মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্যতম 'ভাটেরা
টিলা ঢিবি' পরিদর্শন করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
শনিবার বিকেলে উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের ‘ভাটেরা টিলা ঢিবি' পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লার আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো.আতাউর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। সেখান থেকে তারা বেশকিছু প্রত্নবস্তু সংগ্রহ করেন ।
‘ভাটেরা টিলা ঢিবি' প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের একটি সংরক্ষিত নিদর্শন। এখানে একটি তাম্রশাসন
পাওয়া গিয়েছিল। এই তাম্রশাসনটি আনুমানিক ৫০০ - ৮০০ খ্রিষ্টপূর্বের বলে ধারণা করা হয়। এটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
ভাটেরা টিলা ঢিবি' পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লার আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো.আতাউর রহমান বলেন, আর এটা চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয় অনুসন্ধানের প্রথম দিনের মাঠ জরিপ ও অনুসন্ধান। আমরা এখানে বেশকিছু প্রত্নবস্তু সংগ্রহ করেছি । তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় প্রত্নতাত্ত্বিক স্হান ।
আগামী শীতের মৌসুমে এই ভাটেরা টিলায় (স্হানীয় নাম রাজার ভিটা) প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধান করা হবে। তিনি বলেন, ‘ভাটেরা টিলা ঢিবি' বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর কর্তৃক নির্বাচিত ও সংরক্ষণকৃত একটি স্থান। এটি ব্রিটিশ আমলে তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। সিলেটে প্রাপ্ত প্রাচীন তাম্রশাসনের একটি এখানে পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া জেলার রাজনগর উপজেলায়ও পশ্চিমভাগ তাম্রশাসন পাওয়া গিয়েছিল।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত নিদর্শনঐতিহ্যবাহী 'ভাটেরা টিলা ঢিবি' লোকজন কেটে নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ড. মো.আতাউর রহমান। তিনি বলেন, আমরা মূলত জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নে কথিত চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান সরেজমিন জরিপ ও পরিদর্শনে এসেছি । এই ‘ভাটেরা টিলা ঢিবি'র সাথে চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি যোগসূত্র রয়েছে। ঐতিহাসিকরা আজ অবধি কোনও সুনির্দিষ্ট জায়গার বিষয়ে একমত হননি। তাই এটি রাজনগরে হতে পারে, ভাটেরা হতে পারে আবার জুড়ী উপজেলার সাগরনালেও হতে পারে। তাই আমাদের তিনদিনের পরিদর্শন কার্যক্রমে আজ প্রথম দিন আমরা ‘ভাটেরা টিলা ঢিবি' পরিদর্শন করলাম। রবিবার জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নে চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ধানে সরেজমিন পরিদর্শন ও জরিপ কার্যক্রম চালাবো।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুলাই প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক( প্রত্ন সম্পদ ও সংরক্ষণ) মো. আমিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক পত্রে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের দিঘীরপাড় এলাকায় চন্দ্র বংশীয় রাজা শ্রীচন্দ্র কর্তৃক কথিত শ্রীহট্টের চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও পুরাকীর্তি সম্পর্কে সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক আলোকচিত্র ও মতামতসহ প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লার আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো.আতাউর রহমানকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।