নারায়ণগঞ্জে দিশা মনি (১৪) নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে শীতলক্ষ্যা নদীতে লাশ ফেলে দেয়ার দায় স্বীকার করে আদালতে প্রেমিকসহ ৩জন জবানবন্দি দিয়েছে। রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পৃথক দুটি আদালত ৩জনের জবানবন্দি গ্রহন করেছেন।
জবানবন্দি প্রদানকারীরা হলো-বন্দর উপজেলার বরন্দি এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে প্রেমিক আব্দুল্লাহ (২২) একই এলাকার শামসুদ্দিনের ছেলে ইজিবাইক চালক রুকিব (১৯) ও স্পাহানী ঘাট এলাকার নৌকার মাঝি খলিলুর রহমান (৩৬)। বন্দরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
মামলার তদন্তকারী অফিসার সদর মডেল থানার এসআই শামীম আল মামুন জানান, শহরের দেওভোগ পাক্কারোড এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক জাহাঙ্গীরের মেয়ে দিশা মনির সঙ্গে বখাটে আব্দুল্লাহ তার বন্ধু ইজিবাইক চালক রকিবের মোবাইল দিয়ে ৩মাস প্রেম করেছে। ঘটনার দিন ৪জুলাই ঘুরা ফেরার কথা বলে দিশা মনিকে আব্দুল্লাহ স্পাহানী ঘাটে ডেকে নেয়। এরপর বন্দরের বিভিন্ন স্থানে রকিবের ইজিবাইক দিয়ে ঘুরা ফেরা করেন। এদিন রাত ৮টায় স্পাহানী ঘাট এসে খলিলুর রহমানের নৌকায় উঠে শীতলক্ষা নদীতে ঘুরতে থাকে। এক পর্যায়ে নৌকার মধ্যেই আব্দুল্লাহ প্রথমে দিশা মনিকে ধর্ষণ করে। এরপর মাঝি খলিলুর রহমানও জোর করে দিশা মনিকে ধর্ষন করে।
এতে দিশা মনি বাগবিতন্ডা করলে ক্ষিপ্ত হয়ে খলিলুর রহমান দিশা মনির দুপা চেপে ধরে আর আব্দুল্লাহ গলা টিপে হত্যা করে। তারপর দুজনে মিলে দিশা মনির লাশ শীতলক্ষা নদীতে ফেলে দেয়।
তদন্তকারী অফিসার আরো জানান, মামলার দায়ীত্ব পাওয়ার পর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তিনজন আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দোষ স্বীকার করেছে। নদীতে স্রোত থাকায় দিশা মনির লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আদালতে তারা দোষস্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রকিব ও আব্দুল্লাহর জবানবন্দি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আহমেদ হুমায়ন কবীর ও খলিলুর রহমানের জবানবন্দি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মিল্টন হোসেন গ্রহন করেছেন।
দিশা মনির বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমার দুই মেয়ের মধ্যে দিশা মনি ছোট। সে বাড়ির কাছে একটি প্রাইমারী স্কুলে ৫ম শ্রেণিতে পড়তো। ঘটনার দিন কাউকে কিছু না বলেই বের হয়ে যায়। তারপর খোজাখুজি করে সদর মডেল থানায় মামলা করেছি। আমার মেয়ের লাশটিও পেলাম না। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।