× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কোন ফার্মেসির শার্ট এটি?

মত-মতান্তর

শামীমুল হক
১ জুলাই ২০২০, বুধবার
প্রতীকী ছবি

কথা হচ্ছিল দুই বন্ধুর মধ্যে। একজন বললেন, তোর শার্টটা তো খুবই সুন্দর। কোন ফার্মেসি থেকে আনছস? অপর বন্ধুর উত্তর- ওমা একি বলে। ফার্মেসিতে আবার শার্ট বিক্রি হয় নাকি? এবার বন্ধুটি বললেন, ফার্মেসিতো দোকানই। আসলেই তো ফার্মেসিও দোকান। যেখানে অন্য মালামাল বিক্রি হয় সেটাও দোকান। দেশে আরও কত ধরনের দোকান আছ। রাজনীতির ময়দানেতো গোটা দেশটাই একটি দোকান।
আবার দূর্নীতিবাজদের কাছে পৃথীবিটাই হলো দোকান। যেখানে শুধু লেনা দেনার বিষয়। ভয়াল করোনাকালেও দুর্নীতির দোকানিরা সদাই কিনতে ব্যস্ত। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ডাক্তারের খাবার থাকার বিলই বলে দেয় তাদের সদাইয়ের চিত্র। যা নিয়ে গোটা দেশে এখন আলোচনা। সংসদে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত এ নিয়ে কথা বলেছেন। বিষয়টা কি? ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের থাকা খাওয়ার বিল নাকি একমাসে ২০ কোটি টাকা। গতকাল সংসদে এ নিয়ে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির এমপিরা কথা বলেছেন। সুনামগঞ্জের এমপি পীর ফজলুর রহমান স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে সরিয়ে দেয়ার দাবি তুলেছেন। যদিও সংসদে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেছেন, ডাক্তারদের থাকা-খাওয়ায় কোনো দুর্নীতি হয়নি। তিনি বলেছেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের থাকা-খওয়ার বিষয় নিয়ে যে কথা হয়েছে, সেটা আমি খোঁজ নিয়েছি। ৫০টি হোটেল ভাড়া হয়েছে। সেখানে তিন হাজার ৭০০ মানুষ একমাস থেকেছে। প্রত্যোকটি রুমের ভাড়া এক হাজার একশ টাকা। খাওয়ার খরচ যেটা বলা হয়েছে, তা টোলালি রং। সেখানে দিনের তিনটি মিলের জন্য খরচ হয়েছে ৫০০ টাকা। একই সঙ্গে মন্ত্রী দেশে করোনা চিকিৎসার বর্ণনা দেন। বলেন, আমরা কাজ করছি বলে দেশে মৃত্যুর হার কম। ওদিকে গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা প্রায় ৩০টি হোটেলে চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, টেকনিশিয়ান, আনসার সদস্য, সিকিউরিটি গার্ডদের রেখেছি এবং সেখানে তারা তিন সপ্তাহের মতো অবস্থান করেছেন। এ পর্যন্ত সবমিলিয়ে তিন হাজার ৬৮৮ জনকে হোটেলে রাখতে হয়েছে। আমরা হিসেব করে দেখেছি, এতে করে আমাদের প্রায় ১১ কোটি টাকার বেশি বিল ইতোমধ্যে চলে এসেছে। তাই আমরা পরবর্তী সময়কে হিসেবে ধরেই ২০ কোটি টাকার মতো বাজেট চেয়েছিলাম। তিনি বলেন, খরচের পর অতিরিক্ত টাকা তো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত যাবে।
মন্ত্রীর কথার সূত্র ধরে বলা যায় এখনো কিন্তু মানুষ হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে বেড়াচ্ছে রুগী নিয়ে। ভর্তি হতে না পেরে রাস্তায়, অ্যাম্বুলেন্সে মারা যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট করতে গিয়ে লাইভে রিপোর্টারের কান্না ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। দূর্নীতি হচ্ছে রুগী ভর্তিতেও। হাসপাতালগুলো যেন দোকান খুলে বসেছে। পছন্দমতো ক্রেতা পেলেই তারা পণ্য বিক্রি করবেন। একদিকে দুর্নীতি অন্যদিকে রাস্তায়, অ্যাম্বুলেন্সে চিকিৎসার অভাবে রুগীর মৃত্যু এসব কিসের লক্ষণ। গোটা পৃথীবি এসব জানছে। দেখছে। ওরা যেন দেশের সম্মানহানী করার লাইসেন্স নিয়ে বসে আছে। স্বাধীনতার অর্ধ শতকে এসেও আমরা সামনে এগুতে পারছিনা। পেছনে দৌঁড়াচ্ছি। আসলে আমাদের এগুতে দেয়া হচ্ছেনা। মনে পড়ছে বিশ্ব বিড়াল দৌড় প্রতিযোগিতার গল্পটি। এ প্রতিযোগিতা হচ্ছে ওয়াশিংটনে। সেখানে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, রাশিয়া, চীন, জাপান, জার্মান সহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশ অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশও আছে তালিকায় । নির্দিষ্ট দিনে মাঠে উপস্থিত সকল দেশের বিড়াল। এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশের বিড়াল। একেবারে শুকনা, হ্যাংলা পাতলা। সবাই যখন নাচানাচিতে ব্যস্ত তখন বাংলাদেশের বিড়াল যেন ঘুমাচ্ছে। মাঠে উপস্থিত বিচারক। এক্ষুনি শুরু হবে প্রতিযোগিতা। এক, দুই, তিন বলতেই বিড়ালের দৌঁড় শুরু। শত বিড়ালের মধ্যে বাংলাদেশের বিড়াল একেবারে পেছনে। এগুচ্ছে বিড়ালের দল। এগিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। না যেন মনে হচ্ছে ইংল্যান্ড। আবার যেন এগিয়ে গেছে রাশিয়া। হঠাৎ দেখা গেল একটি বিড়াল সবাইকে পেছনে ফেলে একেবারে সামনে। দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে একেবারে প্রথম। কি আশ্চর্য! এটা যে বাংলাদেশের বিড়াল। এটা কি করে সম্ভব? এ নিয়ে আলােচনা। পুরস্কার নিতে গেলে ধারাভাষ্যকার বলল, আচ্ছা আপনার প্রথম হওয়ার রহস্য কি? এবার বিড়াল বলল, তাহলে আমাকে কথা দিন- আমার পদক কেড়ে নেয়া হবে না। প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর বিড়ালটি বলল, আসলে আমি বিড়াল নই, রয়েল বেঙ্গল টাইগার। কিছু লোক ওই বিড়ালের মতো দেশের অর্জন নষ্ট করায় ব্যস্ত | পাশাপাশি দেশ বিদেশে কিভাবে এ অর্জনকে খাটো করা যায়- সে চেষ্টাও চালায়। ওই বিড়ালের মতো ভূমিকা নেয়। শুধু দু'একজন মানুষের জন্য গোটা দেশের দুর্নাম হতে পারে না। এরা প্রতিযোগিতায় জয়ী হলে বিড়ালকে বানিয়ে ফেলে বাঘ। সব কিছুকে দোকান ভেবে সদাইয়ে নামে। ফার্মেসি হোক আর মুদি দোকান কিংবা শার্ট প্যান্টের দোকান সব ওদের কাছে এক। ওরা সংখ্যায় কম হলেও ক্ষমতাবান। সর্বদা ব্যস্ত সদাইয়ের সন্ধানে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর