করোনাভাইরাসের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য খেলাধুলা বন্ধ। এই মহামারি থেকে বাঁচতে এক প্রকার যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে দেশের ১৭ কোটি মানুষ। প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন না বাড়ির বাইরে। অথচ এমন অবস্থায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অফিসে দৌঁড়াতে হচ্ছে দেশের শুটারদের। এক উড়ো চিঠির কারণেই তাদের সাক্ষ্য দিতে হচ্ছে। গতকাল সাক্ষ্য দিতে চার শুটার হাজির হয়েছিলেন এনবিআরে। কয়েক দিনের মধ্যে বাকি ১০ জনের হাজির হতে বলে জানা গেছে।
ফেডারেশনের সভাপতি মহাসচিব দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। যে যেভাবে পারছেন সেভাবে প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার চেষ্টা করছেন।
মাঝখানে পড়ে বলির পাঁঠা হচ্ছেন শুটাররা। সামপ্রতিক সময়ে এই উড়ো চিঠির উপর ভিত্তি করেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন সভাপতি নাজিম উদ্দিন আহম্মেদ। এই ধারাবাহিকতায় বিদেশ থেকে আনা রাইফেলের জন্য এনবিআরে হাজির হতে হচ্ছে শুটারদের। ২০১৭ সালে রাইফেল তৈরির প্রতিষ্ঠান ওয়ালথার থেকে পাওয়া ৮টি রাইফেল নিয়ে এসেছিলেন শুটাররা। অথচ তিন বছর পর এক উড়ো চিঠির কারণে এনবিআরে সাক্ষ দিতে যেতে হচ্ছে শুটারদের। গতকাল এনবিআরের দপ্তরে হাজির হয়েছিলেন আবদুল্লাহ হেল বাকি, অর্ণব শারার লাদিফ, মুন্না ও রিসালাত হোসেন। এ নিয়ে বিরক্ত যুব অলিম্পিকে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করা শুটার অর্ণব শারার লাদিফ বলেন, ‘কি বলবো আর। এখন এনবিআরে যাচ্ছি। মূলত ডেনমার্কের কোচ ক্লাভস ক্রিস্টেনসেনের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় ওয়ালথার কোম্পানী আমাদের আটটি রাইফেল উপহার দেয়। যা আমরাই নিয়ে এসেছি। বিমানবন্দরে আমাদের রাইফেল দেখেছেন কর্মকর্তারা। তারা কিছুই বলেননি। আমরাও জানতাম না যে, এয়ার রাইফেলের জন্য ট্যাক্স দিতে হয়। অথচ আজ আমাদের বলা হচ্ছে চোরাকারবারি। আমরা তো দেশের তারকা ক্রীড়াবিদ। চার ফুট লম্বা ১২ কেজি ওজনের রাইফেল তো আর পকেটে পুরে আনা যায় না। উল্টো হ্যান্ডলিং চার্জ দিয়েছি। বিভিন্ন ট্রানজিট ঘুরেও এসেছি। অথচ কেউ কিছু বলেনি। আর এখন দেশের মাটিতে আমাদের ট্যাক্স দিতে হবে। দিতে হলে দেব। কিন্তু চোরাকারবারি কেন বলা হল। আমি ইয়ুথ অলিম্পিকে কোটা প্লেস করেছি এই রাইফেল দিয়ে খেলেই। দেশের জন্য এই সম্মানটা চোরাকারবারির মধ্যে পড়ে গেল না? এটা খুবই হতাশাজনক আমাদের জন্য।’ কমনওয়েলথ গেমসে দু’দুবার রৌপ্যজয়ী শুটার আবদুল্লাহ হেল বাকী বলেন, এটা আমাদের জন্য লজ্জার। যা ফেডারেশনের করে দেয়ার কথা ছিল। তা আমরা নিজেরা করেছি। সেটি আমারদের অন্যায় হয়েছে। এর বিচার কে করবে? শুটারদের সাহস জুুগিয়ে কমনওয়েলথে সোনাজয়ী শুটার সাবরিনা সুলতানা বলেন, ‘তোমরা ভীত হবে না। কারো প্ররোচনায় শামিল হবে না। এনবিআরের কাছে অবশ্যই সত্যি কথা বলবে। ইনশাআল্লাহ সত্যের জয় অবশ্যই হবে।’ এসময় দ্বন্দ্ব ভুলে শুটিং ফেডারেশনকে শুটারদের পাশে দাঁড়ানো অনুরোধ করেন তিনি।