ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়নের ছবুল্যা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামে পদ্মার তীব্র ভাঙনে স্কুল ও বাড়িঘরসহ কয়েক একর ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। সরজমিনে শনিবার দুপুরে ভাঙনকবলিত পদ্মা পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা পাড়ের ওই গ্রামে মাথায় বড় একটি ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো ভেঙে পড়ে স্কুলসহ অর্ধশত বাড়িঘর পদ্মাতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এলাকাবাসী জানায়, এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় এই গ্রামের বাড়িঘর, গাছপালা, ফসলি জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। তাদের অভিযোগ, ভাঙন রোধে এখনো স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওই ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার মো. ছালাম ফকির জানান, গত দুই সপ্তাহ আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসে ভাঙন পরিদর্শন করে গেলেও এখনো তারা ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তিনি বলেন, আমি ভাঙনের ব্যাপারে জানাতে ইউএনও স্যারকে ফোনে চেষ্টা করে পাইনি।
পরে আমি পিআইও স্যারকে ভাঙনের বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি আরো জানান, ভাঙনকবলিত গ্রামে গত বছর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গ্রামের শেষ পদ্মা পর্যন্ত ভাঙন প্রতিরোধে ছয় হাজার বালির বস্তা বরাদ্দ থাকলেও ২৭শ’ বস্তা ফেলে বাকি বস্তাগুলো তারা অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। গত বছর যদি এখানে সব বস্তা ফেলা হতো তাহলে, এ বছর এখানে পদ্মায় এতোটা ভাঙতো না বলে তিনি জানান। এভাবে ভাঙতে থাকলে খুব দ্রুত স্কুলসহ অন্য বাড়িঘরগুলো পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে। তিনি এ সময় ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা মানিক জানান, গত রাতে আমার বসতভিটে পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমি পরিবার নিয়ে রাস্তার ওপর ঘর বানিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। ছবুল্যা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, আমরা রাতে ঘুমাতে পারি না। পদ্মার ভাঙনে আমরা দিশাহারা হয়ে পড়েছি। কখন যেন আমাদের পুরো গ্রামটাই পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা যায়নি। ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানলাম। এ বিষয়ে আজই আমি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে আলোচনা করবো।