ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে ফসলি ক্ষেত বিনষ্টের ঘটনা। চলতি মাসে উপজেলার তিনটি গ্রামের তিনজন কৃষকের পেপে গাছ, করলা ক্ষেত এবং সর্বশেষ গত সোমবার রাতে আরেক কৃষকের দেড় বিঘা জমির শিমগাছ কীটনাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দিলো দুর্বৃত্তরা। এভাবে দুর্বৃত্তদের দ্বারা ভরা ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় ফসলি ক্ষেতের মালিকেরা তাদের ক্ষেত নিয়ে চরম আতঙ্কে পড়েছেন। এবার ফসল বিনষ্টের শিকার হয়েছেন উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের ঘোপ গ্রামের মাহতাব মুন্সির ছেলে আব্দুর রশিদ। সরজমিনে গত মঙ্গলবার বিকালে আব্দুর রশিদের ক্ষেতে গেলে দেখা যায়, শিমের সব লতাগুলো শুকিয়ে গেছে। ক্ষেতের মাঝে মধ্যে দুই একটি গাছ ভালো আছে। বাকি সবই নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, আমি একজন সবজি চাষি।
মাঠে অন্য ফসলের সঙ্গে দেড় বিঘা জমিতে শিমের চাষ করেছিলাম। সতেজ গাছগুলো বানে উঠে লতিয়ে যাচ্ছিল। কিছুদিন পরেই শিম ধরা শুরু হতো। কিন্তু শত্রুতা করে কে বা কারা রাতের আঁধারে গাছ কীটনাশক স্প্রে করে আমার ক্ষেতের সব শিমগাছ পুড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, আমি তো কারও ক্ষতি করিনি। সে কারণে মনে করি আমার কোনো শত্রু নেই। তাহলে যারা এভাবে ভরা ক্ষেত নষ্ট করছে তাদের লাভটা কি হয়েছে? প্রশাসনে অভিযোগ না দেয়ার প্রশ্নে তিনি জানান, আমি গ্রামের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। আমি যেহেতু ক্ষেতে কাউকে দেখিনি। ফলে কারও দোষারোপও করতে পারছি না। ক্ষেত নষ্ট হওয়ার ফলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি কিন্তু যে ক্ষেতটা পুড়িয়ে দিয়েছে তার কি কোনো লাভ হয়েছে? তিনি বলেন, যারা কৃষকের ভরা ক্ষেত নষ্ট করতে পারে সমাজের দুষ্টু প্রকৃতির এ মানুষগুলো সব ধরনের মন্দ কাজ করতে সক্ষম। ওই গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুস সেলিম মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই কৃষকের ক্ষেত নষ্ট করার ঘটনার কথা আমাকে কেউ জানায়নি। তবে একজন কৃষকের ভরা ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেলে ওই কৃষক পথে বসে যায়। এমন জঘন্য কাজ করা শুধুমাত্র জঘন্য মানসিকতার লোকদের পক্ষেই সম্ভব।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা. মাহাফুজুর রহমান মিয়া জানান, এমন ঘটনা নিয়ে থানায় এখনো কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেননি। আসলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তিনি আরো বলেন, কৃষকের ভরা ক্ষেত কেটে দেয়ার মতো ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার নয়। সম্প্রতি এমন ঘটনার কথা শুনছি। কিন্তু দুষ্টু প্রকৃতির এ মানুষগুলোর বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তরা সন্দেহ করলেও তা অনুমান নির্ভর হওয়ায় কেউ অভিযোগ দিতে চান না। কেননা তারা তো সরাসরি দেখেননি কে এমন জঘন্য কাজ করেছে। ফলে জটিলতার সৃষ্টি হয়। তারপরও কৃষকের পরিশ্রমের ফসলহানির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।