কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। অভিষেকের পর প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের জন্য হুমকি হয়ে ওঠেন তিনি। তবে তার দুর্বলতা বের করতে খুব বেশি সময় লাগেনি। এখন ব্যাটস্যানরা তাকে পড়তে পারেন। ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে তার অন্যতম দুর্বলতা, ক্রিজে বল ভেতরে ঢোকাতে পারেন না তিনি। তার বোলিংয়ের সেই ঘাটতি কাটাতে অনুশীলনে ঘাম ঝরাচ্ছেন মোস্তাফিজুর রহমান। নয়া বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। বাঁহাতি এ পেসারের চোখ এখন তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে।
টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডেতে দুর্বার হলেও টেস্টে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি মোস্তাফিজ। ৫৮ ওয়ানডেতে শিকার ১০৯ উইকেট ও ৪১ টি-টোয়েন্টিতে ৫৮। সেখানে মাত্র ১৩ টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এতে তার শিকার ২৮ উইকেট। শ্রীলঙ্কায় তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সম্ভাবনায় তার চেয়ে বেশি এগিয়ে আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী। তাই এবার তিন ফরম্যাটেই নিজেকে মেলে ধরতে চান মোস্তাফিজ। গতকাল তিনি বলেন, ‘আমি তো চাই সব ফরম্যাটে খেলতে। ফিটনেস বলেন, বোলিং স্কিল বলেন, যে কাজগুলো করলে আমি সব ফরম্যাটে নিয়মিত হতে পারি সেগুলো করার চেষ্টা করছি।
মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে গেল এক মাস ধরেই মোস্তাফিজ পরিশ্রম করছেন। বিশেষ করে ওটিস গিবসনের পরামর্শে রপ্ত করছেন ক্রিজে বল ভেতরে ঢোকানোর কৌশল। নিজের এই চেষ্টা নিয়ে মোস্তাফিজ বলেন, ‘করোনার আগে গিবসন আমাকে কিছু গ্রিপ দেখিয়ে দিয়েছিল যে কী করলে বল ভেতরে ঢুকবে। ওটা নিয়ে কাজ করছি। এখনো ভালো যাচ্ছে। আরো কাজ করতে হবে, ভালোভাবে কাজ করতে পারলে বল ভেতরে ঢোকানোটা তাড়াতাড়ি আয়ত্ত করতে পারবো।’ টেস্টে লম্বা সময় বোলিং করতে হয়। যে কারণে ফিটনেসটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে ফিট রাখতে বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিটনেসের উন্নতি নিয়ে কাজ করছেন মোস্তাফিজ। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় এসেছি (সাতক্ষীরা থেকে) এক মাস পাঁচ দিন হলো। প্রথমে শর্ট রান আপে, দুই তিন স্টেপে বোলিং করেছি, বাড়িতেও করেছি। এখানে আসার পর আবার প্রথম থেকে শুরু করলাম। শুরুতে রানিং, জিম এসব ছিল পরে একজন ব্যাটসম্যান ব্যাটিং করবে দুইজন বোলার বল করবে এভাবে শুরু হয়। এখন ওভার অল সব ভালোই যাচ্ছে।’
করোনায় লম্বা সময় মোস্তাফিজ ছিলেন সাতক্ষীরায় নিজ গ্রামের বাড়িতে। সেখানেও ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছেন। তবে মাঠের ব্যাপারটাই যে ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে অনুশীলনের ব্যাপারটা অন্যরকম। দলীয়ভাবে অনুশীলন করাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। এখানে শুরুতে কষ্ট হচ্ছিল একটু তবে এখন খুব ভালো যাচ্ছে।’
২০১৫ তে টি-টিয়েন্টি ফরম্যাটে অভিষেকের পর সারা বিশ্বের নজর কাড়েন মোস্তাফিজ। ধীরে ধীরে নামের পাশে যোগ হয়ে যায় ‘কাটার মাস্টার’ তকমা। তবে ইনজুরি, বোলিং বৈচিত্র্যের ঘাটতি নিয়ে ক্রমে তিনি পিছিয়ে যেতে শুরু করেন। তবে করোনার এই লম্বা সময় বিশ্রাম নিয়ে নতুন করে ফেরার চেষ্টাই এই পেসারের।
শ্রীলঙ্কা সফর সামনে রেখে গতকাল ক্যাম্পের দ্বিতীয় দিনেও লম্বা সময় স্কিল ট্রেনিং করেন টাইগাররা। তবে সফর হবে কিনা এ নিয়ে কাটেনি ধোঁয়াশা। শোনা যাচ্ছে শেষ পর্যন্ত সিরিজ হলেও সূচিতে আসতে পারে পরিবর্তন। বাংলাদেশ দলের শ্রীলঙ্কা যাওয়ার কথা রয়েছে ২৭ বা ২৮শে সেপ্টেম্বর। গতকাল জানা যায়, কোয়ারেন্টিন জটিলতা মিটলেও বাংলাদেশ দলের দেশ ছাড়তে বিলম্ব হবে। ৩০শে সেপ্টেম্বর কিংবা ৩রা অক্টোবর শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে রওনা হতে পারে জাতীয় দল।