× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চীনকে মোকাবেলায় সার্ককে পুনর্জীবিত করতে হবে ভারতকে

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) জুলাই ১, ২০২০, বুধবার, ১:০৮ পূর্বাহ্ন

বিশ্বজুড়ে নিজের প্রভাব বাড়িয়েই চলেছে চীন। এরই অংশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়াতেও ভারতীয় স্বার্থ খর্ব করে প্রবেশ করতে শুরু করেছে দেশটি। এ নিয়ে এখনি ভারত সরকারের চিন্তিত হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন নয়া দিলি­র সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক প্রভাষ রঞ্জন। ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য হিন্দুতে প্রকাশিত এক কলামে তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় চীনকে মোকাবেলায় ভারতের করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন।
পাকিস্তানের ওপর চীনের প্রভাব সম্পর্কে সবাই অবগত। কমিউনিস্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নেপালও চীনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এদিকে বাংলাদেশকেও রপ্তানি করা পণ্যের ৯৭ ভাগকেই চীন দিয়েছে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার। দক্ষিণ এশিয়ার আরেক রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায়ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রভাব বৃদ্ধি করে যাচ্ছে বেইজিং।
ব্র“কিংস ইন্ডিয়ার গবেষণা অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সবকটি দেশই আমদানির জন্য ভারতের তুলনায় চীনের ওপর বেশি নির্ভর করে।
পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, চীনকে মোকাবেলা করতে হলে ভারতকে তা দক্ষিণ এশিয়া থেকেই শুরু করতে হবে। আর এ জন্য সার্ককে পুনরায় উজ্জীবিত করার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন প্রভাষ রঞ্জন। তিনি লিখেছেন, ২০১৪ সালের পর থেকে অকার্যকর হয়ে রয়েছে সার্ক। পাকিস্তান ও ভারতের রাজনৈতিক স্বার্থের টানাপড়েনে থেকেও প্রভাবহীন হয়ে গেছে সার্ক। দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করছে পাকিস্তান। ফলে দেশটিকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিতে বদ্ধপরিকর ভারত। এ জন্য সার্ককে অকার্যকর রাখায় ভ’মিকা রেখেছে ভারতও। দেশটি সার্ক বাদ দিয়ে বিমসটেকের মতো বিকল্প জোটে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। কিন্তু বিমসটেক আর সার্ক একই বিষয় নয়। বিমসটেকভুক্ত দেশগুলো ঐতিহাসিকভাবে সম্পর্কৃত নয়। জাতিগুলোর মধ্যেও মিল সামান্যই। তাছারা এটি বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে ফলে দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশই এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়।
এখন সার্ককে পুনরায় সক্রিয় করতে হলে প্রথমেই অর্থনৈতিক দিকে মনোযোগ দিতে হবে। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো একেবারেই বিচ্ছিন্ন। অঞ্চলটির মোট বানিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ নিজেদের মধ্যে হয়ে থাকে। সেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গেও এ হার ২৫ শতাংশের বেশি। দক্ষিণ এশিয়ায় দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে একাধিক বাণিজ্য চুক্তি। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে কখনই সেটি পূর্নমাত্রায় প্রতিফলিত হয় না। এই বাঁধা ভাঙতে সবার আগে ভারতকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান প্রভাষ রঞ্জন। তবে তিনি মনে করেন, ভারতকে সার্কের কার্যকরিতা ফিরিয়ে আনতে হলে ঘরে ও বাইরে দুটি প্রধান চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভেদ দূর করা। আদর্শিক কারণে দেশটির মধ্যে রয়েছে মতের অমিল। এছাড়া, পাকিস্তানবিরোধী মানসিকতা প্রবলমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানে। বাড়ছে ইসলামভীতিও। প্রতিবেশি বাংলাদেশের সঙ্গেও অভিবাসী ইস্যুতে অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। তাই পররাষ্ট্রনীতিতে অনেক কাজ করতে হবে ভারতকে। দেশটি একটি সেক্যুলার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারায় দীর্ঘদিন দক্ষিণ এশিয়ার সবগুলো রাষ্ট্রেই এক ধরণের প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে। কিন্তু সম্প্রতি ভারতের সেই ভাবমূর্তিতে ফাটল ধরেছে। তাই এ অঞ্চলকে ভারত যদি নেতৃত্ব দিতে চায় তাহলে এ ধরণের আভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক সমস্যা দূর করতে হবে। সার্কের প্রয়োজনীয়তা বুঝে এ বছরের প্রথমে সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রধানের সঙ্গে কথা বলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ফান্ড গঠন ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রস্তাবও তোলেন তিনি। তবে এমন বিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা নয় সার্ককে পুনর্জীবিত করতে প্রয়োজন টেকশই ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর