দেশে করোনা শনাক্তের হার বেড়েই চলছে। সর্বোচ্চ শনাক্তের হারের দিনে করোনা সংক্রান্ত ফোনকল এসেছে প্রায় ২ লাখ। এ যাবৎ করোনা সংক্রান্ত এক কোটি ৬০ লাখের বেশি কল এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে। পরীক্ষা কমলেও শনাক্তের হার কমছে না। বরং বেড়েই চলছে একদিনের করোনা পরীক্ষায় সর্বোচ্চ শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় প্রতি ৪ জনের মধ্যে একজন করোনা রোগী চিহ্নিত হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করে এই শনাক্তের হার পাওয়া গেছে। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ১৯৩টি।
শনাক্তের হার ছিল ২৪ শতাংশ।
এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরো ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ হাজার ৩৫২ জনে। নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৬৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৭৯৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৫৮০ জন। এখন পর্যস্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৯৩ হাজার ৬১৪ জন।
গতকাল করোনা নিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ হাজার ২১০টি এবং নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১১ হাজার ৫৯টি। এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৪০ হাজার ৫২৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৬৬৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫০ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ৮৬০ জন এবং নারী ৪৯২ জন। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন।
মৃত্যু ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ৬ জন, বরিশাল বিভাগে ২ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৪৩ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭৩৭ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৩১৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯০৯ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ১৯ হাজার ১৮৬ জন। এখন পর্যন্ত মোট আইসোলেশন করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৫০৫ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৫৩১ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫৪ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৯০০ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ৩০ হাজার ৭৭১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৩ হাজার ৮৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে ফোনকল এসেছে ১ লাখ ৯০ হাজার ৩৮৮টি। এই সংখ্যা আগের দিন ছিল ১ লাখ ৮৬ হাজার ৩৮৬টি। এ পর্যন্ত মোট কল এসেছে ১ কোটি ৬০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৪টি।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গত ৭ দিনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, পরীক্ষা কম হলেও শনাক্তের হার বাড়ছে। গত ১০ই জুলাই শনাক্তের হার ছিল ২১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এই দিন শনাক্ত হন ২ হাজার ৯৪৯ জন এবং নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ৪৮৮টি। ৯ই জুলাই শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ (শনাক্ত ৩ হাজার ৩৬০ জন) এবং নমুনা পরীক্ষা ১৫ হাজার ৬৩২টি। ৮ই জুলাই শনাক্তের হার ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ (শনাক্ত ৩ হাজার ৪৮৯ জন) এবং পরীক্ষা ১৫ হাজার ৬৭২টি। ৭ই জুলাই শনাক্তের হার ছিল ২২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এই দিন শনাক্ত হন ৩ হাজার ২৭ জন এবং নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ১৭৩টি। ৬ই জুলাই শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৭ শতাংশ (শনাক্ত হন ৩ হাজার ২০১ জন) এবং পরীক্ষা হয় ১৪ হাজার ২৪৫টি।