বৈশ্বিক করোনাভাইরাসে চাঁদপুর-ঢাকা নৌ-পথে যাত্রী সংকটে ১০টি লঞ্চের চলাচল বন্ধ রয়েছে। ধারণক্ষমতার চারভাগের একভাগ যাত্রীও মিলছে না লঞ্চগুলোতে। এমন পরিস্থিতিতে অব্যাহত থাকলে ওই রুটে সবগুলো লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। আর বন্দর কর্মকর্তা বলছে লঞ্চ বন্ধ হলেও যাত্রী যাতায়াতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
লঞ্চঘাটে গিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর- ঢাকা রুটে নিয়মিত প্রতিদিন প্রায় ১৮টি লঞ্চ চলাচল করলেও করোনায় দিন দিন যাত্রী সংকট তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এতে লঞ্চগুলোর জ্বালানি খরচও মেটাতে না পারায় প্রায় ১০টি লঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছে মালিক পক্ষ। বন্ধ হয়ে যাওয়া লঞ্চগুলো হচ্ছে রফরফ কোম্পানির ৩টি লঞ্চ, সোনার তরীর ২টি লঞ্চ, ময়ূর কোম্পানির ২টি লঞ্চ, জম জম কোম্পানির ১টি লঞ্চ, তাকোয়া ও মিতালি ৭টি।
অপরদিকে লঞ্চগুলো বন্ধ হওয়ায় ঢাকা থেকে যেসব লঞ্চ চাঁদপুর ঘাটে আসে, সেগুলোই আবার ছেড়ে যাচ্ছে। তবে ১শ’ থেকে ২৫০ জন যাত্রী নিয়ে তারা ঘাট ছাড়ছে।
প্রিন্স অব রাসেল-৩ ও এমভি গ্রিন ওয়াটার-১০ মালিক রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, ৩১শে মে থেকে সরকারের নির্দেশনায় ২৩-২৪টি লঞ্চ নিয়মিত চলাচল শুরু করেছিল। প্রথমে প্রচুর পরিমাণ যাত্রী আনতে পারতো তাই মালিকরা লাভবান থাকতো।
হঠাৎ যাত্রী কমে যাওয়ায় প্রতিটি লঞ্চে প্রায় ১ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই সরকার যদি কিছুটা ভাড়া বাড়াতো তাহলে হয়তো এই রুটে কিছু লঞ্চ চলতে পারতো।
রফরফের মালিক প্রতিনিধি আমির হোসেন কালু বলেন, কোম্পানির ৪টি লঞ্চ প্রথমে চলাচল করেছে। যাত্রী সংকটের কারণে ৬০-৭০ হাজার টাকা লোকসানের কারণে ২টি লঞ্চ বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন চাঁদপুরের উপ-পরিচালক এ কে এম কায়ছারুল ইসলাম বলেন, চাঁদপুর থেকে ঢাকায় স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন সকাল হাফে সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ১২টি লঞ্চ যাতায়াত করে, কিন্তু করোনা কালে যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় ৬-৭টি লঞ্চ চলাচল করছে। আর সেকেন্ড হাফে ৬টি লঞ্চের স্থলে ২-৩টি লঞ্চ চলাচল করছে। এছাড়া এখন মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে বের হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে লঞ্চে যাত্রী হচ্ছে না। মালিকগণের লোকসান হচ্ছে। তাই যাত্রীদের কোনো রকম যেন ভোগান্তি না হয় তাই লঞ্চগুলো টাইম ম্যানেজমেন্ট করে সেভাবেই চালাচ্ছে। তাতে মালিক বা যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার ভোগান্তি বা সমস্যা ও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। সেক্ষেত্রে মালিকগণ সবদিক বিবেচনা করে লঞ্চ পরিচালনা করছে। এতে সার্বিক বিবেচনায় কোনো পক্ষের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আর মালিকদের লঞ্চগুলো চালাতে হবে ও বাঁচতে হবে। সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। আর যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সেক্ষেত্রে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।