সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে আবার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত সপ্তাহের বন্যার পানি কিছুটা কমলেও বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে আবার ভারী বর্ষণের সঙ্গে পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রুত বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে মানুষের দূর্ভোগও বাড়ছে। হাওর এলাকার বসতবাড়ি ঢেউয়ের আঘাতে তচনচ করে দিচ্ছে। দুর্গত মানুষগুলো আশপাশের উঁচু স্থান, বিদ্যালয় ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছে। হাওর এলাকার অধিকাংশ ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। তাহিরপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পানি ঢুকে কার্যক্রম ব্যাঘাত ঘটছে। শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এসব দৃশ্য দেখা গেছে।
শুক্রবার জেলার প্রধান নদী সুরমা, যাদুকাটা, রক্তি ও পাটলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় ১৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে ৩টি, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নে ৩টি, বালিজুড়ি ইউনিয়নে ১টি ও বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা গ্রামে ১টি বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ উঠতে শুরু করেছে। জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোদ্দাচ্ছির আলম সবুল জানান, স্কুলের বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রটি খোলা রাখা হয়েছে। হাওর এলাকার অনেকেই ফোন করে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের মন্দিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সান্জব উস্তার বলেছেন, অনেকেই মন্দিয়াতা স্কুলের বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। বানের পানির ঢেউয়ে একেরপর এক মন্দিয়াতা গ্রামের বসতভিটা ভেঙ্গে যাচ্ছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন খান ও শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খসরুল আলম জানান, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের মন্দিয়াতা, জয়পুর, গোলাবাড়ী, মুজরাই, মাটিয়ান, শিবরামপুর, তরং, জামালপুর, ভোরাঘাট, বালিজুরী, বড়খলা, আনোয়ারপুর, লোহাচুরা, দক্ষিণকূল, নয়াহাট, বারুঙ্কা, গোবিন্দশ্রী, রতনশ্রী, চতুর্ভূজ, ভাটি তাহিরপুর, রাজধরপুর, পৈন্ডুপ, সাহেবনগর, উজান তাহিরপুর, ভবানীপুর, সন্তোষপুর, জাঞ্জাইল, ইকরামপুর, লামাগাঁও, দুমাল, মাহতাবপুর, মাহমুদপুর, রামজীবনপুর, গোপালপুর, লক্ষ্মীপুর, মাটিয়ান, পিরিজপুর, শরীফপুর, চিকসা, জামালগড়, গাজীপুর, বড়দল, কাউকান্দি, নোয়াহাট সহ শতাধিক গ্রামের মানুষ এখন পানি বন্ধি হয়ে মানবেতর জীবন করছেন।