শতবর্ষে স্পন্সর এর অভাবে জর্জরিত ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্যে স্পন্সর জোগাড় করে দিয়ে বিজেপিকে দশ গোল দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। শুধু স্পন্সর জোগাড় করে দেয়াই নয়, দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল লিগ আইএসএলএ খেলার ব্যাপারটাও নিশ্চিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল প্যাটেলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আইএসএলের সংগঠক এফএসডিএলের প্রধান কর্ত্রী নীতা আম্বানির সঙ্গে কথা বলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ইস্টবেঙ্গল এর আইএসএল খেলা নিশ্চিত করতে এই জোড়া ফলার আক্রমণ এতটাই তীব্র ছিল যে তা সামলানো মুশকিল ছিল এফএসডিএলের পক্ষে। তাছাড়া তাঁরাও চাইছিলেন আইএসএলের আকর্ষণ বাড়াতে দুই প্রধান এই টুর্নামেন্টে খেলুক। তাই, লেট এন্ট্রি হিসেবে ইস্টবেঙ্গল ঢুকে গেল দেশের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতায়।
নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বুধবার ঘোষণা করেন যে, কলকাতার শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল এর নতুন স্পন্সর। শতবর্ষে এসে ইস্টবেঙ্গল স্পন্সর সমস্যায় বিদীর্ণ হচ্ছে এটি দেখেই তিনি স্পন্সর ঠিক করতে ঝাঁপান এবং ছিয়াত্তর - চব্বিশ অনুপাতে শ্রী সিমেন্টকে রাজি করান।
শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল এর ছিয়াত্তর শতাংশ শেয়ার পাবেন, ইস্টবেঙ্গল এর হাতে থাকবে চব্বিশ শতাংশ। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি এর জালে বল ঢোকান। কোয়েস সরে যাওয়ার পর বিভ্রান্ত ইস্টবেঙ্গল কর্তারা ফুটবলার ও বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবের মারফত কৈলাশ বিজয়বর্গিওর সঙ্গে কথা বলেছিলেন স্পন্সর জোগাড় করে দেয়ার জন্যে। ইস্টবেঙ্গলকে পাথেয় করে কলকাতার ফুটবল মাঠে ঢোকার সুযোগটি হারাতে চায়নি বিজেপি। তারা বেশ কিছু স্পন্সর এর সঙ্গে কথা বলে। খবর পেয়েই আসরে নামেন মমতা এবং শ্রী সিমেন্টকে ঠিক করে ফেলেন। এতে রাজ্যের বাঙাল ভোট পাওয়াও নিশ্চিত হল তাঁর। এখানেই বিজেপি দশ গোল খেলো। মুখ্যমন্ত্রী এক হাতে দুই পাখি মারলেন। এক, প্রমাণ হল রাজ্যের যে কোনও সংকটে তিনি পাশে থাকেন। দুই, বিধানসভা ভোটে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ভোট, যা কোনও অংশে কম নয়, তা তাঁর ঝোলায় যাবে। অর্থাৎ ফুটবল রাজনীতিতে মমতার কাছে গোল খেতে বাধ্য হল বিজেপি।