোনা রোগীর নমুনা পরীক্ষার পর যশোরে আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড এটি। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩২১ জন। এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৪ জন। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরো ১২ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১২০ জন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. শিরিন নিগার জানান, ২০শে জুন ফলাফলে যশোরের ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৫ জনের, নড়াইলের ৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫ জনের, মাগুরার ২২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬ জনের ও ঝিনাইদহের ২৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ জনের শরীরে কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে। আর সাতক্ষীরার ২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সবগুলোর ফলাফল নেগেটিভ এসেছে।