সাম্প্রতিক বন্যায় সুনামগঞ্জ জেলাজুড়েই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সড়কের। রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে ও পাহাড়ি ঢলে এ ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অতি বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে জেলার ১৫০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে জেলা সদরের সাথে জামালগঞ্জ, দোয়ারাবাজার ও তাহিরপুর উপজেলা সদরের সাথে। এতে করে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ২৭শে জুন সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়কের উজ্জ্বলপুর এলাকায় বন্যার পানিতে ভেঙে গেছে। ভাঙা স্থানে এখনও পানি রয়েছে। স্থানীয়রা নৌকা দিয়ে ওই ভাঙা অংশ পারাপার হচ্ছেন। এই ভাঙার কারণে জামালগঞ্জবাসী সুনামগঞ্জ ও সিলেটের সাথে সরাসরি যোগাযোগ থেকে বঞ্চিত।
সরজমিন দেখা গেছে, দোয়ারাবাজার উপজেলার নোয়াগাঁও এলাকার বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙে গেছে। ওই এলাকার ব্রীজের পূর্ব পাশে প্রায় অর্ধ কি.মি. সড়ক ভেঙেছে। একই ভাবে সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের আনোয়ারপুর এলাকার সড়কের ব্যাপক ভেঙে গেছে। ভোগান্তি নিয়ে যাত্রীরা চলাচল করছেন। বিভিন্ন জায়গায় সড়কের বিটুমিনের প্রলেপ ওঠে ফাটল দেখা দিয়েছে। সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কের ভাঙন রোধ করতে কাজ করছেন স্থানীয় সিএনজি ফোরস্ট্রোক গাড়ি চালকরা।
দেখা গেছে, সরাসারি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় প্রযোজনীয় কাজে মানুষজনকে বারবার যানবাহন বদল করে চলতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। সময়ও লাগছে বেশি। দ্রুত সড়ক মেরামত করে চলাচলের উপযোগি করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষজন। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা হিফজুর রহমান বলেন, আনোয়ারপুর এলাকায় ভেঙে যাওয়ায় তাহিরপুর উপজেলায় সরাসরি যাওয়া যাচ্ছে না। অনেক কষ্ঠ করে তাহিরপুর গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এদিকে, ওই ৩ উপজেলার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও অন্য উপজেলার সড়কগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে ভেঙে গেছে। তাহিরপুর উপজেলার চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু বাবুল জানান, সড়কে ভেঙে যাওয়ায় তাহিরপুরবাসী কষ্ঠে আছে। পানি নেমে গেছে, দ্রুত সংস্কার করা হবে।
সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুব আলম বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শন করছি। দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, এবারের বন্যায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সড়কের ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে সার্ভে করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হবে। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব জানান, মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে উজ্জলপুর এলাকার ভাঙনে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানি কমে গেলে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।