জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। নোটিশ পাঠানো হয়েছে গত মার্চে। তবে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই চিঠিটি পোস্ট করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পপি। এদিকে কিছুদিন আগে এ নায়িকা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন খুলনার খালিশপুরের নিজ বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। গণমাধ্যমে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য প্রদানের জন্য পপিকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশের একটি কপি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন পপি। এতে দেখা যায়, গত মার্চ মাসে এটি ইস্যু করা হয়েছে।
তাতে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের স্বাক্ষর রয়েছে। তবে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এই প্যাডে জায়েদ খানের স্বাক্ষরের নিচে পদবি ঠিক রয়েছে। তবে লেখা রয়েছে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি! বিষয়টি নিয়ে এখন চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এ ছাড়াও চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভিন পপি এই চিঠির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়েছেন। পপি জায়েদকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, কে দিয়েছে তাকে এতো বড় সাহস, এত বড় অন্যায় বা ক্রাইম করার? পপি লিখেন, যদিও আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ ও মানসিকভাবে হতাশ হওয়ার পরেও চুপ থাকতে পারলাম না। আমি চলচ্চিত্র ও চলচ্চিত্রের মানুষকে শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি। আমি একজনকেই দালাল বলে আখ্যায়িত করেছি, বিষয়টি আমি এবং সে উভয়ই জানি। গোটা চলচ্চিত্রের সকলেই জানে। তাহলে কেন এই চিঠি? কে পাঠিয়েছিল? কোন্ সমিতির চিঠি এটা? কার সিগনেচার? কি এবং কার স্বার্থে এই চিঠি? শুধু আমি না, অনেকই পেয়েছে এমন চিঠি। আমার প্রশ্ন তাহলে কেন সে শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার করলো? কে দিয়েছে তাকে এ সাহস, এত বড় অন্যায় বা ক্রাইম করার? অনেক কষ্ট ও শ্রম দিয়ে আজকে আমি পপি হয়েছি। আমার একক নামে বহু সুপার বাম্পারহিট ছবি ইন্ড্রাস্টিকে উপহার দিয়েছি। স্বীকৃতিস্বরূপ বহুবার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছি। শ্রদ্ধেয় ফারুক, আলমগীর, ইলিয়াস কাঞ্চন, রুবেল, ডিপজল, মিশা, সোহেল রানা ভাইয়েরা, যাদের সঙ্গে আমি সৌভাগ্যক্রমে বহু ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছি তারা কি আমার মতো শিল্পীকে সদস্য পদ বাতিলের জন্য চিঠি দিতে বলেছেন? আমাদের মতো শিল্পীদের অসম্মান করার জন্য বলেছেন আপনারা? সরকার বলেছে? তাহলে চিঠিতে তাদের সিগনেচার কোথায়? চিঠিতে কার সাইন? তাহলে জায়েদ খান কি বলতে চান? এই সিনিয়ররা চায় আমাদের মতো শিল্পীরা চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নেক? গুণী, পরীক্ষিত ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীরা কি চলচ্চিত্র থেকে চলে যাবে? শুধুমাত্র একজনের নোংরামির কারণে? উনার পছন্দ-অপছন্দের কারণে? উল্লেখ্য বিষয় যেখানে ৮-১০ বছরেও একটা সুপার হিট দূরে থাক, হিট ছবিও ইন্ডাস্ট্রিকে দিতে পারেনি সে। সবার মাথায় কাঁঠাল রেখে সিনিয়রদের নাম খারাপ কাজে ব্যবহার করে ও তাদেরকে সামনে রেখে অবলীলায় যা তা করে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য। শিল্পী সমিতির মাত্র ৪০০ সদস্যের মন যে জয় করতে পারেনি সে লাখ মানুষের মন জয় করবে কি দিয়ে? নোংরা পলিটিক্স, পিস্তল, অশোভন আচরণ, মানুষকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দিয়ে, মিথ্যা কথা দিয়ে, সদস্য পদ খারিজ করে! যেখানে তার সদস্য পদটা আমি আমরা বা আমাদের মতো সম্মানিত ১৮৪ জন শিল্পীর ভোটের কারণে। যে তার জন্মকে অস্বীকার করে তাকে কি বলে সম্বোধন করা উচিত তা আপনাদের ওপরই ছেড়ে দিলাম। সর্বোপরি বলতে চাই- আমি চলচ্চিত্রের পপি। আমি সাধারণ জনগণের পপি কোনো ব্যক্তি বা সমিতির পপি নই।