× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ফুরিয়ে আসছে সিলেটের গ্যাস

বাংলারজমিন

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
৬ আগস্ট ২০২০, বৃহস্পতিবার

ফুরিয়ে আসছে সিলেটের গ্যাস। উত্তোলিত গ্যাস ক্ষেত্রের চাপও কমে আসছে। এতে করে অনেকটা চাপে পড়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি. (এসজিএফএল)। দেড় যুগ আগেও তাদের ১০টি কূপ সচল ছিল। এখন সেই সংখ্যা কমে ৫টিতে চলে এসেছে। এ কারণে দেশের প্রাচীনতম এ প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধান চলছে। এই অবস্থায় দ্রুত সংকট কাটাতে প্রস্তুত থাকা গ্যাস ফিল্ড টেংরাটিলা গ্যাসকূপে উত্তোলন শুরু করতে চায় এসজিএফএল। চলতি মাসেই পেট্রোবাংলার বোর্ড সভায় বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে।
সরকার থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেলে দ্রুতই সেটিতে খনন ও উৎপাদন শুরু করবে এসজিএফএল। সিলেটের বেশির ভাগ গ্যাসক্ষেত্রের মালিক সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড। ১৯৬০ সাল থেকে এসজিএফএল সিলেটে গ্যাস উত্তোলন করে আসছে। প্রথমে সেটির নাম পিপিএল হলেও পরবর্তীতে বিপিএল হয়ে ১৯৮৪ সালে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস তথা এসজিএফএল নামকরণ করা হয়। এসজিএফএল সূত্র জানিয়েছে, ৩৬ বছরে এসজিএফএল সিলেটে অন্তত ২৬টি গ্যাসকূপ আবিষ্কার করে সেখান থেকে গ্যাস উৎপাদন করে চাহিদা পূরণ করেছে। ২০০২ সালেও এসজিএফএলের মালিকানাধীন ১০টি গ্যাসক্ষেত্র সচল ছিল। এবং এগুলো থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যেতো। কিন্তু বর্তমানে এসজিএফএলের মালিকানায় মাত্র ৫টি গ্যাসকূপ চালু রয়েছে। সেই ৫টি গ্যাসকূপ থেকে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হয়। এই ৫টি কূপের মধ্যে দু’একটি কূপে গ্যাসের চাপ কমে আসছে। কোনো কোনোটিতে পানি চলে আসছে। ফলে গ্যাস উৎপাদন আরো কমে  যেতে পারে। এসজিএফএল সূত্র জানায়, বর্তমানে তাদের মালিকানাধীন সিলেটের হরিপুরে একটি, রশিদপুরে একটি, কৈলাশটিলায় দু’টি ও বিয়ানীবাজারে একটি কূপে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। এর মধ্যে হরিপুরের সাত নম্বর কূপটি রুগ্‌ণ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই কূপে ইতিমধ্যে গ্যাসের চাপ কমে পানির মাত্রা বেড়েছে। সম্প্রতি এসব বিষয় অবগত করে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি. কর্মচারী ইউনিয়ন ও কর্মচারী লীগ ইউনিয়ন নামের দুটি সংগঠনের নেতারা। এসব বিষয় অবগত করে তারা টেংরাটিলায় গ্যাস উত্তোলনের ব্যাপারে দাবি জানিয়েছে। সিলেটে গ্যাস সরববাহ ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সিলেট জালালাবাদ গ্যাস লি.। সিলেট গ্যাস ফিল্ডে যে পরিমাণ গ্যাস উত্তোলিত হয় এর সিংহ ভাগই তারা বিক্রি করে জালালাবাদ গ্যাস লিমিটেডকে। জালালাবাদ গ্যাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা মানবজমিনকে জানিয়েছেন, সিলেটে বর্তমানে সব মিলিয়ে প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা হচ্ছে ৪’শ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্য থেকে ১১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তারা সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি. থেকে পাচ্ছে। আর বাকি গ্যাস তাদের কিনতে হচ্ছে বিবিয়ানা ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড’র কাছ থেকে। ওই কর্মকর্তা জানান, যদি সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি.-এসজিএফএল কম গ্যাস সরবরাহ করে তাহলে সিলেটের অন্য কোম্পানির কাছ থেকে গ্যাস কিনতে হবে। এতে করে দেশের সামগ্রিক চাহিদায়ও এর প্রভাব পড়বে। সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি. কর্মচারী লীগের সভাপতি আলহাজ মো. হারুন জানিয়েছেন, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি.-এর ৫টি কূপ সচল থাকলেও হরিপুরের কূপটি এখন পানি আক্রান্ত। গ্যাসের সঙ্গে পানি কমে আসায় যেকোনো মুহূর্তে ওই কূপটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অন্য কূপগুলোতেও গ্যাসের চাপ কমে আসছে। এতে করে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি.-এর আয়ুষ্কাল কমে গেলে অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী চাকরি হারাবে। তিনি জানান, এই কোম্পানিকে টিকিয়ে রাখতে হলে গ্যাস অনুসন্ধান ও কূপ খনন করা জরুরি। এ কারণে টেংরাটিলা (ছাতক) ক্ষেত্রকে চালু করতে পত্র দেয়া হয়েছে। এলাকার স্থানীয় এমপি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বিষয়টির গভীরতা বুঝে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর কাছে ডিও দিয়েছেন। এদিকে টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে গ্যাস উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে শিগগিরই বিষয়টি পেট্রোবাংলার বোর্ড সভায় উত্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন সিলেট গ্যাস ফিল্ড লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ইকবাল মোহাম্মদ নুর উল্লাহ। অনুমতি পেলে খুব দ্রুত টেংরাটিলায় খনন কাজ শুরু করতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর