× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কথার মারপ্যাঁচ

মত-মতান্তর

শামীমুল হক
৩ আগস্ট ২০২০, সোমবার

কথা হচ্ছিল কথা নিয়ে। কথা নিয়ে যে কত কান্ড, অকান্ড হয় সমাজে, সংসারে। কথার যাদু দিয়েই জয় করা যায় মন। আবার কথা দিয়েই মন ভেঙে দেয়া যায়। কথাই মানুষকে কাঁদায়। আবার কথাই মানুষকে হাসায়। কথার মারপ্যাঁচে কত জন যে হয় গলদঘর্ম। কথা নিয়ে কত কথা...।
আদি যুগে মানুষ কত ভাবে তার মনের ভাব প্রকাশ করেছে। অক্ষর, শব্দ সৃষ্টির আগে সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে মানুষ দূর-দূরান্তে থাকা স্বজনদের সঙ্গে ভাব বিনিময় করেছে। আর এ ভাববিনিময়ে কখনও ঘোড়ার গাড়ি, কখনো কবুতর ব্যবহার করেছে। এক সময় চালু হয় ডাক ব্যবস্থার। দেশ-বিদেশ থেকে ডাক টিকিটের বিনিময়ে পাঠানো হতো চিঠি। এমন হাজারো মানুষ ডাকপিয়নের জন্য অপেক্ষা করতো। কখন তার স্বজনের খোঁজ পাবে চিঠির মাধ্যমে। সে সময় প্রেমিক-প্রেমিকার ভরসা ছিল এ চিঠি। প্রেমিকের গভীর ভালবাসা পেতে ভরদুপুরে বাড়ির আঙিনায় মাদুর পেতে প্রেমিকা লিখতো চিঠি। আর চিঠির এক কোণে লিখতো রাত ১২টা ১ মিনিট। শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা কেন? স্ত্রী তার স্বামীর চিঠির অপেক্ষায় দিন গুনতো। পিতা তার সন্তানের চিঠির জন্য প্রতিদিন পোস্ট অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতো। মা তার বিবাহিত মেয়ের চিঠির জন্য প্রহর গুনতো। চিঠি পেয়ে ফের আয়োজন চলতো ফিরতি উত্তর দেয়ার। আজ পৃথিবী এগিয়েছে। বদলেছে অনেক কিছু। এখন আর কেউ ডাক হরকরার জন্য অপেক্ষা করে না। এখন আর কেউ পোস্টঅফিসমুখীও হন না। এক সময় হয়তো ডাকপিয়ন, পোস্টঅফিস জাদুঘরেই স্থান পাবে। কারণ এখন ইচ্ছে হলেই ভালবাসার মানুষের সঙ্গে কথা বলা যায় যখন তখন। একে অপরকে ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখে সরাসরি কথা বলতে পারে। মোবাইলফোনেই একে অপরকে দেখছে, কথা বলছে। এ কথার জন্য কত কিছু। এখন যুগ বদলেছে। বদলেছে কথার ধরনও। আধুনিক যুগে সবকিছুতেই যেন লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। নির্বিঘ্নে নেট সরবরাহ চালু রাখতে, আরও গতি বাড়াতে এখন থ্রিজি থেকে উন্নীত হয়েছে ফোরজি নেটওয়ার্কে। আসলে এক কথা, দু’কথার পরই একে অপরের মধ্যে সৃষ্টি হয় ভালবাসার। আবার কথায় কথায় সৃষ্টি হয় ক্ষোভের। রাগের। যা থেকে ঘটে নানা অঘটন। ভালবাসার মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য কেউ হয়ে থাকে উদগ্রীব। কেউ বা কথার ফাঁদে মানুষকে ফেলে চরম বিপদে। পৃথিবীর সৃষ্টির পেছনেও রয়েছে ভালবাসা। কথায় বলে- ভালবাসা দিয়ে বিশ্ব জয় করা যায়। কথা দিয়ে জয় করা যায় মন। কিন্তু বিজ্ঞান পৃথিবীকে ছোট করে দিলেও আমরা কি পেরেছি এর মর্যাদা দিতে? আমরা কি কথার ব্যবহারে সংযমী হয়েছি। কথার যুদ্ধ থামাতে পেরেছি। হিংসা, হানাহানি, পথে-ঘাটে, মাঠে-ময়দানে, সভা-জনসভায় দাঁড়িয়ে আমরা যেসব বলছি, তা কি করছি? যা বলছি তা কি ঠিক বলছি? তা কি যথাযথ পালন করছি? না! প্রতিপক্ষকে কথায় ঘায়েল করার কৌশল নিচ্ছি। সবকিছুকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করছি। মনে মনে তৃপ্ত হচ্ছি। প্রতিপক্ষও আমাকে ঘায়েল করার চেষ্টায় লিপ্ত। এখানে কোন ভালবাসা নেই। কোন মমতা নেই। কোন দয়া-দাক্ষিণ্য নেই। আছে শুধু স্বার্থ। আর স্বার্থই সবকিছুকে দিচ্ছে এলোমেলো করে। কথার ফুলঝুরি নিয়ে আমরা হাজির হচ্ছি জনতার সামনে। জনতা সবার কথা মন দিয়ে শুনছে। আর মনে মনে হাসছে। একি বলছেন তারা? কেউ জননেতা খ্যাতি পেয়েছেন। কেউ বা মাটি ও মানুষের নেতা খ্যাতি পেয়েছেন। কিন্তু জননেতা থাকেন জনগণ থেকে অনেক দূরে। মাটি ও মানুষের নেতা থাকেন মাটি ও মানুষ থেকে অনেক উপরে। তারপরও কথা থেকে যায়, যুগে যুগে কিছু মানুষ এসবকে ছাপিয়ে জনগণের কাতারে নেমে এসেছেন। মাটিতে নেমে নিজেকে ঠাঁই করে নেন জনমানুষের হৃদয়ে। একারণে তারা যুগ যুগ ধরে বিশ্বসভায় মহামহিমায় নিজের আসনকে পোক্ত করে গেছেন। যাদের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে মানুষ। আমরা কি কথার যুদ্ধের ইতি টানতে পারি না? একে অপরকে ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারি না? যে ভালবাসা দেবে অপার সুখ আর শান্তি। আর এ সুখে কর্ণফুলির তীরের কোন রুপসী মনের সুখে গেয়ে উঠবে, ওরে কর্ণফুলিরে/ সাক্ষী রাখিলাম তোরে/ অভাগিনীর দুঃখের কথা/কইবি বন্ধুরে.https://mzamin.com/ ওরে কর্ণফুলিরে। কিংবা, ওরে..ও সাম্পানওয়ালা/ তুই আমারে করলি দেওয়ানা...।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর