কি বলবেন এই ঘটনাকে? কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ? বৃহস্পতিবার লকডাউনের ৪৮ ঘন্টার প্রথম দিনে সল্ট লেকের আমরি হাসপাতাল থেকে কলেজ স্ট্রিটের মেডিকেল কলেজে এক রোগীকে পৌঁছাতে এম্বুলেন্স নিয়েছে ৯ হাজার টাকা। অথচ কলকাতা থেকে গো এয়ার ফ্লাইটে দিল্লি অথবা গোয়া যেতে এর থেকে কম ৭ হাজার ৯৮৭ টাকা লাগে। হাওড়া শিবপুরের বাসিন্দা মমতা আগারওয়ালের এই নির্মম অভিজ্ঞতা হয়েছে।
হার্টের অসুখের জন্য মমতা দেবী ৮০ বছরের বাবাকে ভর্তি করিয়েছিলেন আমরি হাসপাতালে। সেখানে তার করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। করোনা পজিটিভ হওয়ার পর বাবার চিকিৎসার খরচ বেড়ে যায়। সল্ট লেকের আমরি হাসপাতালের ব্যয় আর চালানো সম্ভব হচ্ছিলো না। কোনো রকমে সরকারি হাসপাতাল মেডিকেল কলেজে একটি বেড পেয়ে যান মমতা দেবীরা।
বৃহস্পতিবার লকডাউনের প্রথম দিনের বিকালে আমরি থেকে মুমূর্ষু বাবাকে মেডিকেল কলেজে আনতে তাদের চক্ষুচড়ক গাছ। ৮ কিলোমিটার, ১৫ মিনিটের দূরত্বের জন্য এম্বুলেন্স ভাড়া ৯ হাজার টাকা! উপায় ছিল না, এই বিপুল টাকা দিয়েই তাদের রোগীকে স্থানান্তরিত করতে হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই তোলপাড় হতে এম্বুলেন্স মালিক ও চালকের সম্বিত ফেরে।
তারা বলছেন, বৃদ্ধকে এম্বুলেন্সে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা দিতে হয়েছিল বলেই এই বাড়তি চার্জ। মমতা দেবীদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, ৯ হাজার টাকা দিতে সম্মতি জানিয়েও তারা বাজার গরম করছেন।
এম্বুলেন্স মালিক বলছেন, সেদিন রোগীর সঙ্গের দুই ব্যাক্তির জন্য তারা এন ৯৫ মাস্কের ব্যবস্থা করেছিলেন তার দামও পাননি। এম্বুলেন্স এত টাকা নেয়ায় বিস্মিত সেন্ট জন্স এম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, রাজ্য সরকার এই করোনা পরিস্থিতিতে এম্বুলেন্সে দর বেঁধে দিয়েছে প্রতি ৫ কিলোমিটার ১ হাজার থেকে ১৫০০ হাজার টাকা। তারা ঘটনাটিকে শুধু অনৈতিক বলছে না, বলছে অমানবিকও।