মৌলভীবাজারে প্রতিদিন বাড়ছে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা। এখন প্রতিদিন জেলায় নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে তার প্রায় ৩৫ ভাগের কাছাকাছি শনাক্ত হচ্ছে করোনা পজেটিভ। তারপরও সাধারণের মধ্যে সচেতনতা নেই। জানালেন মৌলভীবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. তওহিদ আহমদ।
সর্বশেষ ১৪ই জুলাই আরো ৪৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন মৌলভীবাজারে। মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যানুসারে গতকাল পর্যন্ত মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৭৪৫ জন। মারা গেছেন ৮ জন। আইসোসেশনে আছেন ৩৫১ জন। বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩০৪২ জন।
প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩৯৩ জন। এদিকে সিভিল সার্জন অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে সংক্রমণে দিক দিয়ে মৌলভীবাজার জেলা এখন একটি দ্রুত করোনা সংক্রমণের জেলা হিসাবে চিহ্নিত হচ্ছে। সর্বশেষ যে রিপোর্ট আসে তাতে দেখা গেছে যে পরিমাণ টেস্টের স্যাম্পল পাঠানো হয়েছিল তার প্রায় ৩৫-৩৬%ই পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে দেশের যে ১৬টি জেলায় করোনার সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে তার মধ্যে মৌলভীবাজার জেলাও অবস্থান করছে। এমন অবস্থায় প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে। গতকাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৌলভীবাজার শহরের বিভিন্ন সড়কে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এই সময় দেখা গেছে গাড়ি, মোটরসাইকেল বা রিকশা আরোহীকে থামিয়ে মাস্ক পরতে বলছেন দায়িত্ব পালনকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। গতকাল দুপুরে শহরের চৌমোহনায় এমন দায়িত্ব পালনকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমন চন্দ্র দাশ জানান, মৌলভীবাজার জেলায় দ্রুতই বাড়ছে করোনা সংক্রমণ কিন্তু সাধারণ মানুষ বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখছে। স্বাস্থ্য বিধি মানছে না বা পালন করতে আগ্রহী না। তাই মাস্ক পরার ব্যাপারে নির্লিপ্তভাব দেখা যাচ্ছে। এসব দিক চিন্তা করে করোনা মোকাবিলায় চলমান কাজের অংশ হিসেবে প্রশাসনের ৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন সড়কে অভিযান পরিচালনা করছেন। যাদের মাস্ক নেই তাদেরকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক দেয়া হচ্ছে, পরিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং যারা মাস্ক থাকার পরও মুখে পরছেন না তাদের সতর্ক করা হচ্ছে কঠোরভাবে। এদিকে মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডা. তওহিদ আহমদ গতকাল দুপুরে মুঠোফোনে জানান, প্রতিদিনের নমুনা সংগ্রহ এবং শনাক্তের সংখ্যা দেখলে বুঝাই যাচ্ছে মৌলভীবাজারে বেশ দ্রুতই সংক্রমণ ঘটছে করোনার। সর্বশেষ ৪৪ জন শনাক্ত হয়েছেন একশত এর কিছু উপরে পাঠানো নমুনার বিপরীতে। বলা যায় এক-তৃতীয়াংশই মিলছে করোনা পজেটিভ। তিনি এ সময় দুঃখ করে বলেন, এ অবস্থায়ও মানুষের মধ্যে তেমন সচেতনতা ও চিন্তা নেই। স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। বাজারগুলোতে দেখা যায় ভয়াবহ চিত্র। এখন সন্ধ্যার পর দোকানপাট খোলা থাকায় আড্ডা জমে। সবার জানা উচিত সচেতন না হলে ভুগতেই হবে।