× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শাহেদকে নিয়ে সিলেটে গুঞ্জন

প্রথম পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৫ জুলাই ২০২০, বুধবার

রিজেন্ট গ্রুপের মালিক শাহেদ করিমকে নিয়ে নানা গুঞ্জন সিলেটে। গত দুইদিন ধরে এই গুঞ্জন নানা ডালপালা মেলেছে। এ কারণে তাকে নিয়ে আলোচনাও চলছে সিলেটে। তবে এই গুঞ্জনের সত্যতা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। প্রতারক শাহেদ করিম সম্পর্কিত কোনো তথ্যই তাদের কাছে নেই। তবে সতর্ক রয়েছে পুলিশ। যদি সে সিলেটে কোথাও ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে কিংবা সিলেট থেকে ভারত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তবে পুলিশ তাকে আটক করবে। এমন প্রস্তুতিও রয়েছে পুলিশের।
সিলেটে শ্বশুরবাড়ি প্রতারক শাহেদ করিমের। নগরীর দক্ষিণ সুরমার পাঠানপাড়া এলাকার সাদিয়া আরাবি রিম্মির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ে করেন। শাশুড়ির সঙ্গেও করেছেন নানা প্রতারণা। শ্বশুরবাড়ি সিলেটে হলেও সাদিয়া আরাবি রিম্মি সহ তার পরিবারের কারো সম্পর্ক নেই সিলেটের স্বজনদের সঙ্গে। তাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা সব ঢাকায়। সিলেটে তাদের পৈতৃক ভিটে থাকলেও তারা কখনো সিলেটে আসতেন না। স্বজনদের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেই তারা ঢাকায় জীবনযাপন করছেন। এক সপ্তাহ ধরেই প্রতারক শাহেদ নিখোঁজ। মামলা হওয়ার পর থেকে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পালিয়ে শাহেদ করিম সিলেটে আসতে পারেন- এমন খবরে তোলপাড় শুরু হয়। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সেই খবরটি আলোচিত হলে সাহেদের শ্বশুরবাড়ি সম্পর্কে অবগত হন সবাই। ইতিমধ্যে শাহেদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সে যাতে দেশ ছেড়ে না পালাতে পারে সেজন্য দেশের সব ইমিগ্রেশনে বার্তা পাঠানো হয়েছে। অর্থাৎ শাহেদকে ধরতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। কিন্তু গতকাল বিকাল পর্যন্ত ধরা পড়েনি শাহেদ। রোববার রাত থেকেই শাহেদকে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয় সিলেটে। বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে শাহেদ করিম ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এমন গুঞ্জনে সিলেটে শুরু হয় তোলপাড়। তবে ওই দিন পর্যন্ত সিলেট পুলিশের সাহেদকে আটকের অভিযান সম্পর্কিত কোনো তথ্য মিলেনি। সোমবার বিকালে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। শাহেদ মৌলভীবাজারে অবস্থান করছেন- এমন খবর চাউর হয় সিলেটে। এই খবরে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়। মৌলভীবাজার পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রীমঙ্গল রিসোর্ট এলাকায় নজরদারি ও তল্লাশি করা হয়। তবে রাত পর্যন্ত শাহেদ করিমকে গ্রেপ্তারের কোনো খবর মিলেনি। শাহেদ করিমকে নিয়ে সিলেটে গতকাল পর্যন্ত কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন সিলেট রেঞ্জ পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র। তিনি গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন সাহেদকে নিয়ে সিলেটে অভিযান সম্পর্কিত কোনো তথ্য নেই। তবে পুলিশের সব ক্ষেত্রেই নজরদারি থাকে। এক্ষেত্রেও আছে। নজরদারির বাইরে কিছুই নেই বলে জানান তিনি। এদিকে সতর্ক রয়েছে সিলেট মহানগর পুলিশ ও র‌্যাবও। শাহেদ সিলেটে পালিয়ে আসতে পারে- এমন খবরে তারাও চোখ-কান খোলা রেখেছেন। শাহেদের জন্য গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শাহেদকে নিয়ে তাদের গোয়েন্দা নজরদারি তৎপর রয়েছে। সিলেটে ঢুকলেই শাহেদকে ধরা হবে। সে কোনোভাবে যাতে সিলেট দিয়ে পালাতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে শাহেদের সিলেট ‘কানেকশন’ সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ি কিংবা অন্য কোনো পক্ষের সঙ্গে শাহেদ কানেকশনের সঠিক কোনো তথ্য মিলেনি। তবে গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে শাহেদ করিম একবার সিলেটে এসেছিলেন। তিনি সিলেট সিটি নির্বাচনে নৌকার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। নৌকার প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়েও তাকে বসতে দেখা গেছে। সেই মঞ্চে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সিলেট আওয়ামী লীগের এক নেতা জানিয়েছেন, নির্বাচন এলে অনেকেই প্রচারণায় অংশ নিতে সিলেটে আসেন। কে কোথায় এসে প্রচারণা চালিয়েছে সে বিষয়টি তাদের জানা নেই। যারা দুর্নীতিবাজ ও প্রতারক তাদের বিরুদ্ধে সিলেটের আওয়ামী লীগ সব সময় সোচ্চার বলে জানান তিনি।
স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে জানান, গেল ২ দিন থেকে মৌলভীবাজারের প্রশাসন তৎপর। হঠাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন  চোখে পড়ার মতো তৎপরতায় কৌতূহলী এ জেলার মানুষ। কিন্তু যাকে ঘিরে তৎপর সবাই সেই শাহেদকে জেলার সম্ভাব্য সকল স্থানে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও থেমে নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীরা। সবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এ জেলার সীমান্ত এলাকা ঘিরে। জেলার সীমান্তবর্তী সবক’টি উপজেলায় এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন তৎপর। রিজেন্ট হাসপাতালে ভুয়া করোনা পরীক্ষা কেলেঙ্কারির প্রধান আসামি  মো. শাহেদ ওরফে শাহেদ করিম মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত যেতে পারে সন্দেহে কমলগঞ্জের শমশেরনগরে ১৩ই জুলাই সোমবার বিকাল থেকে আকস্মিক পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়। শমশেরনগর চৌমুহনা থেকে ভারতের ত্রিপুরাগামী সড়কের প্রবেশ মুখে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা দাঁড়িয়ে যানবাহন তল্লাশি শুরু করেন। শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা যায় মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ থেকে তাদেরকে জানানো হয়েছে রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা কেলেঙ্কারির পলাতক প্রধান আসামি মো. শাহেদ এ পথে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর সীমান্ত পথে ভারতের ত্রিপুরা যেতে পারেন। তাই বাড়তি সতর্কতায় পুলিশ সদস্যদের এই যানবাহন তল্লাশি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর