× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কামারদের দুর্দিন

শেষের পাতা

তামান্না মোমিন খান
৩১ জুলাই ২০২০, শুক্রবার

করোনার কারণে চার মাস ধরে দুর্দিন চলছে কামারদের। তারপরও তারা  আশায় ছিল কোরবানি ঈদে কিছুটা হলেও দুর্দশা কাটবে তাদের। সে আশায়ও গুড়েবালি। দরজায় ঈদ কড়া নাড়ছে তারপরও বেচাকেনা নেই দা, বঁটি, ছুরির। এমন কি দা, বঁটি, ছুরি ধার করাতেও আসছে না মানুষ। বছরের একটা সময় শুধু কোরবানি ঈদে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা চলে কামারের দোকানে। এ সময়টির অপেক্ষায় থাকে তারা। এ বছর পুরোটাই ভিন্ন প্রেক্ষাপট।
কাওরান বাজারে কামারের দোকানে গিয়ে
 দেখা গেছে নেই কোনো দা-বঁটি  বানানোর শব্দ। নেই কোনো দা, বঁটি শান দেয়ার আওয়াজ। দোকানি বসে আছে। কেমন চলছে বেচাকেনা জানতে চাইলে কামার রাজু বলেন- ‘করোনা আমাদের শেষ কইরা দিছে। গত কয়েক মাস ধইরা কোনো বিক্রি নাই। আশায় ছিলাম কোরবানি ঈদে কিছুটা হইলেও বিক্রি বাড়বো। তাও হইলো না। মানুষই আসে না। ঈদের আগে ঢাকার বাইরে থেইক্যা অনেক কসাই আসে দা, বঁটি কিনতে। এইবার তো কসাইও দেখি না। আর আসবে কেন? মানুষ তো কোরবানি দিতেছে না। আমাগো কষ্ট না খাইয়া মরতে হবে। আর মনে হয় দোকানও রাখতে পারবো না।’ কামার জব্বার বলেন- ‘আমাদের তো বছরে একবারই সবচেয়ে বেশি কামাই হয় কোরবানি ঈদে। এরপর সারা বছর টুকটাক যা আয় হয় তা দিয়া আমাদের ভালোই চইলা যায়। করোনা আইছে গরিবদের মারতে। গরিবদের তো আর জমানো টাকা নাই যে বইসা বইসা খাইবো। আমাগো কাম কইরা খাইতে হয়। বেচা-বিক্রি না থাকলে আমাগো কামও থাকবো না, বাঁচতেও পারবো না। আমরা করোনায় মরুম  না, আমরা মরুম অভাবে। করোনা শুরু হওয়ার পর পরিবারকে বাড়িতে পাঠায় দিছি। আমি ভাবছিলাম, কোরবানি ঈদে কিছুটা হইলেও বিক্রি বাড়বো। এখন তো তিন ভাগের এক ভাগও বিক্রি হয় না। ঈদের পরে দোকান ছাইড়া আমি বাড়িতে চইলা যামু। আমরা আছি বিপদে। আমরা ভিক্ষাও করতে পারি না। আবার সরকারও আমাদের কোনো সাহায্য করে না।’ কামার মালেক বলেন-‘কোরবানি ঈদ আসলে যেইখানে নাওয়া-খাওয়ার সময় পাই না সেইখানে অলস বইসা আছি। কোরবানি ঈদের আগে এমন সময় আর কোনোদিন দেখি নাই। মানুষ এখন ঘর থেইকা বাইর হইতেই ভয় পায়। কোরবানি দিবো না। দা,বঁটি কিনবোও না। ধারও দিবো না। আমরা বাঁচবো কেমনে? এই কাজ ছাড়া তো অন্য কাজ করতেও পারি না।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর