সরকার দুর্নীতি করে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভঙ্গুর করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার বিকালে উত্তরার বাসা থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সিলেটে সাউথ সুরমা ন্যাশনালিস্ট ফোরামের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ তুলেন। সিলেটে সাউথ সুরমা ন্যাশনালিস্ট ফোরামের উদ্যোগে করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এম্বুলেন্স সার্ভিস ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। প্রধান অতিথি বক্তব্য দেয়ার পরে ভার্চুয়ালে এই কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, উন্নত দেশগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা আছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা আছে। বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য এই সরকার দুর্নীতি করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে একেবারে ভেঙে দিয়েছেন, ভঙ্গুর করে দিয়েছেন। এখানে মানুষ কোনো স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। হাসপাতালে গেলে অক্সিজেনের অভাব, ভেন্টিলেটর বাদই দেন।
এমনিতেই লোকজন অক্সিজেন পাচ্ছেন না। সাড়ে তিন হাজার টাকার অক্সিজেন এখন ৪ হাজার, ৩৬ হাজার, ৩৮ হাজার টাকা দাম হয়ে গেছে। গ্লাভস বলুন, মাস্ক বলুন, স্যানিটাইজার বলুন, সুরক্ষা সামগ্রী বলুন- প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রকৃতপক্ষে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। তারা ব্যর্থ এই কাজে।
তিনি বলেন, খুব কঠিন ছিল না করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা। আপনারা দেখেছেন ভিয়েতনামে নিয়ন্ত্রণ করেছে, কিউবাতে নিয়ন্ত্রণ করেছে, চীনে এত বড় আক্রমণের পরে তারাও নিয়ন্ত্রণ করেছে, নিউজিল্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করেছে। অর্থাৎ সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে, তারা যদি কাজ করার মতো সত্যিকার অর্থেই একটা ভালো ইচ্ছা থাকে তাহলে সে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে সেখানে অবশ্যই যেমন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা ইত্যাদি কাজগুলো করা প্রয়োজন সেই কাজগুলো করা খুব কঠিন ছিল না। আমি মনে করি, আমাদের এখানে যে ভুলগুলো হয়েছে সেই ভুলগুলো সরকার তাদের সম্পূর্ণ অজ্ঞতা, অদক্ষতা, অযোগ্যতার কারণে আজকে কোভিড-১৯ সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বারবার ভুল সিদ্ধান্তের ফলে, একবার ঢাকা থেকে চলে যাওয়া আবার ঢাকায় নিয়ে আসা, আবার ঢাকায় কিছু কিছু অঞ্চল লকডাউন করা। এখন আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি যে, কোরবানির ঈদ আসবে, এই ঈদে আবার কী, কীভাবে ব্যাপক সামাজিক সংক্রমণ হবে।
ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখছি যে, সিলেটে গত কয়েকদিনের সংক্রমণ প্রচণ্ডভাবে বেড়েছে। ইট হ্যাজ বি কাম এ হটস্পট নাউ। আমি সিলেটের নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানাবো, সরকার কি করছে না করছে- এটা দেখার দরকার নেই। তারা যা করছে তারা করুক। আপনারা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, এই উদ্যোগগুলোকে সফল করার জন্য সবাই মিলে এগিয়ে আসার চেষ্টা করুন। আজকে যে উদ্যোগটা আপনারা নিয়েছেন এটা একটা মহৎ উদ্যোগ। এটাকে নিয়ে কাজ করুন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সিলেট বিএনপি’র সাবেক সভাপতি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ হকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব।
সাউথ ন্যাশনালিস্ট ফোরামের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব কামাল হাসান জুয়েলের পরিচালনায় ভার্চুয়াল আলোচনায় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান জীবন, সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সিলেটের সিটি মেয়র বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদ এবং লন্ডন থেকে যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি এমএ মালেক সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।