বাংলাদেশ রেলওয়ের শ্রীমঙ্গল ডিভিশনের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে লাউয়াছড়া বনের গাছ চুরির অভিযোগ উঠেছে। রেলের সহকারী এ প্রকৌশলী কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সংরক্ষিত বনের রেল লাইনের পাশ থেকে বিশাল দু’টি গাছ চুরি করে কেটে নিয়ে যান বলে অভিযোগ বন বিভাগের। বন থেকে কেটে চুরি করে নেয়া গাছের খণ্ডাংশ ও চিড়াই কাঠ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। জানা গেছে, রোববার সকাল থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছিল রেলওয়ের শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে রেল লাইনের পাশ থেকে চিকরাশি ও বনাক জাতীয় দু’টি গাছ কাটে শ্রমিকরা। রেলওয়ের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলামের নির্দেশেই গাছগুলো কাটা হয় বলে রেলওয়ে শ্রমিকরা জানান। পরে একটি মালবাহী ট্রেনে করে কাটাগাছের খণ্ডাংশগুলো নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে। পরে ট্রেন থেকে গাছের কিছু খণ্ডাংশ শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশন এলাকায় রেখে গাছটির মোথার অংশ পাশের একটি স মিলে নিয়ে যাওয়া হয়।
খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজারের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন ও লাউয়াছড়া বন বিট কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন এর নেতৃত্বে বনকর্মীরা শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশন এলাকায় ও পার্শ্ববর্তী স মিলে অভিযান চালিয়ে গাছের কয়েকটি খণ্ডাংশ ও গাছের চিড়াই কাঠ উদ্ধার করা হয়।
রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, রেললাইন সংস্কার ও নিরাপত্তার কাজের নাম করে রেলওয়ের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম লাউয়াছড়া থেকে গাছ কেটে ট্রেনে করে গাছ চুরি করে নিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে রোববার বিকালেই কিছু কাঠ উদ্ধার করা হয়। সোমবার সকালে শ্রীমঙ্গল থানার সহযোগিতায় রেলওয়ে কর্মকর্তার বাসভবনের সামন থেকে গাছের বাকি খণ্ডাংশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় গাছের খণ্ডাংশসহ চিড়াই করে নেয়া কাঠগুলোও উদ্ধার করে বন বিভাগ। এ ঘটনায় রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান। তবে গাছ চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে রেলওয়ের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল লাউয়াছড়া বনের ভেতরে রেললাইন সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণকালে রেললাইনের উপড়ে ঝুঁকিতে থাকা ২টি গাছ শ্রমিকরা কাটে। পরে কাজ শেষে ফিরে আসার সময় গাছগুলো মালবাহী ট্রেনে করে স্টেশনে নিয়ে আসার খবর পাই। ওই সময় আমি সিলেটে উচ্ছেদ অভিযানে ছিলাম। লাউয়াছড়ার বন বিট কর্মকর্তা ফোনে বিষয়টি জানালে গাছগুলো জিআরপি থানা অথবা স্টেশনের সীমানার মধ্যে থাকবে বলে তাকে জানাই। পরে বনবিভাগ এসে গাছ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। এর বাইরে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।