শোয়েব আখতার মাঠে সবসময়ই থাকতেন আগ্রাসী মেজাজে। পাকিস্তানের সাবেক পেসার ঝামেলায় জড়াতেন প্রতিপক্ষ ক্রিকেটার ও সতীর্থদের সঙ্গেও। খেলা ছাড়ার পরও নানা মন্তব্যে খবরের শিরোনাম হন তিনি। বেশকিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে শীতল সম্পর্ক থাকলেও আবার কয়েকজনের সঙ্গে তার ছিল ভালো বন্ধুত্ব। আর রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসের ভালোবাসা প্রকাশেও ছিল ভিন্নতা। বার্তা সংস্থা বিবিসি’র সঙ্গে তার খেলোয়াড়ি জীবনের অনেক কথা বলেছেন তিনি।
৪৪ বছর বয়সী সাবেক এই পেসার বলেন, ‘কুস্তি মানে আমার কাছে কোনো লড়াই ছিল না, এটি ছিল আসলে লোকের প্রতি আমার ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম। সত্যি বলতে, সীমা ছাড়িয়েই ফেলতাম। আমি যখন কাউকে পছন্দ করি, তাকে ওপরে তুলে ছুড়ে মারি! যুবরাজের পিঠ ভেঙে দিয়েছি আমি, এর আগে শহীদ আফ্রিদিকে জড়িয়ে ধরে পাঁজর ভেঙে ফেলেছি।
আবদুল রাজ্জাক একবার আমার সঙ্গে স্ট্রেচিং করতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছিল।’ শোয়েব আরও বলেন, ‘মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা প্রকাশের ধরনটিই বুনো। তরুণ বয়সে একটু নির্বোধ ছিলাম, নিজের শক্তি সম্পর্কেও ধারণা ছিল না। ক্যারিয়ারে দু’একবার সতীর্থদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছি, তবে এমনিতে দলের সঙ্গে সম্পর্ক উপভোগই করেছি। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে হয়তো নয়, তবে সতীর্থদের সঙ্গে অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি। যদিও সতীর্থদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে ভালো লেগেছে, তবে ম্যাচের পর তাদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে কখনও ভালো লাগেনি।’ ২০০৩ বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে ১০০ মাইল গতিতে বল করে আলোড়ন তোলেন শোয়েব আখতার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন তিনি। বর্তমানে স্কাই স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকার নিক নাইট ছিলেন স্ট্রাইকে। শোয়েব বলেন, ‘নিক নাইটের বিপক্ষেই ডেলিভারিটি করার পরিকল্পনা করেছিলাম। ওই ওভারে, একদম ওই ডেলিভারিতে ১০০ মাইল গতির বল করব, আমি তাকে আগেই বলেছিলাম।’
শোয়েব ছাড়া ১০০ মাইল গতিতে বল করার নজির আছে কেবল অস্ট্রেলিয়ান দুই পেসার ব্রেট লি (২০০৫) ও শন টেইটের (২০১০)। সংখ্যাটা এত কম হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করেছেন শোয়েব, ‘ক্রিকেটের আইনই এখন বোলারদের দ্রতগতিতে বল করার পথে বাধা। দুটি নতুন বল, অতিরিক্ত বিধিনিষেধ, অনেক বেশি ম্যাচ, এত এত টি-টোয়েন্টি লীগ, প্রচুর অর্থের ছড়াছড়ি। ক্রিকেটাররা এখন অনেক স্মার্ট হয়ে যাচ্ছে, অর্থের দিকেই ঝোঁক বেশি। তারা চায় ক্যারিয়ার লম্বা করতে, শরীর বাঁচাতে, যেন ১০ বছর খেলতে পারে। আমি সেখানে নিজেকে উজার করে দিতাম প্রতিটি সিরিজ ধরে, সর্বস্ব ঢেলে দিতাম একেকটি দিনে।’