× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সংকট কাটেনি রাজধানীর হকারদের

এক্সক্লুসিভ

মো. জয়নাল উদ্দীন
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার

বিক্রয় নেমেছে অর্ধেকে। ক্রেতা কম থাকায় স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রয় করেও মিলছে না সংসার চালানোর রসদ। কখনো কখনো লাভ ছাড়াই ফিরতে হয় ফুটপাথের বিক্রেতাদের। করোনাকালে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে রাজধানীর হকারদের।
করোনাভাইরাসের আগে ভিড় থাকতো রাজধানীর ফুটপাথে। কিন্তু বর্তমানে ফুটপাথগুলোতে ক্রেতা নেই। যেন সুনসান নীরবতা।
গুলিস্তানের কাপড় বিক্রেতা আবদুল হক বলেন, ক্রেতা নাই, তাই লাভ করে পণ্য বিক্রি করা যায় না। আগে যে পণ্য ৫০ টাকা লাভ করে বিক্রি হতো এখন সে পণ্য ১০ টাকা লাভে  বিক্রয় করা লাগে। অল্প দামে বিক্রয় না করলে সংসার কীভাবে চালাবো?
পল্টনে ফুটপাথে পুরাতন বইয়ের ব্যবসা করেন আহসান মিয়া।
তিনি জানান, সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। আগে ফুটপাথে উচ্ছেদ আতঙ্কে থাকতাম। এখন বেচাকেনা নেই। পেট তো আর করোনাভাইরাস মানে না। প্রতি মাসে আমার সব মিলে প্রায় ১৬ হাজার টাকা সংসার খরচ হয়। এ ভাবে কতদিন চালাতে পারবো সেটা আল্লাহ জানে।
গুলিস্তানের রাজধানী রেস্তরাঁর সামনে ফুটপাথে লেডিস স্যান্ডেল বিক্রেতা আলম বলেন, মা-বাবা, স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে সংসার। সাত হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া দেয়া লাগে। অল্প লাভ হলেও বিক্রি করতে হয়। অনেক সময় কেনা দামেও বিক্রয় করতে হয়। টেনেটুনে হলেও সংসার চালাতে হয়। 
দীর্ঘদিন পণ্যগুলো গুদামে পড়ে ছিল। কাজে কিছু ক্ষতি হলেও পণ্যগুলো বিক্রয় করে দিতে হচ্ছে। না হয় নিজের পুঁজিও হারাতে হবে।
আবার ভ্যানের উপর প্যান্ট-শার্ট ও পোশাক বিক্রেতাদের অবস্থাও ভালো নয়। তারা জানান, কোনো কোনো সময় একপিসও বিক্রয় করতে পারা যায় না। আবার কোনোদিন চার-পাঁচ পিসও বিক্রি হয়। কিন্তু এখন করোনাভাইরাস আসার পর থেকে লাভ করে পণ্য বিক্রয় করা যায় না।
ফুটপাথের হকাররা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হলেও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ও তালিকা না থাকায় সাহায্য বা কোনো ধরনের প্রণোদনা পান না বলে জানান অনেকে।
করোনাভাইরাসে হকাররা যথেষ্ট ঝুঁকিতে রয়েছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলাচল করতে দেখা যায়। 
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, গুলিস্তান-ফুলবাড়িয়ার বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, মহানগর কমপ্লেক্স, মহাখালি সুপার মার্কেট, নীলক্ষেত বইয়ের দোকান, গুলিস্তান পুরান বাজার, বঙ্গ ইসলামী সুপার মার্কেটসহ বেশকিছু মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই। অন্তত ২৫ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লকডাউন শিথিলের পর তারা সবাই দোকান মেলেছেন। তবে বিক্রি আগের মতো নেই।
বাংলাদেশ জাতীয় হকার্স লীগের সভাপতি শেখ মো. সোহেল হকারদের বর্তমান সংকটের বিষয়ে বলেন, ‘রাস্তায় বসলে তাদের সংসার চলে। হকাররা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। এক্ষেত্রে সরকার যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় খুবই উপকার হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন অন্বেষণ-এর চেয়ারম্যান রাশেদ তিতুমীর বলেন, হকারদের সংকট দেখা দেয়ার পেছনে রাজধানীতে বসবাসরত নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমেছে, অনেকের আবার চাকরি নেই। কারও আবার বেতন কমে গেছে। এদিকে আবার হকাররা বেশি দামে পণ্য ক্রয় এবং মুনাফা ধরে বিক্রয় করতে পারছে না। পণ্য সরবরাহ এখনো পর্যাপ্ত পর্যায়ে আসেনি।
এ থেকে উত্তরণের জন্য নিম্ন আয়ের মানুষদের আয় ও সামাজিক প্রতিরক্ষণ ব্যবস্থা সচল রাখতে হবে বলে তিনি জানান। বেকারত্ব দূরীকরণে নগদ অর্থ সহায়তা ও সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তার প্রতি জোর দিতে হবে বলে জানান, এই অর্থনীতিবিদ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর